Skip to content

সলাত বা নামাজ আদায়ের পদ্ধতি I Rules of namaz

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

 

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন – اِقۡرَاۡ بِاسۡمِ رَبِّکَ الَّذِیۡ خَلَقَ – পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।

Table of Contents

সলাত বা নামাজ আদায়ের পদ্ধতি ? Rules of namaz

সলাত বা নামাজর পদ্ধতি –

আসসালামু আলাইকুম, সম্পূর্ণ নামাজই আল্লাহর প্রশংসা।সালাত ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভ। তাই নামাজের প্রত্যেক রুকনে দোয়া, তাসবিহ, তাহলিলের মধ্যে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে চায়। এ সব দোয়া ও জিকির কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।

মহান আল্লাহ বলেন –

وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ قَبۡلِکَ اِلَّا رِجَالًا نُّوۡحِیۡۤ اِلَیۡهِمۡ فَسۡـَٔلُوۡۤا اَهۡلَ الذِّکۡرِ اِنۡ کُنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ

অর্থ – আর আমি তোমার পূর্বে কেবল পুরুষদেরকেই রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছি, যাদের প্রতি আমি ওহী পাঠিয়েছি। সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর, যদি তোমরা না জানো।

( সূরা নাহল আয়াত – ৪৩ )

মহান আল্লাহ বলেন –

قُلۡ هٰذِهٖ سَبِیۡلِیۡۤ اَدۡعُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ ۟ؔ عَلٰی بَصِیۡرَۃٍ اَنَا وَ مَنِ اتَّبَعَنِیۡ ؕ وَ سُبۡحٰنَ اللّٰهِ وَ مَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ

অর্থ – বল, ‘এটা আমার পথ। আমি জেনে-বুঝে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেই এবং যারা আমার অনুসরণ করেছে তারাও। আর আল্লাহ পবিত্র মহান এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’।

( সূরা ইউসুফ আয়াত – ১০৮ )

মহান আল্লাহ বলেন –

اُتۡلُ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ مِنَ الۡکِتٰبِ وَ اَقِمِ الصَّلٰوۃَ ؕ  اِنَّ الصَّلٰوۃَ تَنۡهٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَ الۡمُنۡکَرِ ؕ   وَ لَذِکۡرُ اللّٰهِ اَکۡبَرُ ؕ  وَ اللّٰهُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ

অর্থ – তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে তিলাওয়াত কর এবং সালাত কায়েম কর। নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর।

সূরা আন কাবুত আয়াত – ৪৫

মহান আল্লাহ বলেন –

فَوَیۡلٌ لِّلۡمُصَلِّیۡنَ   الَّذِیۡنَ هُمۡ عَنۡ صَلَاتِهِمۡ سَاهُوۡنَ   الَّذِیۡنَ هُمۡ یُرَآءُوۡنَ

অর্থ – অতএব দুর্ভোগ সে সব নামায আদায়কারীর ,যারা নিজেদের নামাযের ব্যাপারে উদাসীন, যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে

( সূরা মাউন  আয়াত – ৪-৬ )

মহান আল্লাহ বলেন –

لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰهِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰهَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَکَرَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا

অর্থ – অবশ্যই তোমাদের জন্য রসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য , যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।

( সূরা আল-আহযাব  আয়াত -২১ )

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

হাদিসের বাণী –

আবূ মা’মার (রহঃ) ….. আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ এ কথাটি তোমাদেরকে বহু হাদীস বর্ণনা করতে আমাকে বাধা দেয় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যা আরোপ করে সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ১০৯ ই ফা বা/ ১০৮ আন্তঃ )

হাদিসের বাণী :

আবূ মাস্’ঊদ আল আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত – রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি কাউকে কোন কল্যাণের দিকে পথপ্রদর্শন করে, সে উক্ত কার্য সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে।

( মিশকাত সহীহ হাদিস- ২০৯ মুসলিম সহীহ হাদিস- ৪৭৪৬ ই ফা বা/ ১৮৯৩ আন্তঃ )

 

তাহলে রাসূলুল্লাহ (স:) এর  সালাত  আদায়ের পদ্ধতি কেমন ছিল এ নিয়েই আমাদের এ ধারাবাহিক সংক্ষিপ্ত আলোচনা নিন্মে চিত্রসহ দেওয়া হল :

ওয়াক্ত হলে শুরুতেই নামায আদায় করা :

প্রত্যেক সালাত নির্ধারিত ওয়াক্তের মধ্যে আদায় করা। তবে আউয়াল ওয়াক্তে অর্থাৎ শুরুর সময়ে আদায় করা আল্লাহ তাআলার কাছে অধিকতর পছন্দনীয়। তাকওয়ার দাবি হলো আগে নামায, পরে কাজ। আগে কাজ, পরে নামায নয়।

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস- ৪২৬ ই ফা বা, তিরমিজী সহীহ হাদিস- ১৭০ ই ফা বা, মিশকাত সহীহ হাদিস- ৬০৭ ই ফা বা )

যারা কাজকর্মকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে নামায দেরিতে পড়াকে অভ্যাসে পরিণত করে তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَوَیۡلٌ لِّلۡمُصَلِّیۡنَ الَّذِیۡنَ هُمۡ عَنۡ صَلَاتِهِمۡ سَاهُوۡنَ

অর্থ – ” ঐসব নামাযীদের জন্য ওয়াইল বা ধ্বংস, যারা তাদের নামাযের ব্যাপারে গাফেল ” ।

( সূরা আল-মাউন (১০৭) আয়াত , ৪-৫)

আর গাফেল হলো ঐসব লোক, যারা পেছাতে পেছাতে নামায শেষ ওয়াক্তে পড়ে এবং হুকুম আহকাম গুলো ঠিকমতো আদায় করে না।

কিবলামুখী হওয়া –

পূর্ণ দেহসহ কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়ানো-

Facing the Qibla during namaz

Facing the Qibla during namaz

“নিশ্চয়ই আমি তোমার আকাশের দিকে মুখ ফিরিয়ে দেখাকে লক্ষ্য করেছি, যে ক্বিবলা তুমি পছন্দ কর, আমি তোমাকে সেদিকে ফিরে যেতে আদেশ করছি। তুমি মাসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, ওরই দিকে মুখ ফিরাও; বস্তুতঃ যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের জানা আছে যে, ক্বিবলার পরিবর্তন তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে প্রকৃতই সত্য এবং তারা যা করে আল্লাহ সে সম্পর্কে মোটেই গাফিল নন। “

( সূরা বাকারা আয়াত নং- ১৪৪ )

সালাত আদায়কারী সামনে কতটুকু পরিমাণ স্থান আড়াল (সুতরাহ নির্ধারণ) করবে-

সুতরা নির্ধারণ

সুতরা নির্ধারণ

আবূ যার (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায়, সে যেন হাওদার খুঁটির ন্যায় একটি কাঠি তার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। যদি সে তার সামনে হাওদার পিছনের খুঁটির ন্যায় একটি কাঠি দাঁড় না করায়- এমতাবস্থায় তার সামনে দিয়ে গাধা, মহিলা এবং কালো কুকুর চলাচল করলে তার সালাত নষ্ট হয়ে যাবে।

’আবদুল্লাহ ইবনু সীমিত (রাযিঃ) বলেন- আমি বললাম, হে আবূ যার (রাযিঃ) কালো কুকুরের কি অপরাধ, অথচ লাল ও হলুদ বর্ণের কুকুরও তা রয়েছে? তিনি বললেন, হে ভাতিজা! তুমি আমাকে যে প্রশ্ন করেছ, আমিও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে এ রকম প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি উত্তরে বলেছেনঃ কালো কুকুর হলো একটি শয়তান।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ১০২০ ই ফা বা  / ৫১০ আন্তঃ )

সালাত  বা  নামাযরত  ব্যক্তির বা মুসল্লী সম্মুখ দিয়ে গমন ?

