বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
ফরজ নামাজের পর দোয়া ও জিকির সমূহ I Zikir after namaz ?
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন – اِقۡرَاۡ بِاسۡمِ رَبِّکَ الَّذِیۡ خَلَقَ – পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।
মহান আল্লাহতায়ালা বলেন –
اُتۡلُ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ مِنَ الۡکِتٰبِ وَ اَقِمِ الصَّلٰوۃَ ؕ اِنَّ الصَّلٰوۃَ تَنۡهٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ لَذِکۡرُ اللّٰهِ اَکۡبَرُ ؕ وَ اللّٰهُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ
অর্থ – তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে তিলাওয়াত কর এবং সালাত কায়েম কর। নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর।
( সূরা আন-কাবুত আয়াত- ৪৫)
মহান আল্লাহতায়ালা অন্য আরেকটি আয়াতে বলেন –
فَاِذَا قَضَیۡتُمُ الصَّلٰوۃَ فَاذۡکُرُوا اللّٰهَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی جُنُوۡبِکُمۡ ۚ فَاِذَا اطۡمَاۡنَنۡتُمۡ فَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ ۚ اِنَّ الصَّلٰوۃَ کَانَتۡ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ کِتٰبًا مَّوۡقُوۡتًا
অর্থ – অতঃপর যখন তোমরা সালাত পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।
(সূরা আন-নিসা আয়াত- ১০৩)
মহান আল্লাহতায়ালা অন্য আরেকটি আয়াতে বলেন –
لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰهِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰهَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَکَرَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا
অর্থ – অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।
(সূরা আল-আহযাব আয়াত- ২১)
ফরয নামাজের পরে দোয়া তাসবিহ সমূহ –
নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র / Table of Contents of Prayers …………..
১। একবার ” আল্লহু আকবার “ বলা । অর্থ : আল্লাহ সবার চেয়ে বড়।
( বুখারী সহীহ হাদিস- ৮০২ ই ফা বা।/৮৪২ আন্তঃ , মুসলিম সহীহ হাদিস – ১২০৩ হাদিস একাডেমি/ ৫৮৩ আন্তঃ , মিশকাত সহীহ হাদিস- ৯৫৯, ৯৬১ )
২। তিনবার ” আস্তাগফিরুল্ল-হ “ এবং এই দোয়া টি পড়তেন ” আল্লা-হুম্মা আনতাস সালা-মু , ওয়া মিনকাস সালা-মু, তাবা-রাকতা ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম “।
اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَام
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনিই শান্তি, আপনার থেকেই আসে শান্তি। বরকতময় আপনি, হে মর্যাদা ও সম্মানের মালিক। এটুকু পড়েই ইমাম উঠে যেতে পারেন।
( মুসলিম সহীহ হাদিস – ১২২১ হাদিস একাডেমি/৫৯১ আন্তঃ, মিশকাত সহীহ হাদিস – ৯৬১ )
৩। এই দোয়া টি পড়তেন ” আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিআন, ওয়া রিজকন তয়্যিবান, ওয়া আমালান মুতাকব্বালা “।
اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا طَيِّبًا وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً
( ইবনে মাজাহ সহীহ হাদিস : ৯২৫)
৪। সালাম ফিরানোর পর রসূলুল্লাহ সাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দোয়াটিও পড়তেন – “ লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই।
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
( মুসলিম সহীহ হাদিস – ১২৩১হাদিস একাডেমি/ ৫৯৪ আন্তঃ )
৫। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি প্রত্যেক সালাতের পর এ দু’আ পাঠ করতে ভুল করো না- ” রব্বি আ ইন্নী আলা- যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবা-দাতিকা “ ।
رَبِّأَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার যিকর, শুকর ও উত্তমরূপে ’ইবাদাত করতে সাহায্য কর।
( মিশকাত সহীহ হাদিস – ৯৪৯, আহমাদ, আবূ দাঊদ ও নাসায়ী )
৬। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর উক্ত দোয়া পাঠ করবে, তার সকল গুনাহ মাফ করা হবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়।
” সুবহা-নাল্লা-হ (৩৩ বার)। আলহাম্দুলিল্লা-হ (৩৩ বার)। আল্লাহু আকবার (৩৩ বার)। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লে শাইয়িন ক্বাদীর (১ বার) / অথবা আল্লাহু আকবার (৩৪ বার)।“
