Skip to content

দুই ঈদের নামাজ আদায়ের পদ্ধতি I Eid namaz

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

Table of Contents

দুই ঈদের নামাজ আদায়ের পদ্ধতি ?

দুই ঈদের সলাত –

আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করছি যে, তিনি আমাকে এবং আপনাদের  দীর্ঘজীবি করেছেন, যার ফলে আমরা  আজকের এ দিনগুলোতে উপনীত হওয়ার সুযোগ লাভ করেছি  এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার জন্য ইবাদত ও নেক আমল করার সুযোগ পেয়েছি। আমিন

ঈদের দিনের রীতিনীতি ঈদুল আযহা শব্দের উৎপত্তি-

শাব্দিক অর্থে id-i aẓhā (ফার্সি শব্দ) এবং  eid-al-Adahah (আরবি শব্দ)  ‘ত্যাগের উৎসব’

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে এটি  দ্বিতীয় উৎসব । আমাদের দেশে এই উৎসবটি কুরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। এই উৎসবকে ঈদুজ্জোহাও বলা হয়। ঈদুল আযহা মূলত আরবি বাক্যাংশ। এর অর্থ হলো ‘ত্যাগের উৎসব’। এই উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল ত্যাগ করা।

হাদিসের বর্ণনায় –

মুসা ইবনে ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত,  তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদ্বীনায় পৌঁছে দেখতে পান যে, সেখানকার অধিবাসীরা দুইটি দিন (নায়মূক ও মেহেরজান) খেলাধূলা ও আনন্দ-উৎসব করে থাকে। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করেন, এই দুইটি দিন কিসের? তারা বলেন, জাহেলী যুগে আমরা এই দুই দিন খেলাধূলা ও উৎসব করতাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে এই দুই দিনের পরিবর্তে অন্য দুইটি উত্তম দিন দান করেছেন এবং তা হল: কোরবানীর ঈদ এবং রোযার ঈদ।

(তিরমিযী, নাসাঈ – ১৫৫৯)

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র / Table of Contents of Prayers …………..

ঈদুল আজহা মোট কয় দিন

ঈদুল আজহা মোট তিন দিন। সে হিসেবে কোরবানিও তিন দিন করা যায়। জিলহজে মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানির সময়। তবে সম্ভব হলে জিলহজের ১০ তারিখেই (বা প্রথম দিনে) কোরবানি করা উত্তম।

(মুয়াত্তা মালেক : ১৮৮; বাদায়িউস সানায়ি : ৪/১৯৮, ২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ৫/২৯৫)

 উভয় ঈদের নামযের রাক‘আতের সংখ্যা –

ইমরান ইবনু মুসা (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ঈদুল আযহার সালাত দু’রাকআত, ঈদুল ফিতরের সালাত দু’রাকআত, মুসাফিরের সালাত দু’রাকআত এবং জুমুআর সালাত দু’রাকআতই পরিপূর্ণ; অসম্পুর্ন নয়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভাষ্য মতে।

( সুনান আন-নাসাঈ- ১৫৬৯ সহীহ )

কুরবানীর ঈদের দিনের প্রথম কাজ ?

ঈদের দিনের পোশাক

ঈদের দিন রেশমি সুতার কাপড় পরিধান না করা।

(বুখারী হাদিস নং- ৯০১)

দুই ঈদের দিনে নতুন কাপড় পড়তে হবে এমন কোন সহীহ হাদিস নেই , নতুন কাপড় পড়া সুন্নাত একনটিও নয় , বরং  তার সাধ্যমত ঘরে যে পোশাক থাকবে তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সাজসজ্জা করা।

আল- কুরআনের  বাণী –

অর্থ – হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।

(সূরা আল আ’রাফ, আয়াত – ৩১)

টাকনুর   নিচে কাপড় পরিধান করা –

ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত- তিনি   বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ সে ব্যাক্তির দিকে (রহমতের দৃষ্টিতে) তাকাবেন না, যে অহংকারের সাথে তার (পরিধেয়) পোশাক টেনে চলে।