ক। সালাত বা নামাযরত ব্যক্তির সম্মুখ দিয়ে অতিক্রমকারীকে মুসল্লীর বাধা দেয়া –

ইবনে উমর (রাঃ) তাশাহহুদে বসা অবস্থায় এবং কা’বাকেও (অতিক্রমকারীকে) বাধা দিয়েছেন এবং তিনি বলেন, সে অতিক্রম করা থেকে বিরত থাকতে অস্বীকার করে লড়তে চাইলে মুসল্লী তার সাথে লড়বে ………………।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৪৮৫ ই ফা বা )

খ।  সালাত বা নামাযরত ব্যক্তির বা মুসল্লী সম্মুখ দিয়ে গমন কারীর অপরাধ – 

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ….. বুসর ইবনু সা’ঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, যায়েদ ইবনু খালিদ (রাঃ) তাঁকে আবূ জুহায়ম (রাঃ) এর কাছে পাঠালেন, যেন তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন যে, মুসল্লীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী সম্পর্কে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কি শুনেছেন। তখন আবূ জুহায়ম (রাঃ) বললেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি মুসল্লীর সামনে অতিক্রমকারী জানতো এটা তার কত বড় অপরাধ, তাহলে সে মুসল্লীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করার চাইতে চল্লিশ দিন/মাস/বছর দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম মনে করতো। আবূন-নাযর (রহঃ) বলেনঃ আমার জানা নেই তিনি কি চল্লিশ দিন বা চল্লিশ মাস বা চল্লিশ বছর বলেছেন।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৪৮৬ ই ফা বা/ ৫১০ আন্তঃ)

সলাতে কাতার সোজা করা ?

কাতারে কাঁধের সাথে কাঁধ ও পায়ের সাথে পা মেলানো –

নামাজে কাতার সোজা করা

নামাজে কাতার সোজা করা

হাদিসের বাণী –

وَقَالَ النُّعْمَانُ بْنُ بَشِيرٍ رَأَيْتُ الرَّجُلَ مِنَّا يُلْزِقُ كَعْبَهُ بِكَعْبِ صَاحِبِهِ

নু’মান ইবন বশীর (রাঃ) বলেন, আমাদের কাউকে দেখছি পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির টাখনুর সাথে টাখনু মিলাতে।

আমর ইবনু খালিদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা তোমাদের কাতার সোজা করে নাও। কেননা, আমি আমার পেছনের দিক থেকেও তোমাদের দেখতে পাই। [আনাস (রাঃ) বলেন] আমাদের প্রত্যেকেই তার পাশ্ববর্তী ব্যাক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলাতাম।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৬৮৯  ই ফা বা /৭২৫ আন্তঃ, আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৬৬৬ ই ফা বা, মুসলিম সহীহ হাদিস – ৮৫৪ ই ফা বা / ৪৩১ আন্তঃ , ৮৫৯ ই ফা বা / ৪৩৩ আন্তঃ )

সলাতে কাতার সোজা করার পর ইকামত দিতে হয়  –

ইকামাত সম্পর্কে বিস্তারিত আজান এবং ইকামাত অধ্যায় দেখুন………………………………………………….।

সলাতের নিয়ত করা –

নিয়ত হচ্ছে একটি  আরবী  শব্দ। যার অর্থ হল মনস্থ, এরাদা, ইচ্ছা বা সংকল্প করা । আর ইচ্ছার স্থান হচ্ছে অন্তর। তা মুখে উচ্চারণ করার প্রয়োজন নেই।

( ফতহুল বারী- ১/১৭ )

প্রত্যেক ব্যক্তি তার কর্মের সফলতা পায় তার নিয়তের উপরে , সে যেমন নিয়ত করবে আল্লাহ-তায়ালার কাছে সে সে অনুযায়ী ফলাফল পাবে ।

আল্লাহ তাআলা বলেন-

قُلۡ اِنۡ تُخۡفُوۡا مَا فِیۡ صُدُوۡرِکُمۡ اَوۡ تُبۡدُوۡهُ یَعۡلَمۡهُ اللّٰهُ ؕ   وَ یَعۡلَمُ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ  وَ اللّٰهُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ

অর্থ – বল, ‘তোমরা যদি তোমাদের অন্তরসমূহে যা আছে তা গোপন কর অথবা প্রকাশ কর, আল্লাহ তা জানেন। আর আসমানসমূহে যা কিছু আছে ও যমীনে যা আছে, তাও তিনি জানেন। আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’।

( সূরা আল ইমরান – ২৯ )

 হাদিসের বাণী –

হুমায়দী (রহঃ) … আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, আমি উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে মিম্বরের ওপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ প্রত্যেক কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে দুনিয়া লাভের অথবা নারীকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে- সেই উদ্দেশ্যেই হবে তার হিজরতের প্রাপ্য।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ১ ই ফা বা,     মুসলিম সহীহ হাদিস – ৪৭৭৪ ই ফা বা/ ৪৮২১ হা এ /১৯০৭ আন্তঃ,    নাসাঈ সহীহ হাদিস – ৭৫ ই ফা বা ,      ইব্নে মাজাহ সহীহ হাদিস – ৪২২৭ ই ফা বা ,    তিরমিজী সহীহ হাদিস – ১৬৪৭ ই ফা বা,    আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ২২০১ তাহহিককৃত )

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

তাকবীর বলে হাত বাধা ?