অর্থ : পবিত্রতাময় আল্লাহ। যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। নেই কোন উপাস্য এক আল্লাহ ব্যতীত; তার কোন শরীক নেই। তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব ও তাঁরই জন্য যাবতীয় প্রশংসা; তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী।
(মুসলিম সহীহ হাদিস – ১২৩৯ হাদিস একাডেমি/৫৯৬ আন্তঃ, মিশকাত সহীহ হাদিস – ৯৬৭, ৯৬৬ )
” অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি আয়েশা ও ফাতেমা (রাঃ)-কে বলেন, তোমরা এ দুআটি প্রত্যেক সালাতের শেষে এবং শয়নকালে পড়বে। এটাই তোমাদের জন্য একজন খাদেমের চাইতে উত্তম হবে।”
( বুখারী সহীহ হাদিস – ৪৯৭০ ই ফা বা/৫৩৬১ আন্তঃ, মুসলিম সহীহ হাদিস – ৬৮০৮ হাদিস একাডেমি/ ২৭২৭ আন্তঃ/৬৬৬৭ ই ফা বা, আবূ দাঊদ সহীহ হাদিস- ৫০৬২ তাহকীককৃত )
৭। ” সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী, সুবহা-নাল্লা-হিল আযীম “। অথবা সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে ” সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি “ পড়বে।
– سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ
অর্থ : মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তার জন্য। মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি মহান।
এই দোয়া পাঠের ফলে তার সকল গুনাহ ঝরে যাবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এই দোয়া সম্পর্কে বলেন যে, দু’টি কালেমা রয়েছে, যা রহমানের নিকট খুবই প্রিয়, যবানে বলতে খুবই হালকা এবং মীযানের পাল্লায় খুবই ভারী। তা হ’ল সুবহা-নাল্লাহি……………..।
( মিশকাত সহীহ হাদিস- ২২৯৬, বুখারী সহীহ হাদিস- ৫৯৬৩ ই ফা বা/৬৪০৫ আন্তঃ, মুসলিম সহীহ হাদিস – ৬৭৩৫ হাদিস একাডেমি/৬৫৯৮ ই ফা বা/২৬৯১ আন্তঃ, তিরমিযী সহীহ হাদিস – ৩৪৬৬ ই ফা বা, ইবনু মাজাহ সহীহ হাদিস – ৩৮১২ )
৮। এই দোয়া টিও পড়তেন ” লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুওয়া ’আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বদীর, লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ, লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়ালা- না’বুদু ইল্লা- ঈয়্যাহু, লাহুন্ নি’মাতু, ওয়ালাহুল ফাযলু, ওয়ালাহুস্ সানা-উল হাসানু, লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মুখলিসীনা লাহুদ্দীন, ওয়ালাও কারিহাল কা-ফিরূন ’’
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّه لَا إِلَه إِلَّا الله لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا نَعْبُدُ إِلَّا إِيَّاهُ لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدّين وَلَو كره الْكَافِرُونَ
অর্থ – আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা’বূদ নেই, তিনি এক তাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসা মাত্রই তাঁর এবং তিনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাশীল। কোন অন্যায় ও অনিষ্ট হতে মুক্তি পাওয়ার কোন উপায় নেই এবং কোন সৎ কাজ করারও ক্ষমতা নেই একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া। আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা’বূদ নেই, আমরা একমাত্র তাঁরই ’ইবাদাত করি, যাবতীয় নি’আমাত ও অনুগ্রহ একমাত্র তাঁরই পক্ষ থেকে এবং উত্তম প্রশংসাও তাঁর। আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা’বূদ নেই। আমরা তাঁর দেয়া জীবন বিধান একমাত্র তাঁর জন্য একনিষ্ঠভাবে মান্য করি, যদিও কাফিরদের নিকট তা অপ্রীতিকর।
( মুসলিম সহীহ হাদিস – ১২৩০ হাদিস একাডেমি/৫৯৪ আন্তঃ, মিশকাত সহীহ হাদিস – ৯৬২, ৯৬৩ )
৭। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সলাতের পর এ কালিমাগুলো দ্বারা আল্লাহর নিকটে আশ্রয় চাইতেন – ” আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল জুবনি ওয়া আউযুবিকা মিনাল বুখলি ওয়া আউযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরে; ওয়া আউজুবিকা মিন ফিৎনাতিদ দুন্ইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাবরে “।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ أَرْذَلِ الْعُمُرِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الْقَبْر