(বুখারী হাদিস নং- ৫৭৮৩)

আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার অন্তরে অনু পরিমান অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এক ব্যাক্তি জিজ্ঞেস করল, মানুষ চায় যে, তার পোশাক সুন্দর হোক, তার জুতা সুন্দর হোক, এও কি অহংকার? রাসুল বললেনঃ আল্লাহ সুন্দর, তিনি সুন্দরকে ভালবাসেন। অহমিকা হচ্ছে দম্ভভরে সত্য ও ন্যায় অস্বীকার করা এবং মানুষকে ঘৃণা করা।

(মুসলিম – ১৬৭)

ঈদের দিনে সকালের খাবার ?

ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন –

ইদুলফিতরের সালাতে যাওয়ার পূর্বে কিছু নাস্তা বা মিষ্টি মুখ করে যাওয়া ভাল ।

( বুখারী সহীহ হাদিস নং – ৯০৫  )

ঈদুল আযাহা বা কুরবানীর সালাতে যাওয়ার পূর্বে কিছু নাস্তা বা মিষ্টি মুখ না করে যাওয়া ভাল ।

( বুখারী সহীহ হাদিস নং – ৯০৬,৯০৭  )

ঈদের সালাতের সময় –

ঈদের সালাত সকাল সকাল অর্থাৎ ইশরাকের সময় (সূর্য যখন কিছু উপরে ওঠে)

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস নং – ১১৩৫, বুখারী অনুচ্ছেদঃ – ৬১১ )

ঈদের মাঠ থেকে ফিরার সময়  ভিন্ন পথে আসা –

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন নবী করীম (রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদের দিন বাড়ি ফেরার সময় ভিন্ন পথে আসতেন আসতেন। ………. ।

( বুখারী হাদিস নং – ৯৩৪, আবু দাঊদ – ১১৫৬ )

ঈদের দিনে সালাত আদায় করা প্রসঙ্গে?

বারা’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) কে খুতবা বা ভাষণ দিতে শুনেছি ।তিনি বলেছেন আমাদের আজকের এ দিনে প্রথম কাজ সালাত এবং ফিরে এসে কুরবানী করা …।

( বুখারী সহীহ হাদিস নং – ৯০৩, ৯১৪, ৯৫১  )

ঈদের সালাতে আযান ও ইকামাহ –

ঈদের সালাতে আযান ও ইকামাহ হয় না। ইবনে আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত – তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম)ঈদের নামাযে আযান ও ইকামাহ ব্যতীত আদায় করেন এবং হযরত আবু বক্কর (রা:), হযরত উমার (রা:), এবং হযরত উছমান (রা:)ও তদ্রূফ করেন ।

(আবু দাঊদ সহীহ হাদিস নং – ১১৪৭, ১১৪৮, মুসলিম হাদিস- ১৯২২, ১৯২৩, ১৯২৪, তিরমিজী হাদিস – ৫৩২, তিরমিজী হাদিস – ৫৩২, আন নাসাঈ- ১৫৬৫)

ঈদের নামাযে তাকবীরের সংখ্যা –

কুতায়বা (র)…. আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)ঈদের নামাযে (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আয্হা) প্রথম রাকাতে সাত এবং দ্বিতীয় রাকাতে পাঁচবার তাকবীর বলতেন (রুকুর দুই তাকবীর ছাড়া)।

(আবু দাঊদ হাদিস নং – ১১৪৯, ১১৫০, ১১৫১ )

প্রথমে রাকআতে সাতটি তাকবীর বলে কিরাআত পাঠ করা এবং দ্বিতীয় রাকাতে দণ্ডায়মান হয়ে চারবার তাকবীর বলে কিরাআত শুরু করতেন এবং পরে রুকুতে যেতেন।

( আবু দাঊদ – ১১৫২ )