নামাজে তাকবীর বলে হাত বাধা

নামাজে তাকবীর বলে হাত বাধা

ক।  সলাতে তাকবীর বলে সলাত শুরু করা ফরয –

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নামাযের চাবি হল পবিত্রতা, তার তাহরীম হল শুরুতে আল্লাহু আকবার বলা, তার তাহলীল হল (শেষে) সালাম বলা। যে ব্যক্তি আলহামদু লিল্লাহ ( সূরা ফাতিহা ) ও অন্য সূরা পাঠ করেনি তার নামায হয়নি, চাই তা ফরয নামায হোক বা সুন্নাত নামায।

( তিরমিজী সহীহ হাদিস – ২৩৮ তাহকীককৃত/ই ফা বা , ইব্নে মাজাহ সহীহ হাদিস – ২৭৬, বুখারী সহীহ হাদিস – ৬৯৬,৬৯৭,৬৯৮ ই ফা বা /৭৩২,৭৩৩,৭৩৪ আন্তঃ )

 

খ।  তাকবীর বলে উভয় হাত কতটুকু পর্যন্ত উঠাবে –

আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাকবীর দিয়ে সালাত (নামায) শুরু করতে দেখেছি, তিনি যখন তাকবীর বলতেন তখন তাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং কাঁধ বরাবর করতেন। আর যখন রুকূ’র তাকবীর বলতেন তখনও এরূপ করতেন। আবার যখন سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলতেন, তখনও এরূপ করতেন এবং رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ বলতেন। কিন্তু সিজদায় যেতে এরূপ করতেন না। আর সিজদার থেকে মাথা উঠাবার সময়ও এরূপ করতেন না।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭০২ ই ফা বা / ৭৩৮ আন্তঃ,   আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৭২৮ ই ফা বা )

 

গ। তাকবীর তাহরীমা বলার সময় হাতের আঙ্গুল সমুহ প্রসারিত করে রাখা-

আবদুল্লাহ ইবনু আবদির রহমান, উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদিল মাজীদ আল হানাফী, ইবনু আবী যির (রহঃ) এর সূত্রে আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে দাঁড়তেন তখন হাত দুটি প্রসারিত করে উপরে তুলতেন।

( সহিহ আবু দাউদ ৭৩৫, তিরমিজী হাদিস নম্বর- ২৪০ ই ফা বা )

নামাজের সময় হাত বাধা প্রসঙ্গে  ?

নামাজের সময় বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে বুকের উপর রাখা-

নামাজের সময় হাত বাধা প্রসঙ্গে

নামাজের সময় হাত বাধা প্রসঙ্গে

আবূ তাওবা ….. তাউস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযরত অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে তা নিজের বুকের উপর বেঁধে রাখতেন।

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৭৫৯ ই ফা বা )

 

তাকবীর বলে নাভির নিচে হাত বাধা –

সলাত আদায়ের সময় হাত কোথায় বাধবে এ নিয়ে আমাদের দেশে অনেক সময় তর্কবিতর্ক হয়ে থাকে যেমন – হাত নাভির নিচে বাধবে, না বুকের উপরে বাধবে।  অথচ দুটি পদ্ধতিই সহীহ হাদিসে বর্ণিত রয়েছে।  তারই ধারাবাহিকতায় নিন্মে কিছু সহীহ এবং যঈফ বর্ণনা দেওয়া হল :-

 

নাভির নিচে হাত বাধা প্রসঙ্গে কিছু সহীহ, যঈফ এবং  হাসান হাদিস –

ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রাখা কিছু ( সহীহ ) হাদিস  –

ক. সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত –

তিনি বলেন, লোকদের নির্দেশ দেওয়া হত যে, সালাতে প্রত্যেক ডান হাত বাম হাতের কবজির উপর রাখবে। আবূ হাযিম (রহঃ) বলেন, সাহল (রহঃ) এ হাদীসটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করতেন বলেই জানি। ইসমায়ীল (রহঃ) বলেন, এ হাদীসটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেই বর্ণনা করা হত। তবে তিনি এরূপ বলেন নি যে, সাহল (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করতেন।

( বুখারী সহীহ হাদিস- ৭০৪ ই ফ বা / ৭৪০ আন্তঃ)

 

খ. আল-হাসান ইবনু আলী আসেম থেকে এই সূত্রে উপরোক্ত হাদীছের অনুরূপ বর্ণিত-

রাবী বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় ডান হাত দ্বারা বাম হাতের কব্জি ও এর জোরে আকড়িয়ে ধরেন। রাবী বলেন, অতঃপর আমি কিছুদিন পর সেখানে গিয়ে দেখতে পাই যে, সাহাবায়ে কিরাম অত্যধিক শীতের কারণে শরীর আবৃত করে রেখেছেন। এবং তাদের হাতগুলো স্ব-স্ব কাপড়ের মধ্যে নড়াচড়া করছে।

( আবু দাউদ সহীহ হাদিস – ৭২৬, ৭২৭)

 

গ। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকদের নির্দেশ দেওয়া হত যে, সালাতে প্রত্যেক ডান হাত বাম হাতের কবজির উপর রাখবে। আবূ হাযিম (রহঃ) বলেন, সাহল (রহঃ) এ হাদীসটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করতেন বলেই জানি। ………………।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭০৪ ই ফা বা /৭৪০ আন্তঃ )

 

ঘ। আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, আমি আমার বাম হাত ডান হাতের উপর রেখেছিলাম। তিনি আমার ডান হাত ধরে বাম হাতের উপর রাখেন।

( ইবনে মাজাহ সহীহ হাদিস – ৮১১)

নাভির নিচে হাত বাধা প্রসঙ্গে কিছু ( যঈফ ) হাদিস –

ক। মুহাম্মাদ ইবনু মাহবূব ….. আবূ জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত-

তিনি বলেন, আলী (রাঃ) বলেন, নামাযে রত অবস্থায় নাভির নীচে বাম হাতের উপর ডান হাতের তালু রাখা সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত।

( আবু দাঊদ যঈফ হাদিস – ৭৫৬ ই ফা বা )

 

খ। মূসা’দ্দাদ ….. আবূ ওয়ায়েল থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, আমি নামাযে নাভির নীচে (বাম) হাতের উপর (ডান) হাত রাখি।

আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম আহমদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) ইসহাক আল-কূফীকে দুর্বল রাবী হিসাবে অভিহিত করতে শুনেছি।

( আবু দাঊদ যঈফ হাদিস – ৭৫৮ ই ফা বা )

 নোটঃ (আরও বিস্তারিত জানতে – “ জাল হাদিসের কবলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ছালাত ” , পৃষ্ঠা ২১৪  থেকে ২১৮ এই বই টি পড়ুন )

 

গ। কুতায়বা (রহঃ) …. কাবীসা ইবনু হুলব তাঁর পিতা হুলব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা – তিনি বলেন, নবী (সা:) যখন আমদের ইমামতি  করতেন তখন ডান হাত দিয়ে তাঁর বাম হাত ধারণ করতেন।

( তিরমিজী হাসান হাদিস নং-  ২৫২ ই ফ বা,   ইবনু মাজাহ হাসান হাদিস- ৮০৯ ,   মিশকাত হাসান হাদিস- ৮০৩ )

এই বিষয়ে ওয়াইল ইবনু হুজর, গুতায়ফ ইবনুল হারিছ, ইবনু আব্বাস, ইবনু মাসঊদ ও সাহল ইবনু সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকেও হাদিস বর্ণিত আছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ হুলব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদিসটি হাসান। সাহাবী, তাবিঈ ও পরবর্তীযুগের আলিমগণ এই হাদিস অনুসারেই আমল করেছেন। তাঁরা সালাতে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ উভয় হাত নাভির উপর স্থাপন করার আর কেউ কেউ নাভীর নীচে স্থাপন করার অভিমত দিয়েছেন। তবে আলিমগণের নিকট এই উভয় সুরতেরই অবকাশ রয়েছে। হুলব রাদিয়াল্লাহু আনহু এর নাম হল উয়াযীদ ইবনু কানাফা আত-তাঈ।

 