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি কাপুরুষতা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। বখিলী থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। নিষ্কর্মা জীবন থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। দুনিয়ার ফিতনাহ্ (ফিতনা) ও কবরের শাস্তি থেকে তোমার নিকটে আশ্রয় চাই ।
( মিশকাত সহীহ হাদিস – ৯৬৪, বুখারী সহীহ হাদিস – ২৬২৬ ই ফা বা/ ২৮২২ আন্তঃ )
৮। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন -এগুলো থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা- ” আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুযনি ওয়াল ’আজযি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া যলা’ইদ্ দায়নি ওয়া গলাবাতির্ রিজা-ল “
اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحُزْنِ وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুশ্চিন্তা, শোক-তাপ, অক্ষমতা-অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, ঋণের বোঝা ও মানুষের জোর-জবরদস্তি হতে আশ্রয় চাই।
( মিশকাত – ২৪৫৮ , নাসায়ী সহীহ হাদিস – ৫৪৪৯ ই ফা বা, তিরমিজী সহীহ হাদিস -৩৪৮৪ ই ফা বা , বুখারী সহীহ হাদিস – ৫৯২৯ ই ফা বা/ ৬৩৬৯ আন্তঃ,আহমাদ ১০৫২ )
৮। ” ১। সুবহা-নাল্ল-হি ওয়া বিহামদিহী ২। আদাদা খলকিহী ৩। ওয়া রিযা- নাফসিহী ৪। ওয়া যিনাতা আরশিহী ওয়া মিদা-দা কালিমা-তিহী “ তিনবার পাঠ করা।
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ
অর্থ – আল্লাহ তা’আলার পূত-পবিত্রতা বর্ণনা করি তাঁর প্রশংসার সাথে, তাঁর সৃষ্টির সংখ্যা পরিমাণ, তাঁর সন্তুষ্টি পরিমাণ, তার ’আরশের ওযন পরিমাণ ও তাঁর বাক্যসমূহের সংখ্যা পরিমাণ।
( মিশকাত সহীহ হাদিস -২৩০১, মুসলিম সহীহ হাদিস – ৬৬৬৫ ই ফা বা/৬৮০৬ হাদিস একাডেমি /২৭২৬ আন্তঃ, সহীহ আত-তারগীব হাদিস – ১৫৭৪, সহীহ আল জামি হাদিস- ৫১৩৯, ইবনু খুযায়মাহ হাদিস- ৭৫৩ )
৯। ” আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল হুদা ওয়াত তুকা ওয়াল ‘আফাফা ওয়াল গিণা।”
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে সুপথের নির্দেশনা, পরহেযগারিতা, পবিত্রতা ও সচ্ছলতা প্রার্থনা করছি।
মুসলিম সহীহ হাদিস -৬৭৯৭ হাদিস একাডেমি/৬৬৫৬ ই ফা বা /২৭২১ আন্তঃ, তিরমিযী সহীহ হাদিস – ৩৪৮৯ ই ফা বা /
১০। ” রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাত শেষে আয়াতুল কুরসী পাঠকারীর জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আর কোন বাধা থাকে না মৃত্যু ব্যতীত’ (নাসাঈ)। শয়নকালে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হিফাযতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযুক্ত থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হতে না পারে “
আয়াতুল কুরসী : “ আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম। লা তা’খুযুহু সেনাতু ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিসসামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আর্য। মান যাল্লাযী ইয়াশফা উ ইনদাহু ইল্লা বি ইজনিহি। ইয়ালামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহীতূনা বিশাইইম মিন ‘ইলমিহী ইল্লা বিমা শাআ; ওয়াসে’আ কুরসিইয়ুহুস সামা ওয়া-তে ওয়াল আর; ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজু হুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়ূল আজীম “
اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۚ اَلۡحَیُّ الۡقَیُّوۡمُ ۬ۚ لَا تَاۡخُذُهٗ سِنَۃٌ وَّ لَا نَوۡمٌ ؕ لَهٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ مَنۡ ذَا الَّذِیۡ یَشۡفَعُ عِنۡدَهٗۤ اِلَّا بِاِذۡنِهٖ ؕ یَعۡلَمُ مَا بَیۡنَ اَیۡدِیۡهِمۡ وَ مَا خَلۡفَهُمۡ ۚ وَ لَا یُحِیۡطُوۡنَ بِشَیۡءٍ مِّنۡ عِلۡمِهٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ کُرۡسِیُّهُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ ۚ وَ لَا یَـُٔوۡدُهٗ حِفۡظُهُمَا ۚ وَ هُوَ الۡعَلِیُّ الۡعَظِیۡمُ
( সূরা বাক্বারাহ আয়াত- ২/২৫৫ )