আবু মুসা আল-আশআরী (রাঃ)-কে এবং হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ)- বলেন , তিনি নবী (সাঃ)জানাযার নামাযে চার তাকবীর আদায় করতেন (অর্থাৎ তিনি জানাযার নামাযের অনুরূপ ঈদের নামাযের প্রতি রাকাতে চারটি তাকবীর বলতেন এবং তা তাহ্‌রীমা ও রুকুর তাকবীর সহ ……………..।

(আবু দাঊদ হাদিস নং – ১১৫৩ { হাদিস হাসান })

উভয় ঈদের নামাযে সূরা পাঠ –

উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত- তিনি আবু ওয়াকিদ আল-লায়ছি (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাযে কোন সূরা পাঠ করতেন? তিনি বলেন, সূরা “ক্বাফ” ও সূরা “ক্বামার” পাঠ করতেন আবার কখনও সূরা “আল-আ‘লা” ও সূরা আল- গাশিয়াহ পাঠ করতেন ।

(আবু দাঊদ সহীহ হাদিস নং – ১১৫৪ , আন-নাসাঈ সহীহ –  ১৫৭১ )

ঈদের দিন সালাতের পর খুতবা –

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন , আমি হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ), আবু বকর এবং উমর (রা)  এর সঙ্গে সালাতে হাজির ছিলাম । তারা সবাই খুতবার আগে সালাত আদায় করতেন ।

( বুখারী সহীহ হাদিস নং – ৯১১, ৯১২, ৯১৩  )

খুতবা শুনার জন্য বসা-

আব্দুল্লাহ ইবনুস-সায়েব (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন , আমি নবী (রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে ঈদের নামায আদায় করি।  নামায শেষে তিনি বলেন – আমি এখন খুতবা দেব।  যে শুনতে চায় , সে যেন বসে থাকে এবং যে চলে যেতে চায় সে যেতে পারে।

( আবু দাউদ সহীহ হাদিস- ১১৫৫, আন-নাসাঈ সহীহ –  ১৫৭৪ )

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র / Table of Contents of Prayers …………..

খুৎবা দেয়ার সময় নীরব থাকা-

মুহাম্মাদ ইবনু সালামা এবং হারিছ ইবনু মিসকীন (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি যদি ইমামের খূৎবা দেয়াকালীন তোমার সাথীকে বল, “নিরব থাক” তা হলে তুমি একটি অনর্থক কাজ করবে।

( আন-নাসাঈ  সহীহ –  ১৫৮০)

খুৎবার মাঝখানে বসা এবং তাতে নীরব থাকা-

কুতায়বা (রহঃ) … জাবির ইবনু সামুরা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখলাম যে, তিনি দাঁড়িয়ে খুৎবা দিচ্ছেন। অতঃপর ক্ষণিকের তরে নীরব হয়ে বসলেন। পুনরায় দাঁড়ালেন ও দ্বিতীয় খুৎবা দিলেন। অতএব, যে ব্যক্তি তোমাকে সংবাদ দেয় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে খুৎবা দিয়েছে। তুমি তাকে সত্যবাদী মনে করবে না।

( আন-নাসাঈ  হাসান –  ১৫৮৬)

ঈদের দিন বৃষ্টি হলে মসজিদে নামায আদায় –

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, একদা ঈদের দিন বৃষ্টি হলে নবী ( রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) সাহাবীদের নিয়ে মসজিদে নামায আদায় করেন।

( আবু দাঊদ যঈফ হাদিস – ১১৬০  )

 

 ঈদগাহে নারীদের গমন –

উম্মু আতিয়া (রা) থেকে বর্ণিত – তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন সাবালিকা মেয়েদেরকে, ঋতুমতীদেরকে ও পর্দানশীলদেরকে ইদে যাওয়ার জন্য বের করতে ।তবে ঋতুমতী মহিলারা সালাতে অংশ গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবে। তারা কল্যান কর্ম ও মুসলিমদের দোয়াতে অংশগ্রহন করবে। আমি বললাম ইয়া রাসুল্লল্লাহ ! আমাদের কারো ওড়না না থাকলে সে কি করবে? তিনি বললেন , তার বোন তাকে ওড়না পরিধান করাতে সাহায্য করবে ।

