Skip to content

হজ্জ ও ওমরাহ এক সাথে পালন I Hajj and Omrah together

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

আসসালামু আলাইকুম , একই সফরে একাধিক ওমরা করতে কোনো বাধা নেই।  হজ্জের আগেও ( হজ্জ না করেও) ওমরাহ করা যায় এবং হজ্জের পরও বারবার ওমরাহ করা যায়। তবে রমজান মাসে ওমরাহ পালনে হজ্জের সমান সওয়াব মিলে। আর শাওয়াল মাস ওমরাহ করার উত্তম সময়।

 

Table of Contents

প্রথমে হজ্জ পরে ওমরাহ হজ্জে ইফরাদ

আল হাসান ইবন শাওকার ও আহমেদ ইবন মুনি (রহঃ) …… ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্নিত। তিনি বলেন নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ্বের উদ্দেশ্যে ইহরাম বাধেঁন। অতঃপর তিনি মক্কায় উপনীত হয়ে (বায়তুল্লাহ) তাওয়াফ ও (সাফা-মারওয়ার) মধ্যে সাঈ সম্পন্ন করেন। রাবী ইবন শাওকার বলেন, কুরবানীর পশু সংগে আনাতে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথার চুল খাটো করেননি ও হালালও হননি। আর যারা নিজেদের সংগে কুরবানির পশু আনেননি, তিনি তাদেরকে ওমরার জন্য তাওয়াফ ও সাঈ সম্পন্ন করার পর চুল খাটো করা ও হালাল হওয়ার নির্দেশ দেন।

( আবু দাউদ সহিহ হাদিসঃ ১৭৯২ ইফাবা )

 

হজ্জ ও ওমরাহ এক সাথে পালন

১। তালবিয়া পাঠ করার পূর্বে সাওয়ারীতে আরোহণকালে তাহমীদ, তাসবীহ ও তাকবীর পাঠ করা।

মূসা ইবনু ইসমা’ঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে মদিনায় যুহরের সলাত/নামাজ আদায় করেন চার রাক’আত এবং যুল-হুলাইফায় পৌঁছে ’আসরের সলাত /নামাজ আদায় করলেন দু’ রাক’আত। এরপর সেখানেই ভোর পর্যন্ত রাত কাটালেন। সকালে সাওয়ারীতে আরোহণ করে বায়দা নামক স্থানে উপনীত হলেন। তখন তিনি আল্লাহর হামদ, তাসবীহ ও তাকবীর পাঠ করছিলেন। এরপর তিনি হজ্জ ও ’উমরার তালবিয়া পাঠ করলেন। সাহাবীগণও উভয়ের তালবিয়া পাঠ করলেন। যখন আমরা মক্কার উপকণ্ঠে পৌঁছলাম তখন তিনি সাহাবীগণকে ’উমরা শেষ করে হালাল হওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং তাঁরা হালাল হয়ে গেলেন।

অবশেষে যিলহাজ্জ মাসের আট তারিখে তাঁরা হাজ্জের ইহরাম বাঁধলেন। রাবী বলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে কিছুসংখ্যক দাঁড়ানো উট নহর (যবেহ‌) করলেন। আর রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় সাদা কাল মিশ্রিত রং-এর দু’টি মেষ যবেহ‌ করেছিলেন।

আবূ ’আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন, কোন কোন রাবী হাদীসটি আইয়ূ্ব (রহঃ) সূত্রে জনৈক রাবীর মাধ্যমে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন।

( বুখারী সহীহ হাদিসঃ১৪৫৮ ইফাবা / ১৫৫১ আন্তঃ )

 

২। হুজ্জাতুল বিদা এর পূর্বে আলী ইবনু আবূ তালিব এবং খালিদ ইবনু ওয়ালিদ (রাঃ) কে ইয়ামানে প্রেরণ

মুসাদ্দাদ (রহঃ) … বকর (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) এর কাছে এ কথা উল্লেখ করা হল, আনাস (রাঃ) লোকদের কাছে বর্ননা করেছেন যে, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ্জ এবং ওমরার জন্য ইহরাম বেঁধেছিলেন। তখন ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ্জের জন্য ইহরাম বেঁধেছেন, তাঁর সাথে আমরাও হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধি। যখন আমরা মক্কায় উপনীত হই, তিনি বললেন, তোমাদের যার সঙ্গে কুরবানীর পশু নেই, সে যেন তার হজ্জের ইহরাম ওমরার ইহরামে পরিনত করে ফেলে। অবশ্য নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিলো। এরপর আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) হজ্জের উদ্দেশ্যে ইয়ামান থেকে আসলেন। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কিসের ইহরাম বেঁধেছ? কারন আমাদের সাথে তোমার স্ত্রী (ফাতিমা) রয়েছে। তিনি উত্তর দিলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেটির ইহরাম বেঁধেছেন, আমি সেটিরই ইহরাম বেঁধেছি। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে এ অবস্থায়ই থাক, কারন আমাদের কাছে কুরবানীর জন্তু আছে।

