Skip to content

সফরের নামাজ আদায়ের পদ্ধতি I Travel, safar, tour, namaz

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

Table of Contents

সফরের নামাজ আদায়ের পদ্ধতি ?

সফরের সলাত –

” কসর ” সলাত কী ?

“কসর” আভিধানিক অর্থ হচ্ছে কমানো। সফরে সলাত কসর করার অর্থ হলো চার রাকাত বিশিষ্ট সালাতকে দুই রাকাত আদায় করাকে কছর বলে। কুরআন, সুন্নাহ ও সমস্ত ইমামদের ঐক্যমতে কসরের সালাত শরী‘আতসিদ্ধ ও জায়েয।

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র / Table of Contents of Prayers …………..

সফর অবস্থায় সলাতকে কসর করাকে অবহেলা না করা –

আরবি “সফর” শব্দের অর্থ- ভ্রমণ, যাত্রা, প্রস্থান, রওনা ইত্যাদি। আর যিনি সফর করেন তাকে বলা হয় মুসাফির।আর তখনি সালাত “কসর” করতে হয়।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

অর্থ – আর যখন তোমরা যমীনে সফর করবে, তখন তোমাদের সালাত কসর করাতে কোন দোষ নেই। যদি আশঙ্কা কর যে, কাফিররা তোমাদেরকে ফিতনায় ফেলবে*। নিশ্চয় কাফিররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।

(সূরা নিসা আয়াত -১০১)

 “কসর” করা আল্লাহর পক্ষ থেকে ছাদাকাহ-   

হাদিসের বাণী –

ইয়ালা ইবনু উমায়্যা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কে বললাম, (আল্লাহ তা’আলা বলেছেন) “যদি তোমরা ভয় পাও যে, কাফিররা তোমাদেরকে কষ্ট দেবে, তরে সালাত সংক্ষেপ করে পড়াতে কোন দোষ নেই” কিন্তু এখন তো লোকেরা নিরাপদ। উমর (রাঃ) বললেন, বিষয়টি আমাকেও বিস্মিত করেছে, যা তোমাকে বিস্মিত করেছিল। তারপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলাম ও এর জবাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, এটি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি একটি সাদাকা। তোমরা তাঁর সাদাকাটি গ্রহণ কর।

( মুসলিম সহীহ হাদিস নং – ১৪৪৬)

“জমা” অর্থ একত্রিত করা কয়েক ওয়াক্তের নামায একত্রে এক সাথে আদায় করা-

মুআয ইবন জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তাবুকের যুদ্ধের সময় (মনযিল থেকে) রওয়ানা হওয়ার পূর্বে সূর্য ঢলে পড়লে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের ও আসরের নামায একত্রে আদায় করতেন এবং সূর্য ঢলে পরার পূর্বে রওয়ানা করলে তিনি যুহর তার শেষ সময়ে এবং আসর তার প্রথম সময়ে একত্রে আদায় করতেন। তিনি মাগরিবেও তাই করতেন। অর্থাৎ রওানার পূর্বে সূর্যাস্ত গেলে তিনি মাগরিব এবং এশা তার প্রথম সময়ে একত্রে আদায় করতেন আর রওয়ানা হওয়ার পরে সূর্যাস্ত গেলে তিনি মাগরিব বিলম্ব করে ইশার সাথে একত্রে পড়তেন।

( আবু দাউদ সহীহ হাদিস – ১২০৮)

কখন থেকে কসর শুরু হয় –

মুসাফির যখন তার বসবাসরত এলাকা ছেড়ে বিচ্ছিন্ন হবে, যাকে প্রচলিত অর্থে বিচ্ছিন্ন বলা হয় তখন থেকেই কসর শুরু করবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা জমিনে ভ্রমন করার সময় কসর করতে বলেছেন। আর নিজ এলাকার সীমা অতিক্রম না করলে জমিনে ভ্রমনকারী বলা হয় না।

( সহীহ বুখারী অনুচ্ছেদঃ ৬৯৯ )

 সালাত কসর করে আদায়ের জন্য সফরের দূরত্ব –

ক। প্রচলিত অর্থে যেটুকু দূরত্বকে সফর বলা হয় এবং এর জন্য পথের পাথেয় ও সামগ্রী বহন করা হয় সেটুকু দূরত্বের সফর করলেই সালাত কসর করে আদায় করা যাবে।

খ।  কোনো ব্যক্তি তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরে সফরের নিয়তে বের হয়ে তার এলাকা পেরুলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। আকাশ পথে সফরের ক্ষেত্রেও দূরত্বের হিসাব স্থলভাগের সমান, অর্থাৎ স্থলভাগের ৭৮ কিলোমিটার পরিমাণ দূরত্বের সফর হলে আকাশপথে মুসাফির হবে।

(সহীহ বুখারী অনুচ্ছেদঃ ৬৯৮)

কতদিন অবস্থান করলে  কসর করতে হয় –

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সফরে উনিশ দিন পর্যন্ত অবস্থান করেন এবং সালাত (নামায/নামাজ) কসর করেন। কাজেই (কোথাও) আমরা উনিশ দিনের সফরে থাকলে কসর করি এবং এর চাইতে বেশী হলে পুরোপুরি সালাত আদায় করি।

(বুখারী সহীহ হাদিস নং – ১০১৯ ই ফ বা / ১০৮০ আন্তঃ , ১০২০ ই ফ বা / ১০৮১ আন্তঃ )

সফরে  মাগরিব এর সালাত তিন রাকাত আদায় করা।

(বুখারী সহীহ হাদিস নং – ১০৩০ ই ফ বা  / ১০৯১-১০৯২ আন্তঃ )

সফররত অবস্থায় ফরয সালাতের আগে ও পরে নফল সালাত আদায় না করা-

হাফস ইবনু আসিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে-

ইবনু উমর (রাঃ) একবার সফর করেন এবং বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহচর্যে থেকেছি, সফরে তাঁকে নফল সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখিনি এবং আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ “নিশ্চই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।

(সূরা আহযাবঃ ২১১) (বুখারী সহীহ হাদিস নং – ১০৩৮ ই ফা বা / ১১০১ আন্তঃ, ১০৩৯ ই ফা বা / ১১০২ আন্তঃ )

সফরে  যুহ্‌র ও আসর একত্রে আদায় করতেন এবং  মাগরিব ও ইশার সালাত একত্রে আদায় করা-

ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত-

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দ্রুত সফর করতেন, তখন মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করতেন। ইবরাহীম ইবনু তাহমান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সফরে দ্রুত চলার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহ্‌র ও আসরের সালাত (নামায/নামাজ) একত্রে আদায় করতেন আর মাগরিব ইশা একত্রে আদায় করতেন।

(বুখারী সহীহ হাদিস নং – ১০৪২ ই ফা বা / ১১০৬ – ১১০৮ আন্তঃ ,আবু দাঊদ সহীহ হাদিস নং – ১২০৮)

সফরের বা মুসাফিরদের জামাআত হলে আযান ও আকামত দেওয়া-

মালিক ইবনু হুওয়ায়রিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত-

তিনি বলেন, দু’জন লোক সফরে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ তোমরা উভয় যখন সফরে বেরুবে (সালাতের সময় হলে) তখন আযান দিবে, এরপর ইকামত দিবে এবং তোমাদের উভয়ের মধ্যে যে বয়সে বড় সে ইমামতি করবে।

(বুখারী সহীহ হাদিস নং – ৬০১, ৬০২ ই ফা বা / ৬২৯, ৬৩০ আন্তঃ )

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র / Table of Contents of Prayers …………..

Leave a Reply