(মুসলিম সহীহ হাদিস নং – ১৯২৭, ১৯২৮, ১৯২৯, বুখারি সহীহ হাদিস – ৯২৩, ৯২৪, ৯২৮ )

ঈদের দিন মহিলাগণের প্রতি  ইমামের উপদেশ দেওয়া –

জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত – নবী (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদুল ফিতরের দিন দাঁড়িয়ে সালাত আদায়  করলেন, পরে খুৎবা দিলেন।  খুৎবা শেষে নেমে মহিলাগণের নিকট আসলেন এবং তাদের নসিহত করলেন  …………… ।

(বুখারী হাদিস নং – ৯২৭)

ঈদগাহে ঋতুমতী মহিলাগণের পৃথক অবস্থান –

উম্মে আতিয়া (রা) থেকে বর্ণিত – তিনি বলেন আমাদেরকে ঈদের দিন বের হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।  তাই  আমরা ঋতুমতী, যুবতী এবং তাঁবুতে অবস্থানকারিনী মহিলাগণ কে নিয়ে বের হতাম।  ইবনে আওন (র)- এর বর্ননায়  রয়েছে তাঁবুতে অবস্থানরত যুবতী মহিলাগণকে নিয়ে বের হতাম। অতঃপর ঋতুমতী মহিলাগণ মুসলমানদের জামাআতে এবং দোয়ায় অংশগ্রহণ করতেন।  তবে ঈদগাহে পৃথকভাবে অবস্থান করতেন।

(বুখারী হাদিস নং – ৯২৯)

ঈদ জামা’আতে পায়ে হেটে বা সওয়ারীতে আরোহণ করে যাওয়া-

ঈদ গাহে যাওয়া এবং আসার সময় দুটি রাস্তা ব্যবহার করা অর্থাৎ এক রাস্তা দিয়ে যাবে এবং অন্য রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরবে ।

(বুখারি সহীহ হাদিস – ৯৩৪ )

কেউ যদি ঈদের সালাত না পায়  সে দু’রাকা’আত সালাত আদায় করবে –

মহিলা এবং যারা বাড়ী ও পল্লীতে অবস্থান করে তারাও এরূপ করবে। কেননা, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে মুসলিমগণ! এ হলো আমাদের ঈদ। আর আনাস ইবন মালিক (রাঃ) যাবিয়া নামক স্থানে তার আযাদকৃত গোলাম ইবন আবু উতবাকে এ আদেশ করেছিলেন। তাই তিনি তার পরিবারবর্গ ও সন্তান সন্ততিদের নিয়ে শহরের অধিবাসীদের ন্যায় তাকবীরসহ সালাত আদায় করেন এবং ইকরিমা (রহঃ) বলেছেন, গ্রামের অধিবাসীরা ঈদের দিন সমবেত হয়ে ইমামের ন্যায় দু’রাকা’য়াত সালাত আদায় করবে। আতা (রহঃ) বলেন, যখন কারো ঈদের সালাত ছুটে যায় তখন সে দু’রাকা’আত সালাত আদায় করবে।

(বুখারী হাদিস – ৯৩৫)

ঈদের সালাতের পূর্বে ও পরে সালাত আদায় না করা –

ঈদের সালাতের আগে ও পরে নবী (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম) কোন  নফল নামায পড়েননি ……।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ১৯৩০, বুখারী সহীহ হাদিস – ৯৩৬, আবু দাঊদ  সহীহ হাদিস  – ১১৫৯, আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস  –  ১৫৯০  )