ইমাম কাউকে ডান হাতের উপর বাম হাত রাখতে দেখলে-

আমর ইবনু ’আলী (রহ.) ….. ইবনু মাস’উদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা.) আমাকে দেখলেন যে, আমি সালাতে ডান হাতের উপর বাম হাত রেখেছি। তিনি আমার ডান হাত ধরে তা বাম হাতের উপর রাখলেন।

( আন নাসাঈ যঈফ হাদিস – ৮৮৮ হা একা:/ ৮৮৯ আন্তঃ )

 

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাউকে ডান হাতের উপর বাম হাত রাখতে দেখলে-

মুহাম্মাদ ইবনু বাক্‌কার …. ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ডান হাতের উপর বাম হাত রেখে নামায পড়ছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখতে পেয়ে তাঁর বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে দেন।

( আবু দাঊদ হাসান হাদিস – ৭৫৫)

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

 

সলাতে কোমরে হাত রাখা নিষেদ –

কোমরে হাত রাখা নিষেদ

কোমরে হাত রাখা নিষেদ

আবূ নু’মান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সালাতে কোমরে হাত রাখা নিষেধ করা হয়েছে। হিশাম ও আবূ হিলাল (রহঃ) ইবনু সীরীন (রহঃ) এর মাধ্যমে আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ১১৪৬ ই ফা বা , ১২১৯ আন্তঃ, আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ৮৯৩ ই ফা বা )

 

সলাতে দাঁড়ানোর পর চোখের দৃষ্টি –

নামাজে ধরানোর পর চোখের দৃষ্টি

নামাজে ধরানোর পর চোখের দৃষ্টি

নামাজে এদিক ওদিক দৃষ্টিপাত করার ব্যাপারে কঠোরতা –

ক। সুওয়ায়দ ইবনু নাসর (রহঃ) … আবূ যর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, আল্লাহ তা’আলা বান্দার প্রতি তার সালাতে দণ্ডায়মান থাকাকালীন পর্যন্ত রহমতের দৃষ্টিপাত করতে থাকেন, যতক্ষন পর্যন্ত সে অন্য দিকে দৃষ্টিপাত না করে। যখন সে অন্য দিকে দূষ্টিপাত করে তখন আল্লাহ তাআলাও তার থেকে রহমতের দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন।

( আন-নাসাঈ হাদিস – ১১৯৮, ১১৯৯ ই ফা বা )

খ। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেছেন, নামাজের সময় দাঁড়ানো অবস্থায় দৃষ্টি সিজদার দিকে থাকবে, রুকু অবস্থায় থাকবে দুই পায়ের মাঝখানে, বসা অবস্থায় থাকবে কোলের দিকে, সিজদা অবস্থায় থাকবে নাকের দিকে।

( কিতাবুল মাবসুত- ১/২৮)

 

গ। সালাতে দাঁড়ানো ও রুকু অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (স.)-এর দৃষ্টি থাকত সিজদার স্থানে, আর বসার সময় তিনি ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুলের দিকে নজর রাখতেন  ।

( সুনানে নাসাঈ সহীহ হাদিস-  ১১৬০ তাহকীককৃত / ১১৬১ আন্তঃ )

 

ঘ। সালাত অবস্থায় বা নামাযে দু’আর সময় রাসূলুল্লাহ (স.) আকাশের দিকে তাকাতে নিষেধ করেছেন, অন্যথায় তাদের দৃষ্টি ছিনিয়ে নেওয়া হবে ।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ৮৫০ ই ফা বা / ৪২৮ আন্তঃ,  বুখারী সহীহ হাদিস – ৭১৪ ই ফা বা / ৭৫০ আন্তঃ )

 

ঙ। দাঁড়ানো ও রুকু অবস্থায় সিজদার জায়গায় দৃষ্টি রাখা।

( বায়হাকী ২/২৮৩ )

উল্লেখ্য, তাছাড়াও সামনে ইমামের দিকে তাকানো বা চোখ বন্ধ করে রাখাও বৈধ নয়।

 

সানা বা দোয়া বলা –

১। জায়নামাজে দাড়িয়ে দু’আ পাঠ করা –

জায়নামাজের দোয়া

জায়নামাজের দোয়া

ক। আমাদের সমাজে একটা কথা প্রচলিত আছে যে, জায়নামাজ পবিত্র করার একটা দোয়া রয়েছে। জায়নামাযের দু’আ বলতে শরীয়তে কোন দু’আ নেই , যদিও নিন্মোক্ত দোয়াটি আমাদের দেশে বেশ প্রচলিত-  সেই দু’আটি  নিচে দেওয়া হল –

اِنِّىْ وَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِىْ فَطَرَالسَّمَوَتِ وَاْلاَرْضَ حَنِيْفَاوَّمَااَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ

অর্থ – নিশ্চই আমি তাঁহার দিকে মুখ ফিরাইলাম, যিনি আসমান জমিন সৃষ্টি করিয়াছেন । আমি মুশরিকদিগের দলভুক্ত নহি ।

 

উপরুক্ত দু’আটির শরীয় কোন দলিল বা প্রমান নেই। যারা এই দু’আটির কথা উল্লেখ করেছেন তারা এর কোন প্রমাণ উল্লেখ করেননি।

কিন্তু এই ক.নং কোলামের দু’আটির বাকী অংশ গ. নং কোলামে আমি উল্লেখ করেছি এই দু’আটি রাসূল (সা:) তাকবিরে তাহরীমা বলে হাত বাধার পর কিরআত পড়ার পূর্বে বলতেন কিন্তু জায়নামাযে দাঁড়িয়েই জায়নামায পবিত্র করার জন্য বলতেন না।

 

খ। সাধারণত নামাজে দাঁড়ানোর পূর্বে মনে মনে ঐ ওয়াক্তের নামায বা সালাতের  নিয়ত করা বা সংকল্প করা , তারপর তাকবিরে তাহরীমা বলে হাত বাধা, তারপর রাসূল সাঃ শিখানো সেই দু’আটি  ( সানা ) পড়া যা বিভিন্ন সহীহ হাদিসে স্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত আছে। দু’আটি নিন্মে দলিলসহ দেওয়া হল –

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ

অর্থ – হে আল্লাহ, পবিত্রতা এবং প্রশংসা আপনারই; বরকতময় আপনার নাম; অতি উচ্চ আপনার মর্যাদা, আর কোন ইলাহ নেই আপনি ছাড়া।

অতঃপর তিনি তিনবার –  لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ  বলতেন এবং اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا  তিনবার বলার পর أَعُوذُ بِاللَّهِ السَّمِيعِ الْعَلِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ مِنْ هَمْزِهِ وَنَفْخِهِ وَنَفْثِهِ  এই দু’আটি বলতেন তারপর কিরাত পাঠ করতেন ।

 ( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৭৭৫,৭৭৬ ই ফা বা , ইব্নে মাজাহ সহীহ হাদিস – ৮০৪, তিরমিজী সহীহ হাদিস -২৪২, ২৪৩ )

 

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

 

গ।  তাকবিরে তাহরীমা বলে হাত বাধার পর কিরআত পড়ার পূর্বে, রাসূল সাঃ আরো এই  দু’আটিও  পড়তেন  যা বিভিন্ন সহীহ হাদিসে স্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত আছে। দু’আটি নিন্মে দলিলসহ দেওয়া হল –

وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ حَنِيْفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ إِنَّ صَلاَتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِيْ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا
مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ اللَّهُمَّ أَنْتَ الْمَلِكُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَنَا عَبْدُكَ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ وَاعْتَرَفْتُ
بِذَنْبِيْ فَاغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ جَمِيْعًا لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ وَاهْدِنِيْ لأَحْسَنِ الأَخْلاَقِ لاَ يَهْدِيْ لأَحْسَنِهَا إِلاَّ أَنْتَ وَاصْرِفْ عَنِّيْ سَيِّئَهَا لاَ يَصْرِفُ عَنِّيْ سَيِّئَهَا إِلاَّ أَنْتَ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ كُلُّهُ فِي يَدَيْكَ وَالشَّرُّ لَيْسَ إِلَيْكَ أَنَا بِكَ وَإِلَيْكَ تَبَارَكْتَ وَتَعَالَيْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ

অর্থ – আমি একনিষ্ঠভাবে তাঁর দিকে মুখ ফিরিয়েছি যিনি আকাশ মণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। নিশ্চয়ই আমার সালাত আমার ইবাদত (কুরবানী ও হজ্জ) আমার জীবন ও আমার মরণ জগত সমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই উদ্দেশ্যে। তার কোন শরীক নেই। আর এরই জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি মুসলিমদের অন্তর্গত। আল্লাহ, আপনি বাদশাহ, আপনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। আপনি আমার প্রভু আর আমি আপনার দাস। আমি নিজের উপর জুলুম করেছি এবং আমি আমার অপরাধ স্বীকার করছি- সূতরাং তুমি আমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করে দাও।

নিশ্চয়ই তুমি ব্যতীত আর কেউ অপরাধ সমুহ ক্ষমা করতে পারে না এবং চালিত কর আমাকে উত্তম চরিত্রের পথে। তুমি ব্যতীত অপর কেউ চালিত করতে পারে না উত্তম চরিত্রের পথে এবং দুরে রাখ আমা থেকে মন্দ আচরনকে- তুমি ব্যতীত আমা থেকে তা অপর কেউ দুরে রাখতে পারে না। আল্লাহ! হাজির আছি আমি তোমার নিকটে আর প্রস্তুত আছি তোমার আদেশ পালনে, কল্যাণ সমস্তই তোমার হাতে এবং কোনও অকল্যাণই তোমার প্রতি বর্তায় না। আমি তোমার সাহায্যেই প্রতিষ্ঠিত আছি এবং তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করছি। তুমি মঙ্গলময়, তুমি সুমহান। আমি তোমার নিকট ক্ষমা ভিক্ষা করছি এবং তোমার দিকে ফিরতেছি।

( আন নাসায়ী সহীহ হাদিস – ৯০০ ই ফা বা )

 

নোট : উপরে উল্লেখিত  ক. নাম্বার জায়নামাযের দুআর সাথে নিন্মে . নাম্বার দুআর লাল অংশের সাথে এই দোয়া টুক মিল রয়েছে, আমি জানিনা যেই ব্যাক্তি জায়নামাযের এই দুআ টুক  উল্লেখ করেছেন আমার মনে সে অল্প একটুক উল্লেখ করেছেন বাকিটা হয়তবা উল্লেখ করেননি , তবে সব চেয়ে ভালো হত যদি সে হাদিসের রেফারেন্স সহ উল্লেখ করত। এই টুক দুআ আমাদের দেশে কে বা কারা প্রচলন  করেছিলো তা আমি জানিনাতবে এই সাইটে এটি কথা হচ্ছিলো। 

                                                                                                                                                                                                                   

খ :১ .  ( বুখারী সহীহ হাদিস নং – ১ ই ফা বা , আন-নাসায়ি সহীহ হাদিস – ৭৫ ই ফা বা, মুসলিম সহীহ হাদিস নং – ৪৮২১ হা একাডেমি/১৯০৭ আন্তঃ )

 

নবী (সাঃ) তাকবীরে তাহরীমা ও কিরাআতের মধ্যে কি পড়তেন ?

মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীরে ও কিরাআতের মধ্যে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকতেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার মাতাপিতা আপনার উপর কুরবান হোক, তাকবীর ও কিরাআত এর মধ্যে চুপ থাকার সময় আপনি কী পাঠ করে থাকেন? তিনি বললেনঃ এ সময় আমি বলিঃ “ হে আল্লাহ্! আপনি মাশরিক ও মাগরিবের মধ্যে যেরূপ দুরত্ব সৃষ্টি করেছেন, আমার ও আমার ত্রুটি-বিচ্যুতির মধ্যে ঠিক তদ্রুপ দূরত্ব সৃষ্টি করে দিন। হে আল্লাহ! শুভ্র বস্ত্রকে যেরূপ নির্মল করা হয় আমাকেও সেরূপ পাক-সাফ করুন। আমার অপরাধসমূহ পানি, বরফ ও হিমশিলা দ্বারা বিধৌত করে দিন”

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭০৮ ই ফা বা /৭৪৪ আন্তঃ )

 

সূরা ফাতিহা বলা এবং সাথে অন্য একটি সূরা বলা –

সলাতে কুরআন পাঠের শুরুতেই ‘আউযুবিল্লাহ’ পাঠ করা –

মহান আল্লাহতায়ালা বলেন –

فَاِذَا قَرَاۡتَ الۡقُرۡاٰنَ فَاسۡتَعِذۡ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّیۡطٰنِ الرَّجِیۡمِ

অর্থ – ” তুমি যখনি কুরআন পাঠ করবে তখন অভিশপ্ত শয়ত্বান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইবে “।

যদিও সম্বোধন নবী (সাঃ)-কে করা হয়েছে; কিন্তু উদ্দেশ্য সকল উম্মত। অর্থাৎ কুরআন পাঠের পূর্বে  أَعُوذُْ بِاللّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ  পাঠ কর।

( সূরা নাহল আয়াত – ৯৮ )

নোটঃ  “ছানা ও আউযুবিল্লাহ ” পড়বে কেবল সালাতের প্রথম রাকআতে এবং চুপি চুপি বলবে ।

” বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ” পাঠ করা –

মুহাম্মদ ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দুল হাকাম (রহঃ) … নুয়ায়ম মুজমির (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর পেছনে সালাত আদায় করি। তিনি প্রথমে পড়লেন বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। এরপর সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন, যখন তিনি غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ এ পর্যন্ত পৌছলেন তখন ’আমীন, বললেন, তারপরে সকল লোক বলল,’আমীন’। যখনই তিনি সিজদা করতেন তখন বলতেন, ’আল্লাহু আকবার’ আর যখন তিনি বসা থেকে দাড়াতেন তখনও আল্লাহু আকবার বলতেন। তিনি সালাম বললেন, যার হাতে আমার প্রাণ, তার শপথ! আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মত সালাত আদায় করে তোমাদের দেখালাম।

( আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস- ৯০৮, ৯০৭ ই ফা বা )