অর্থ : আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। কোন তন্দ্রা বা নিদ্রা তাকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সবকিছু তারই মালিকানাধীন। তার হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে যে তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হ’তে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোর তত্ত্বাবধান তাকে মোটেও শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান।
( মিশকাত জাল হাদিস – ৯৭৪ )
১১। আল্লা-হুম্মাফিনী বেহালা-লেকা ‘আন হারা-মেকা ওয়া আগনিনী বিফাদলীকা ‘আম্মান সেওয়া-কা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হারাম ছাড়া হালাল দ্বারা যথেষ্ট করুন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে অন্যদের থেকে মুখাপেক্ষীহীন করুন! রাসূল (ছাঃ) বলেন, এই দো’আর ফলে পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকলেও আল্লাহ তার ঋণ মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন।
(তিরমিযী,মিশকাত হা/২৪৪৯)
১২। ” আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি।”
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
অর্থ : আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। আমি অনুতপ্ত হৃদয়ে তার দিকে ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি। এই দোয়া পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলাতক আসামী হয়।
( মিশকাত হাসান হাদিস – ২৪৪৯, তিরমিযী হাসান হাদিস – ৩৫৬৩ ই ফা বা )
১৩। ” রসূলুল্লাহ (ছাঃ) দৈনিক ১০০ করে বার তওবা করতেন ” । ” রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বে তাওবা করবে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। “
” আসতাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা-ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হা’ইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতুবু ইলাইহি।”
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ القَيّوُمُ وَأَتُوْبُ إِلَيهِ
অর্থ- আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ছাড়া ইবাদতের আর কোন যোগ্য উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। আমি তাঁর কাছে তওবা করছি।
( মিশকাত সহীহ হাদিস – ২৩২৫, মুসলিম সহীহ হাদিস- ৬৭৫৪ হাদিস একাডেমি/ ২৭০৩ আন্তঃ/৬৬১৫ ই ফা বা )
১৪। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রত্যেক সালাতের শেষে ” সূরা ফালাক ও সূরা নাস “ পড়ার নির্দেশ দিতেন।
( মিশকাত সহীহ হাদিস – ৯৬৯,আবূ দাঊদ সহীহ হাদিস- ১৫২৩ ই ফা বা )
১৫। তিনি প্রতি রাতে শুতে যাওয়ার সময় সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে দু’হাতে ফুক দিয়ে মাথা ও চেহারাসহ সাধ্যপক্ষে সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। তিনি এটি তিনবার করতেন।
( বুখারী সহীহ হাদিস – ৪৬৫২ ই ফা বা/ ৫০১৭ আন্তঃ মিশকাত সহীহ হাদিস – ২১৩২, আবূ দাঊদ সহীহ হাদিস- ৫০৫৬ তাহ্হিককৃত, তিরমিযী সহীহ হাদিস- ৩৪০২ ই ফা বা )
মুনাজাত–
মুনাজাত অর্থ পরস্পরে গোপনে কথা বলা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যখন সালাতে রত থাকে, তখন সে তার প্রভুর সাথে মুনাজাত করে অর্থাৎ গােপনে কথা বলে। (বুখারী (দিল্লী ছাপা) ১/৭৬ পৃঃ; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৭১০) তাই ছালাত কোন ধ্যান (Meditation) নয়, বরং আল্লাহর কাছে বান্দার সরাসরি ক্ষমা চাওয়া ও প্রার্থনা নিবেদনের নাম। দুনিয়ার কাউকে যা বলা যায় না, সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সাথে বান্দা তাই-ই বলে। আল্লাহ স্বীয় বান্দার চোখের ভাষা বোঝেন ও হৃদয়ের কান্না শুনেন।
মহান আল্লাহতায়ালা বলেন – ” আর তোমাদের রব বলেছেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহঙ্কার বশতঃ আমার ইবাদাত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”
( সূরা মুমিন আয়াত – ৬০ )
নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র / Table of Contents of Prayers …………..
বেশি বেশি শেয়ার করার অনুরোধ থাকলো।…………..
– যদি কোথায় ভুল হয়ে থাকে,দয়াকরে ক্ষমা করে দিবেন এবং আমার ওয়েবসাইটে কমেন্টস করে সঠিক তথ্যটি জানানোর জন্য অনুরোধ রইল ইনশাআল্লাহ।