( বুখারী সহীহ হাদিসঃ ৪০১৫ ইফাবা /৪৩৫৩-৪৩৫৪ আন্তঃ )

৩। আহমাদ ইবন হাম্বল (রহঃ) ….. আনাস ইবন মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত।

তারা (ইয়াহইয়া, আবদুল আযীয প্রমুখ) তাঁকে বলতে শুনেছেন, আমি রসুলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হজ্জ ও ওমরার জন্য একত্রে তালবিয়া পাঠ করতে শুনেছি। তিনি বলতেনঃ (لَبَّيْكَ عُمْرَةً وَحَجًّا لَبَّيْكَ عُمْرَةً وَحَجًّا) আমি হজ্জ ও ওমরার জন্য (হে আল্লাহ্) তোমার সমীপে হাজির।

( আবু দাউদ সহিহ হাদিসঃ ১৭৯৫ ইফাবা )

 

৪। আমর ইবন আলী (রহঃ) … ইমরান (রাঃ) থেকে বর্ণিত।

রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ্জ ও ওমরাহ একসাথে আদায় করেন। তারপর এ সম্পর্কে কুরআনের কোন আয়াত অবতীর্ণ হয়নি এবং নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও এর থেকে নিষেধ করেন নি। এক ব্যক্তি তার নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

( আন- নাসাঈ সহিহ হাদিসঃ ২৭২৯,২৭৩০ ইফাবা )

৫। মুজাহিদ ইবন মূসা ও ইয়াকূব ইবন ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত।

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, লাব্বায়কা উমরাতান ওয়া হাজ্জান, লাব্বায়কা উমরাতান ওয়া হাজ্জান।

( আন- নাসাঈ সহিহ হাদিসঃ ২৭৩১ ইফাবা, ইবন মাজাহ ২৯৬৮ )

৬। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি ওমরাহ ও হজ্জ উভয়ের একত্রে ইহরাম বেঁধে লাব্বায়িক বলতে শুনেছি।

( তিরমিজী সহীহ হাদিসঃ ৮২১ তাহকীককৃত , ইবনে মাজাহ সহীহ হাদিস : ২৯৬৮,২৯৬৯ )

 

৭। ইব্‌ন ’উমর (রাঃ) বলেন তা-ই মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) বলেন, (কুরআনের শব্দ) صَوَافَّ এর অর্থ দাঁড় করিয়ে (কুরবানী করা)।

সাহ্‌ল ইবনু বাক্কার (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনাতে যোহর চার রাক’আতে এবং যুল হুলাইফাতে ’আস্‌র দু’রাক’আত আদায় করলেন এবং এখানেই রাত যাপন করলেন। ভোর হলে তিনি সাওয়ারীতে আরোহণ করে তাহ্‌লীল ও তাসবীহ পাঠ করতে লাগলেন। এরপর বায়াদায় যাওয়ার পর তিনি হজ্জ ও ওমরাহ উভয়ের জন্য তালবিয়া পাঠ করেন এবং মক্কায় প্রবেশ করে তিনি সাহাবাদের ইহ্‌রাম খুলে ফেলার নির্দেশ দেন। আর (সে হজ্জে) নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাতটি উট দাঁড় করিয়ে নিজ হাতে কুরবনী করেন আর মদিনাতে হৃষ্টপুষ্ট শিং বিশিষ্ট সুন্দর দু’টি মেষ কুরবানী দেন।

( বুখারী সহিহ হাদিসঃ ১৬০৬ ইফাবা / ১৭১৪ )

আরও সম্পর্কৃত লিংক

১। হজ্জ পালন করার নিয়ম।
২। ওমরাহ পালন করার নিয়ম।
৩। হজ ও ওমরার ইহরামের জন্য নির্ধারিত স্থান বা মিকাত । 
৪। হজ্জ এবং ওমরাহ পালনের দোয়া।

 

আল্লাহ তায়ালা যেন হজ্জ ফরজ কারী প্রত্যেক ব্যক্তিকেই যথাযথভাবে হজ্জ পালন করার তৌফিক দান করেন আমিন।

Leave a Reply