Skip to content

নামাজ আদায়ের ফজিলত I Virtues of namaz

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

নামাজ আদায়ের ফজিলত ?

সলাত/নামাজ আদায় করার ফযীলত –

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র / Table of Contents of Prayers …………..

১।  আযান দেওয়া, প্রথম কাতারে সলাত/ নামাজ আদায় করার ফযীলত-

তিনি আরো বলেছেনঃ মানুষ যদি আযান দেওয়া, প্রথম কাতারে সালাত/নামায আদায় করার কী ফযীলত তা জানত, কুরআহর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়া সে সুযোগ না পেত, তাহলে কুরআহর মাধ্যমে হলেও তারা সে সুযোগ গ্রহণ করত………. ।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৬২২ ই ফা বা ,  ৬৫২ – ৬৫৩ আন্তঃ)

২।  ইশা ও ফজরের সলাত (জামা’আতে) আদায়ে কী ফযীলত-

আর ইশা ও ফজরের সালাত (জামা’আতে) আদায়ে কী ফযীলত, তা যদি তারা জানত তা হলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা (জামা’আতে) উপস্থিত হতো …………..।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৬২২ ই ফা বা ,  ৬৫২ – ৬৫৩ আন্তঃ)

৩।  আউয়াল ওয়াক্তে যোহরের সালাতে যাওয়ার ফযীলত-

মানুষ যদি আযান দেওয়া, প্রথম কাতারে সালাত/নামায আদায় করার কী ফযীলত তা জানত, কুরআহর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়া সে সুযোগ না পেত, তাহলে কুরআহর মাধ্যমে হলেও তারা সে সুযোগ গ্রহণ করত এবং  আওয়াল ওয়াক্ত (যোহরের সালাতে যাওয়ার) কী ফযীলত তা যদি মানুষ জানত, তাহলে এর জন্য তারা অবশ্যই সর্বাগ্রে যেত ……………….।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৬২২ ই ফা বা ,  ৬৫২ – ৬৫৩ আন্তঃ)

যথাসময়ে সালাত আদায়ের ফযীলত –

আবূল ওয়ালীদ হিশাম ইবনু আবদুল মালেক (রহঃ) …. আবূ আমর শায়বানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর বাড়ীর দিকে ইশারা করে বলেন, এ বাড়ীর মালিক আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন্ আমল আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, যথাসময়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, এরপর পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) আবার জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোনটি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এরপর জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ্ (আল্লাহর পথে জিহাদ)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, এগুলো তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনই, যদি আমি আরও বেশী জানতে চাইতাম, তাহলে তিনি আরও বলতেন।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৫০২ ই ফা বা/৫২৭ আন্তঃ)

প্রথম কাতারে সালাতের ফযিলত –

আবূ আসিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পানিতে ডুবে, কলেরায়, প্লেগে এবং ভুমিধসে বা চাপা পড়ে মৃত ব্যাক্তিরা শহীদ। যদি লোকেরা জানত যে, প্রথম ওয়াক্তে সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ে কি ফযীলত, তা হলে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করে আগেভাগে আসার চেষ্টা করত। আর ইশা ও ফজরের জামা’আতের কি মর্তবা তা যদি তারা জানত তাহলে হামাগুঁড়ি দিয়ে হলেও তাতে উপস্থিত হত এবং সামনের কাতারের কী ফযিলত তা যদি জানত, তাহলে এর জন্য তারা কুরআ ব্যবহার করত।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৬৮৫  ই ফা বা /৭২০ – ৭২১ আন্তঃ )

তাকবীরে উলার  সাথে নামায আদায়ের ফযীলত-

উকবা ইবনু মুকরাম ও নাসর ইবনু আলী (রহঃ) …… আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কেউ যদি আল্লাহর উদ্দেশ্যে চল্লিশ দিন তাকবীরে উলার সাথে জামাআতে সালাত আদায় করে তবে তাকে দুটি মুক্তি সনদ লিখে দেয়া হয় একটি হল জাহান্নাম থেকে মুক্তির, অপরটি হল মুনাফিকী থেকে মুক্তির।

(তিরমিজী হাসান হাদিস নম্বরঃ ২৪১ ই ফা বা )

ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ আনাস (রাঃ) থেকে মওকূফরূপেও এই হাদিসটি বর্ণিত আছে। সালম ইবনু কুতায়বা তু’মা ইবনু আমর এর সূত্র ব্যতীত অন্য কোন সূত্রে এটি মারফূ হিসাবে বর্ণিত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। হাবীব ইবনু আবী হাবীব আল বাজালী (রহঃ) এর বারতে এটি আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু এর বক্তব্য হিসবে বর্ণিত হয়েছে। ইসমাঈল ইবনু আয়্যাশ (রহঃ) এটিকে উমারা ইবনু গাযিয়্যা আনাস ইবনু মালক উমর ইবনু খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস হিসাবে বর্ণণা করেছেন। তবে এই রিওয়ায়াতটি মাহফূজ বা সংরক্ষেপ নয়। এটি মুরসাল। কেননা, উমারা ইবনু গাযিয়্যা (রহঃ) এর আনাস (রাঃ) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ ঘটেনি। মুহাম্মাদ ইবনু ইসামাঈল বুখারী (রহঃ) বলেন, হাবীব ইবনু আবী হাবীব এর উপনাম হল আবূল কাশুছা; আবূ উমায়রাও বলা হয়।

আসরের সালাতের ফযীলত –

১।   আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) …. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ফেরেশতাগণ পালা বদল করে তোমাদের মাঝে আগমন করেন; একদল দিনে, একদল রাতে। আসর ও ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) উভয় দল একত্র হন। তারপর তোমাদের মাঝে রাত যাপনকারী দলটি উঠে যান। তখন তাদের প্রতিপালক তাদের জিজ্ঞাসা করেন, আমার বান্দাদের কোন্ অবস্থায় রেখে আসলে? অবশ্য তিনি নিজেই তাদের ব্যাপারে সর্বাধিক পরিজ্ঞাত। উত্তরে তাঁরা বলেনঃ আমরা তাদের সালাতে রেখে এসেছি, আর আমরা যখন তাদের কাছে গিয়েছিলাম তখনও তারা সালাত রত ছিলেন।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৫২৮ ই ফা বা/৫৫৫ আন্তঃ)

২।  হুমাইদী (রহঃ) … জরীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি রাতে (পূর্ণিমার) চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ ঐ চাঁদকে তোমরা যেমন দেখছ, ঠিক তেমনি অচিরেই তোমাদের প্রতিপালককে তোমরা দেখতে পাবে। তাঁকে দেখতে তোমরা কোন ভীড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই সূর্য উদয়ের এবং অস্ত যাওয়ার আগের সালাত (নামায/নামাজ) (শয়তানের প্রভাবমুক্ত হয়ে) আদায় করতে পারলে তোমরা তাই করবে। তারপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করলেন, “কাজেই তোমার প্রতিপালকের প্রশংসার তাসবীহ্ পাঠ কর সূর্য উদয়ের আগে ও অস্ত যওয়ার আগে।” (সূরা কাফ আয়াত – ৩৯)

ইসমাঈল (রহঃ) বলেন, এর অর্থ হলঃ এমনভাবে আদায় করার চেষ্টা করবে যেন কখনো ছুটে না যায়।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৫২৭ ই ফা বা/৫৫৪ আন্তঃ)

ইশার সালাতের ফযীলত –

ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) …. আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে বিলম্ব করলেন। এ হল ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রসারের আগের কথা। (সালাতের জন্য) তিনি বেরিয়ে আসেননি, এমন কি উমর (রাঃ) বললেন, মহিলা ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। এরপর তিনি বেরিয়ে এলেন এবং মসজিদের লোকদের লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমরা ব্যতীত যমীনের অধিবাসীদের কেউ ইশার সালাতের জন্য অপেক্ষায় নেই।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৫৩৯ ই ফা বা/৫৬৬ আন্তঃ)

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র / Table of Contents of Prayers …………..

ফজরের সালাতের ফযীলত –

মূসা’দ্দাদ (রহঃ) …. জারীর ইবনু আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ছিলাম। হঠাৎ তিনি পূর্ণিমা রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, শোন! এটি যেমন দেখতে পাচ্ছ– তোমাদের প্রতিপালককেও তোমরা তেমনি দেখতে পাবে। তাঁকে দেখতে তোমরা ভিড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই তোমরা যদি সূর্য উঠার আগের সালাত (নামায/নামাজ) ও সূর্য ডুবার আগের সালাত আদায়ে সমর্থ হও, তাহলে তাই কর। তারপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেনঃ “সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসার তাসবীহ্ পাঠ করুন।” (৫০ঃ ৩৯)।

আবূ আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ইবনু শিহাব (রহঃ) জারীর (রাঃ) থেকে আরো বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে খালি চোখে দেখতে পাবে।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৫৪৫ ই ফা বা / ৫৭৩ আন্তঃ )

Leave a Reply