Skip to content

হজ ও ওমরার ইহরামের জন্য নির্ধারিত স্থান বা মিকাত ?

হজ ও ওমরার ইহরামের জন্য নির্ধারিত স্থান বা মিকাত ?

মিকাত কি ?

আসসালামু আলাইকুম, মিকাত হচ্ছে নির্ধারিত কিছু স্থান, হজের ইহরাম বাধার আগে আপনাকে জানতে হবে, মিকাত সম্পর্কে। হজ্জ শুরু করার আগে আপনাকে ইহরাম বাধতে হবে। তাই মিকাত থেকে হাজীকে ইহরাম বাধতে হয় ।

মিকাত


মিকাত

যারা মক্কা মুকাররমার উদ্দেশ্যে বের হবে, তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান অতিক্রম করার আগে ইহরাম বেঁধে নেওয়া ওয়াজিব। ঐ নির্ধারিত স্থানকেই মীকাত বলে। কেউ যদি ইহরাম ছাড়া মীকাত অতিক্রম করে, তাহলে আবার মীকাতে ফিরে এসে ইহরাম বাঁধতে হবে, অন্যথায় দম ওয়াজিব হবে।

হজ্বের ইহরাম বাঁধার জন্য শরীয়ত প্রবর্তক যেসব স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন|

হাদিসের বর্ণনায় রাসূল (সা:) এর বাণী। ……….

আবু বক্কর ইবনে আবু শায়বা (র.) ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত যে , রাসূল (সা:) মদিনা অধিবাসীদের জন্য যুল-হুলায়ফা, সিরিয়া অধিবাসীদের জন্য , আল-জুহবা , নাজদ বাসীদের জন্য কারনুল-মানাযিল এবং ইয়েমেন বাসীদের জন্য ইয়ালামলাম কে মিকাত নির্ধারিত করেছেন। তিনি আরও বলেছেন এগুলো উল্লেখিত এলাকার লোকদের মিকাত এবং বাহির থেকে যে সমস্ত লোক এই রাস্তা দিয়ে হজ্জ ও ওমরা করতে আসবে তাদের জন্য। আর যে সব লোক মীকাতের অভ্যন্তরে বসবাস করে, তারা যে স্থান থেকে ইহরাম বাঁধতে ইচ্ছে করে , সে স্থান হতে। এমনকি মক্কা বাসি মক্কা থেকে ইহরাম বাঁধবে।

(সহীহ মুসলিম শরীফ , অধ্যায় হজ্জ- হাদিস নং ২৬৭৫)

নোটঃ ধাত ইরক মিকাত হিসেবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্ধারণ করে যান নি, বরং তা নির্ধারণ করেছেন উমর রাযি.।

মিকাতের প্রকারভেদ-

মিকাতের স্থান মোট পাঁচটি।

  •  যুল-হুলাইফা ।
  •  আল-জুহবা ।
  •  কারনুল-মানাযিল ।
  •  ইয়ালামলাম ।
  •  ধাত ইরক।

 

ওমরাহ হজ্জের ধারাবাহিক নিয়ম……………………

ধর্মীয় সম্পর্কে আরও কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন। ……………

১।  যুল-হুলাইফা:

মীকাত (ذو الحليفة) যুলহুলাইফা নামক স্থানটি কোথায়? এখান থেকে কোন কোন এলাকার লোকেরা ইহরাম বাঁধবে?

এস্থানটি এখন (أَبيَارِ عَلِيٍّ) ‘আবইয়ারে আলী’ নামে পরিচিত। এটি মসজিদে নববী থেকে ১৩ কিলোমিটার এবং মক্কা শহর থেকে প্রায় ৪৩৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মদীনাবাসী এবং এ পথ দিয়ে যারা আসে তারা এখান থেকে ইহরাম বাধবে। মক্কা শহর থেকে এটাই সবচেয়ে দূরতম মীকাত।

মিকাত

মিকাত

২। আল-জুহফা :

মীকাত (الجحفة) আল-জুহফা নামক স্থানটি কোথায়? এখান থেকে কোন দেশের লোকেরা ইহরাম বাঁধে?
এ জায়গাটি লোহিত সাগর থেকে ১০ কিলোমিটার ভিতরে (رابغ) ‘রাবেগ’ শহরের কাছে। জুহফাতে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ‘রাবেগ’ নামক স্থান থেকে এখন লোকেরা ইহরাম পরে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এখন এটি একটি বড় শহর। জম্মুম উপত্যকার পথ ধরে মক্কা শহর থেকে এ স্থানটি প্রায় ১৯১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
যেসব দেশের লোকেরা এখান থেকে ইহরাম পরিধান করে তা হল :

সিরিয়া, লেবানন, জর্দান, ফিলিস্তীন, মিশর, সূদান, মরক্কো, আফ্রীকার দেশসমূহ, সৌদী আরবের উত্তরাঞ্চলীয় কিছু এলাকা এবং মদীনার পথ ধরে যারা আসে, তারাও এখান থেকে ইহরাম বাঁধে।