যে ঈদের সালাতে উপস্থিত থেকেছে, সে যেন জুমু‘আর সালাত আদায় না করে –

ইয়াস ইবনু আবূ রমলা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মু’আবিয়া (রাঃ)-কে যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ)-কে প্রশ্ন করতে শুনেছি, আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ঈদ এবং জুমূআর সালাতে শরীক ছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ; তিনি ঈদের সালাত দিনের শুরুতে আদায় করে ফেলেছিলেন। অতঃপর (গ্রামের অধিবাসীদেরকে) জুমুআর সালাতে উপস্থিত না হওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন।

( আন-নাসাঈ সহীহ  –  ১৫৯৪, ১৫৯৫)

 

ঈদের জামা’আতে এবং হারাম শরীফে অস্ত্রবহণ নিষিদ্ধ-

সায়ীদ ইবনু আস এর পিতা থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, ইবনু উমর (রাঃ) এর নিকট হাজ্জাজ এলো। আমি তখন তার কাছে ছিলাম। হাজ্জাজ জিজ্ঞাসা করলো, তিনি কেমন আছেন? ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, ভাল। হাজ্জাজ জিজ্ঞাসা করলো, আপনাকে কে আঘাত করেছে? তিনি বললেন, আমাকে সে ব্যাক্তি আঘাত করেছে যে সে দিন অস্ত্র ধারণের আদেশ দিয়েছে, যে দিন তা ধারণ করা বৈধ নয়। অর্থাৎ হাজ্জাজ।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৯১৬ ই ফা বা / ৯৬৭ আন্তঃ)

ঈদের দিনে বাদ্য যন্ত্র বাজিয়ে উৎসব এবং খেলাধুলা  –

দফ বাজানো –

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত- আবূ বকর (রাঃ) তার নিকট এলেন। এ সময় মিনার দিবসগুলোর এক দিবসে তার নিকট দু’টি মেয়ে দফ বাজাচ্ছিল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাদর আবৃত অবস্থায় ছিলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) মেয়ে দুটিকে ধমক দিলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখমন্ডল থেকে কাপড় সরিয়ে নিয়ে বললেন, হে আবূ বকর! ওদের বাধা দিও না। কেননা, এসব ঈদের দিন। আর সে দিনগুলো ছিল মিন‍ার দিন।

খেলাধুলা-

আয়িশা (রাঃ) আরো বলেছেন, হাবশীরাা যখন মসজিদে (এর প্রাঙ্গনে) খেলাধুলা করছিল, তখন আমি তাদের দেখছিলাম এবং আমি দেখছি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আড়াল করে রেখেছেন। উমর (রাঃ) হাবশীদের ধমক দিলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওদের ধমক দিও না। হে বণু আরফিদা! তোমরা যা করছিলে তা নিশ্চিন্তে কর।

(বুখারী সহীহ হাদিস –৯০২, ৯০৪, ৯৩৫, আন-নাসাঈ সহীহ –  ১৫৯৬, ১৫৯৭, ১৬০০)

নবীজি (সা.)-এর সময়ে দফের ব্যবহার- গবেষক মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মুমিন দফ-সংক্রান্ত হাদিসগুলো একত্র করে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত তুলে ধরেছেন। যার কয়েকটি হলো—

 ১. প্রাপ্ত বয়স্ক কোনো নারী বা পুরুষ নিজেরা গান করেননি এবং বাদ্যযন্ত্র (দফ) বাজাননি।

২. গান করেছে বালিকা, কিশোরী ও দাসিরা। অন্যরা শুধু শুনেছে।

৩. দফের অনুমতি দেওয়া হয়েছে শুধু বিয়ে ও ঈদের দিনে।

৪. যারা গান করেছিল এবং দফ বাজিয়েছিল তারা পেশাদার গায়িকা ছিল না।

৫. দফ ছাড়া অন্য কোনো বাদ্যযন্ত্রের কথা হাদিসে ইতিবাচকভাবে আসেনি।

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র / Table of Contents of Prayers …………..

Leave a Reply