সলাত  বা  নামাজে  বিসমিল্লাহ্‌ উচ্চস্বরে পাঠ না করা –

মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর, উমার ও উসমান (রাঃ) এর পেছনে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছি, কিন্তু তাঁদের কাউকে بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ সরবে পড়তে শুনিনি।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ৭৭৫,৭৭৬,৭৭৭,৭৭৮  ই ফা বা , ৩৯৯ আন্তঃ, আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস- ৯০৯, ৯১০ ই ফা বা )

 

নামাজে  ” আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন “- এর মাধ্যমে কিরাআত শুরু করা –

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন

وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنٰکَ سَبۡعًا مِّنَ الۡمَثَانِیۡ وَ الۡقُرۡاٰنَ الۡعَظِیۡمَ

অর্থ – অবশ্যই আমি তোমাকে দিয়েছি পুনঃ পুনঃ পঠিতব্য সাতটি আয়াত এবং মহা কুরআন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ানسبع مثاني ( পুনঃপুনঃ পঠিতব্য সাতটি আয়াত ) থেকে উদ্দেশ্য কি? এ সর্ম্পকে মুফাসসিরীনদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। এর উদ্দেশ্য সূরা ফাতেহা এটাই সঠিক। যেহেতু এটি সাত আয়াতবিশিষ্ট এবং তা প্রত্যেক নামাযে বার বার পাঠ করা হয়। (মাসানীর অর্থ একাধিকবার পড়া।) হাদীসেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। সুতরাং একটি হাদীসে নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ-লামীন। এটি সাবএ মাসানী ও কুরআন আযীম, যা আমাকে দেওয়া হয়েছে।’’ (বুখারীঃ তাফসীর সূরা হিজ্র) অন্য এক হাদীসে নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘উম্মুল কুরআনই হল সাবএ মাসানী ও কুরআনে আযীম।’’ (ঐ)  সূরা ফাতেহা কুরআনের একটি অংশ, সেই জন্য সাথে সাথে কুরআন আযীমের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

( সূরা আল-হিজর আয়াত : ৮৭ )

হাদিসের বর্ননায় –

ক।  আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ ولقد آتيناك سبعا من المثاني والقرآن العظيم ” আমি তো তোমাকে দিয়েছি সাত আয়াত যা পুনঃপুন আবৃত্ত হয় এবং দিয়েছি মহা কুরআন “।

মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ সাইদ ইবনু মুয়াল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পাশ দিয়ে গেলেন, তখন আমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম। তিনি আমাকে ডাক দিলেন, তখন আমি সালাত শেষ না করে আসিনি। এরপর আমি আসলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, আমার কাছে আসতে তোমাকে কিসে বাধা দিয়েছিল? আমি বললাম, আমি সালাত আদায় করছিলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলা কি একথা বলেননি, “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ এবং রাসুলের ডাকে সাড়া দাও”? তারপর তিনি বললেন, আমি মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগেই কি তোমাকে কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ সূরাটি শিখিয়ে দিবনা? তারপর যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ থেকে বের হতে লাগলেন , আমি তাঁকে সে কথা স্মরণ করিয়ে দিলাম। তিনি বললেন, সে সূরাটি হল, “আল হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন”। এটি হল পুনরাবৃত্ত সাতটি আয়াত এবং মহা কুরআন যা আমাকে দান করা হয়েছে।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৪৩৪৭, ৪৩৪৮ ই ফা বা / ৪৭০৩, ৪৭০৪ আন্তঃ)

 

নোটঃ উম্মুল কুরআন বলা হয় সুরা ফাতিহাকে। কুরআন শরীফের সকল বিষয়বস্তু এর মধ্যে সংক্ষেপে রয়েছে বলে উম্মুল কুরআন অর্থাৎ কুরআনের মা বলা হয়।

 

খ।  কুতায়বা (রহঃ) ….. আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর, উমর, উছমান রাদিয়াল্লাহু আনহু সকলেই আল -হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন থেকে কিরাআত শুরু করতেন।

( তিরমিজী  সহীহ  হাদিস নম্বর- ২৪৬  ই ফা বা ,   ইবনু মাজাহ সহীহ হাদিস – ৮১৩,    মুসলিম সহীহ হাদিস – ৭৭৭ ই ফা বা,     আবূ দাঊদ সহীহ হাদিস- ৭৮২ )

 

সূরা ফাতিহা  –

 

সূরা ফাতিহা পাঠের পর আমিন বলা-

স্বশব্দে আমিন বলা –

বুনদার (রহঃ) ……. ওয়াইল ইবনু হুজর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা কেনন যে, তিনি বলেন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ( غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ ) পাঠের পর ” আমীন “ বলতে শুনেছি। আর তিনি দীর্ঘস্বরে তা পাঠ করেছেন।

( তিরমিজী সহীহ হাদিস- ২৪৮ ই ফা বা ,    ইব্নে মাজাহ সহীহ হাদিস- ৮৫৫, নাসায়ী সহীহ হাদিস- ৯৩২ ই ফা বা ,  আবূ দাঊদ সহীহ হাদিস- ৯৩২ ই ফা বা ,   বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৪৬ ই ফা বা )

 

নিঃশব্দে আমিন বলা-

 

আমীন বলার ফযীলত –

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইমাম যখন ’আমীন’ বলেন, তখন তোমারও ’আমীন’ বলো। কেননা, যারা ’আমীন’ (বলা) ও ফিরিশতাদের ’আমীন’ (বলা) এক হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও ’আমীন’ বলতেন।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৪৪,৭৪৫,৭৪৬ ই ফা বা /৭৮০,৭৮১,৭৮২ আন্তঃ )

 

সূরা ফাতিহা পাঠ না করলে নামাজ অসম্পূর্ন হয় –

ক।  আল-কানবী ….. আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করে না তার নামায ক্রটিপূর্ণ, তার নামায ক্রটিপুর্ণ, তার নামায ক্রটিপূর্ণ, অসম্পূর্ণ ………………….. সংক্ষিপ্ত দেওয়া হলো  ।

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৮২১,৮২২,৮২৩,৮২৪ ই ফা বা )

 

খ।  আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সলাতে সূরা ফাতিহা পড়ল না তার সালাত (নামায/নামাজ) হল না।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭২০ ই ফা বা / ৭৫৬ আন্তঃ, অনুচ্ছেদ ৪৮৭  ই ফা বা )

 

গ। মুক্তাদির সুরা ফাতিহা মনে মনে পাঠ করা –

কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন সালাত আদায় করে আর তাতে সূরা ফাতিহা না পড়ে তা অসস্পূর্ণ, তা অসস্পূর্ণ, তা অসস্পূর্ণ, পূর্ণ হয় না। তখন আমি বললাম, হে আবূ হুরায়রা! আমি অনেক সময় ইমামের পেছনে সালাত আদায় করে থাকি, তিনি আমার বাহু টান দিয়ে বললেন, হে পারসিক (ইরানী); তুমি তা মনে মনে পড়বে। কেননা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে সালাত আধা আধি ভাগ করেছি। অতএব, এর অর্ধেক আমার জন্য আর অর্ধেক বান্দার জন্য। আর আমার বান্দার জন্য রয়েছে যা সে চায়।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা পড়। বান্দা যখন বলে, “আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন” তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল। আর যখন বান্দা বলে, “আর রহমানির রাহীম” তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমার বান্দা আমার স্তুতি বর্ণনা করল। আর বান্দা যখন বলে “মালিকি ইয়াওমিদ্দীন” তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করল। আর বান্দা যখন বলে, “ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্‌তায়ীন” তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, এই আয়াতটি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে। আর আমার বান্দার জন্য তা-ই রয়েছে, যা-সে চায়। বান্দা বলে, “ইহ্‌দিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম, সিরাতাল লাযীনা আন আমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ দ্বা-ল্লীন” (তখন আল্লাহ তায়ালা বলেন) এসবই আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দার জন্য রয়েছে যা সে চায়।

( আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস- ৯১২ ই ফা বা,  মুসলিম সহীহ হাদিস – ৭৬৪ ই ফা বা / ৩৯৫ আন্তঃ )

 

ঘ। ইমামের পেছনে মুকতাদীর জোরে কিরা’আত পাঠ নিষেধ –

আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) … কাতাদা (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে বললেন, আমি মনে করলাম তোমাদের কেউ এ নিয়ে আমার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছ।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ৭৭৪ ই ফা বা/ ৩৯৮ আন্তঃ)

 

ঙ। সুফইয়ান ইবনু ওয়াকী (রহঃ) …. আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন সালাতের চাবি হল তাহারাত। তাকবীর তাহরীমা (সালাতের পরিপন্থী) সকল কাজ হারাম করে দেয় আর সালাত তা হালাল করে। কেউ যদি সূরা ফতিহা ও একটি সূরা না পড়ে তবে তাঁর সালাত হয় না তা ফরয হোক বা অন্য কিছু।

( তিরমিজী সহীহ হাদিস – ২৩৮ ই ফা বা /তাহকীককৃত )

 

চ। কুরআন থেকে যা তোমার পক্ষে সহজ তা পড়বে –

মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করলেন, তখন একজন সাহাবী এসে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তারপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাম করলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, আবার গিয়ে সালাত আদায় কর। কেননা, তুমি তো সালাত আদায় করনি। তিনি ফিরে গিয়ে আগের মত সালাত আদায় করলেন। তারপর এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম করলেন। এভাবে তিনবার বললেনঃ ফিরে গিয়ে আবার সালাত আদায় কর। কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে তিনবার বললেন।

সাহাবী বললেন, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন- আমি তো এর চেয়ে সুন্দর করে সালাত আদায় করতে জানিনা। কাজেই আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ যখন তুমি সালাতের জন্য দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে। তারপর কুরআন থেকে যা তোমার পক্ষে সহজ তা পড়বে। তারপর রুকূ’তে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে আদায় করবে। তারপর সিজদা থেকে উঠে স্থির হয়ে বসবে। আর এভাবেই পূরো সালাত আদায় করবে।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭২১ ই ফা বা / ৭৫৭ আন্তঃ )

শেষ দুরাকাতে শুধু সূরা ফাতিহাহ্ পড়া –

মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ কাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের প্রথম দু’রাকাআতে সূরা ফাতিহা ও দু’টি সূরা পড়তেন এবং শেষ দু’রাকাআতে সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন এবং তিনি কোন কোন আয়াত আমাদের শোনাতেন, আর তিনি প্রথম রাকাআতে যতটুকু দীর্ঘ করতেন, দ্বিতীয় রাকাআতে ততটুকু দীর্ঘ করতেন না। এরূপ করতেন আসরে এবং ফজরেও।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৪০ ই ফা বা /৭৭৬ আন্তঃ)

 

সাকতা বা নীরব থাকা –

সূরা পাঠ শেষ হলে  রুকুতে যাওয়ার পূর্বে রাসূলুল্লাহ (স.) সামান্য পরিমাণ সময় চুপ থেকে দম নিতেন। অতঃপর রুকুতে যেতেন এবং রুকূতে যাওয়ার সময় আল্লাহু আকবার বলতেন।

( আবু দাউদ যঈফ হাদিস  : ৭৭৮ ই ফা বা  )

 

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

 

রুকুতে যাওয়ার পদ্ধতি –

রুকুতে যাওয়ার পদ্ধতি

রুকুতে যাওয়ার পদ্ধতি

তাকবীরে তাহরীমা, রুকুতে যাওয়া এবং রুকু থেকে উঠার সময় উভয় হাত উঠানো –

ক। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি, তিনি যখন সালাত (নামায)-এর জন্য দাঁড়াতেন তখন উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এবং যখন তিনি রুকু’র জন্য তাকবীর বলতেন তখনও এরূপ করতেন। আবার যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখনও এরূপ করতেন এবং سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলতেন। তবে সিজদার সময় এরুপ করতেন না।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭০০,৭০১ ই ফা বা /৭৩৬,৭৩৭ আন্তঃ,    আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ৮৮০, ৮৮১  ই ফা বা,    আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৭২১ ই ফা বা )

 

খ।  হাত উঠানোর সময় বৃদ্ধা আঙ্গুলি অবস্থান –

মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) … ওয়াইল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছেন, যখন তিনি সালাত আরম্ভ করতেন তখন তিনি তাঁর উভয় হাত উঠাতেন। তখন তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় তাঁর দু’কানের নিম্নভাগ ছোয় ছোয় অবস্থা হত ।

( আন-নাসাঈ যঈফ হাদিস – ৮৮৫ ই ফা বা )

প্রথম তাকবীর ফরয এবং ধীর স্থির ভাবে রুকু সিজদা করা –

মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করলে পরে এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল এবং সালাত আদায় করল। তারপর এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাম করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, ফিরে যাও, আবার সালাত আদায় কর (কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি) সে ব্যক্তি প্রত্যাবর্তন করে যেরূপ সালাত আদায় করেছিল সেরূপ সালাত আদায় করল। তারপর এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম করল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন ওয়া আলাইকাস সালাম। ফিরে যাও সালাত আদায় কর। কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি।

তিনি এরূপ তিনবার করলেন। তারপর সে ব্যক্তি বলল, ঐ সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন। আমি এর চেয়ে অধিক ভাল সালাত আদায় করতে জানি না। অতএব, আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেন- যখন সালাতে দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে, তারপর কুরআন থেকে যা তোমার পক্ষে সহজ হয় তা পড়বে। তারপর রুকু করবে ধীর-স্থিরভাবে। তারপর মাথা উঠাবে এবং সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর সিজদা করবে ধীর-স্থিরভাবে। তারপর মাথা উঠিয়ে ধীর-স্থিরভাবে বসে পড়বে। অতঃপর এভাবে তোমার সালাত শেষ করবে।

( আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস -৮৮৭ ই ফা বা )

 

দু’রাকাআত আদায় করে ( রাফ’উল ইয়াদান ) দু’হাত উঠানো –

রাফউল ইয়াদাইন করা

রাফউল ইয়াদাইন করা

আইয়্যাশ (রহঃ) … নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) যখন সালাত (নামায) শুরু করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং দু’হাত উঠাতেন আর যখন রুকূ করতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন। এরপর যখন سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ‏ বলতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন এবং দু’রাকাআত আদায়ের পর যখন দাঁড়াতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন। এ সমস্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত বলে ইবনু উমর (রাঃ) বলেছেন।