আল-জুহবা

আল-জুহবা

৩। কারনল-মানাযিল :

বর্তমানে এর নাম «আস্সাইলুল কাবীর»। মক্কা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৮২.৫ কি.মি.।
তৃতীয় মীকাত (قرن المنازل) ‘কারনল-মানাযিল’ কোথায়? এবং এটা কোন এলাকার লোকদের মীকাত?
কারনল-মানাযিল (قَرْنُ الْمَنَازِل) স্থানটি এখন (السيل الكبير) “সাইলুল কাবীর” নামে প্রসিদ্ধ। সরকারী বেসরকারী অফিস আদালতসহ এটি এখন একটা বড় গ্রাম। মক্কা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৮২.৫ কিলোমিটার।

যেসব এলাকা ও দেশের লোকেরা এখান থেকে ইহরাম বাঁধে সেগুলো হল :

(ক) রিয়াদ, দাম্মাম ও তায়েফ (খ) কাতার (গ) কুয়েত (ঘ) আরব আমীরাত (ঙ) বাহরাইন (চ) ওমান (ছ) ইরাক, (জ) ইরানসহ উপসাগরীয় রাষ্ট্রসমূহ এবং এ পথ দিয়ে যারা আসে।

ওমরাহ হজ্জের ধারাবাহিক নিয়ম……………………

কারনুল-মানাযিল

কারনুল-মানাযিল

৪। ইয়ালামলাম :

মীকাত “ইয়ালামলাম” (يلملم) যেখানে বাংলাদেশ থেকে গমনকারী লোকেরা ইহরাম বাঁধে- এটির অবস্থান কোথায় এবং কেমন?
‘ইয়ালামলাম’ শব্দটি একটি উপত্যাকার নাম বলে জানা যায়। এ জায়গাটি মক্কা শরীফ থেকে প্রায় ১০৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এলাকাটি السعدية ‘সাদীয়া’ নামেও পরিচিত।

যেসব দেশের লোকেরা এখান থেকে ইহরাম বাঁধে সেগুলো হল :

(ক) ইয়ামেন, (খ) বাংলাদেশ, (গ) ভারতবর্ষ, (ঘ) চীন, (ঙ) ইন্দোনেশিয়া, (চ) মালয়েশিয়া, (ছ) দক্ষিণ এশিয়াসহ পূর্বের দেশসমূহ।

ইয়ালামলাম

ইয়ালামলাম

৫। ধাত ইরক :

মীকাতটির নাম (ذات عرق) ‘যাত-ইরক’। এটা মক্কা শহর থেকে প্রায় ১১২ কিলোমিটার দূরে। প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট না থাকায় এটি এখন আর ব্যবহৃত হচ্ছে না।
এটা ছিল ইরাকবাসীদের মীকাত। তারা এখন তৃতীয় মীকাত ‘সাইলুল কাবীর’ ব্যবহার করে।
বর্তমানে এর নাম «আদ্দারীবা» অথবা «আল খারীবাত»। মক্কা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১১২ কি.মি.। বর্তমানে তা পরিত্যাক্ত একটি জায়গা।

এটা পূর্বাঞ্চলীয়, যেমন ইরাক, ইরান ও এর ওপারের দেশবাসীদের মিকাত।

ওমরাহ হজ্জের ধারাবাহিক নিয়ম……………………

যাতু ইরক

যাতু ইরক

 

বাংলাদেশীদের মিকাত কোনটি ?

বাংলাদেরম, ভারত, ও পকিস্তান প্রভৃতি পূর্বাঞ্চলীয় লোকদের জন্য মিকাতের জন্য নির্ধারিত স্থানটি হল ইয়ালামলাম (মক্কা থেকে দক্ষিণপূর্বে অবস্থিত একটি পাহাড়ের নাম)। সামুদ্রিক জাহাজ যোগে আসা হজ্জ যাত্রীগণ এ স্থানটি অতিক্রম করার পূর্বেই ইহরাম বেঁধে নিবে। বিমান বা প্লেনে এ স্থান বরাবর রেখা কখন অতিক্রম করবে তা বুঝা যায়না , তাই প্লেন যোগে আসা হজ্জ বা ওমরার উদ্দেশ্যে মক্কায় গমনকারী হজ্জ যাত্রী গণ প্লেনে আরোহন বা উঠার পূর্বেই এহরাম বেঁধে নেওয়া উচিত। বিমান বন্ধরে নেমে বা হাজি ক্যাম্প থেকে বা বাসা থেকে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে বাসায় বা মসজিদে যে কোন স্থান থেকে এহরাম বাধা যায়।

(আহকামে জিন্দেগী পৃষ্টা -২৮৮)

ওমরাহ হজ্জের ধারাবাহিক নিয়ম……………………

ধর্মীয় সম্পর্কে আরও কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন। ……………


Download Miqat PDF File…………..

Leave a Reply