এ হাদীসটি হাম্মাদ ইবনু সালামা ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। ইবনু তাহমান, আইউন ও মূসা ইবনু উকবা (রহঃ) থেকে এ হাদীসটি সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭০০,৭০৩ ই ফা বা / ৭৩৬,৭৩৯ আন্তঃ, মুসলিম সহীহ হাদিস- ৭৪৭, ৭৫০ ই ফা বা / ৩৯০, ৩৯১ আন্তঃ, আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৭৬১ ই ফা বা)

 

একবার রাফউল ইয়াদান করা প্রসঙ্গে –

ক। মাহমুদ ইবনু গায়লান মারওয়াযী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাতের ন্যায় সালাত আদায় করব না? এরপর তিনি সালাত আদায় করলেন- তখন তিনি একবারের অধিক হাত উঠান নি।

( আন- নাসাঈ সহীহ হাদিস – ১০৬১ ই ফা বা,   আবুদাঊদ সহীহ হাদিস -৭৪৮ ই ফা বা,    তিরমিজী সহীহ হাদিস – ২৫৭ ই ফা বা )

 

খ। মুহাম্মাদ ইবনুস- সাব্বাহ আল-বাযযার ….. বারাআ ইবনু আযেব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নামায আরম্ভের সময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেবলমাত্র একবার কানের নিকট পর্যন্ত হাত উঠাতেন। অতঃপর তিনি আর হাত উঠাতেন না।

( আবু দাঊদ যঈফ হাদিস – ৭৫০ ই ফা বা )

 

রাফ’উল ইয়াদান –

রাসূলুল্লাহ (স.) তাঁর নামাযে ‘রাফউল ইয়াদাইন’ করতেন- এ মর্মে ৩৩টির মতো সহীহ হাদীস রয়েছে। তাছাড়াও ইমাম বুখারী (র.) তাঁর সংকলিত ‘জুযউ রাফয়িল ইয়াদাইন’ গ্রন্থে এর পক্ষে সহীহ ও যঈফ মিলিয়ে মোট ১৯৮টি হাদীস জমা করেছেন। এই গ্রন্থটি  সবাই পড়ার চেষ্ঠা করবেন তাহলে আপনার সন্দেহ দূর হবে ইনশাআল্লাহ ।

উল্লেখ্য যে, যারা রাফউল ইয়াদাইন করে না তাদের পক্ষেও দলীল আছে। তবে এর সংখ্যা সীমিত । পক্ষান্তরে ‘রাফউল ইয়াদাইনের পক্ষের হাদীসের সংখ্যা দুইশতেরও বেশি।

 

প্রসিদ্ধ চার ইমামের বক্তব্য দেখে আসুন – 

 

রুকু করার পদ্ধতি –

ক।  রুকুতে হাত হাঁটুর উপর রাখা –

রুকু করার পদ্ধতি

রুকু করার পদ্ধতি

রুকুতে রাসূলুল্লাহ (স.) হাঁটুতে হাত রাখতেন এবং তাঁর পিঠ সোজা রাখতেন। ওয়াবিসা ইবনু মাবাদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাত আদায় করতে দেখেছি। তিনি যখন রুকূ করতেন তখন তাঁর পিঠ এমনভাবে সোজা করতেন যে, তার উপর পানি ঢাললে অবশ্যই সেই পানি স্থির থাকতো।

( ইবনে মাজাহ সহীহ হাদিস – ৮৭২,   বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৫৪  ই ফা বা /৭৯০ আন্তঃ,   আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৭৩১ ই ফা বা )

 

খ। রুকু’তে পিঠ সোজা রাখা –

৫১১. অনুচ্ছেদঃ রুকূ’তে পিঠ সোজা রাখা। আবূ হুমাইদ (রা.) তাঁর সঙ্গীদের সামনে বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ’ করতেন এবং রুকূ’তে পিঠ সোজা রাখতেন।

বাদাল ইবনু মুহাব্বার (রহঃ) … বারা’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সালাতে দাঁড়ানো ও বসা অবস্থা ব্যতীত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রুকূ’ সিজদা এবং দু’ সিজদার মধ্যবর্তী সময় এবং রুকূ’ থেকে উঠে দাঁড়ানো, এগুলো প্রায় সমপরিমাণ ছিল।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৫৬ ই ফা বা / ৭৯২ আন্তঃ )

  

রুকুতে এবং সিজদার তাসবীহ সমূহ –

মাহমূদ ইবনু গায়লান (রহঃ) …. হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সালাত পড়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূতে ” সুবহানা রাব্বিআল আযীম “ এবং সিজদায়  ” সুবহানা রাব্বিআল আলা “ পাঠ করতেন। রহমতের আয়াত তিলাওয়াত করলে থামতেন এবং রহমতের দুআ করতেন। আযাবের আয়াত তিলাওয়াত করলে থামতেন এবং তা থেকে পানাহ চাইতেন।

 

( তিরমিজী সহীহ হাদিস – ২৬২ ই ফা বা,  মিশকাত সহীহ হাদিস – ৮৮১,  আবূ দাঊদ সহীহ হাদিস- ৮৭১ ই ফা বা,  ইবনু মাজাহ্ সহীহ হাদিস – ৮৮৮  )

 

রুকুতে দৃষ্টি স্থানে –

রুকুতে দৃষ্টি স্থানে

রুকুতে দৃষ্টি স্থানে

 

ক।   তাশাহহুদ ব্যতীত সলাতে অন্য সময়ে দৃষ্টি সিজদার স্থানে রাখবে। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) যখন কা‘বা ঘরে ঢুকে ছালাত আদায় করলেন, তখন তাঁর দৃষ্টি ছালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত সিজদার স্থান থেকে সরেনি ।

( হাকেম হা/১৭৬১, ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৩০১২, ছিফাতু ছালাতিন নবী (ছাঃ) ১/৬৯)

 

খ। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র এবং ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) শব্দ ইসহাকের … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, রাসূল (ছাঃ) যখন রুকূ করতেন, মাথা উপরেও করতেন না এবং নীচুও করতেন না। বরং তার মাঝামাঝি রাখতেন

( মুসলিম সহীহ হাদিস –  ৯৯৩  ই ফা বা/৪৯৮ আন্তঃ ,   মিশকাত সহীহ হাদিস- ৭৯১ )

 

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

 

গ।  ইমাম আবু হানিফা রহ. বলেছেন, নামাজের সময় দাঁড়ানো অবস্থায় দৃষ্টি সিজদার দিকে থাকবে, রুকু অবস্থায় থাকবে দু’পায়ের মাঝখানে, বসা অবস্থায় থাকবে কোলের দিকে, সিজদা অবস্থায় থাকবে নাকের দিকে।

( কিতাবুল মাবসূত ১/২৮, আদ-দুররুল মুখতার : ০২/১৭৫ )

কেননা, لِأَنَّ امْتِدَادَ الْبَصَرِ يُلْهِي فَإِذَا قَصَرَهُ كَانَ أَوْلَى  দৃষ্টি প্রসারিত করলে মন এদিক-সেদিক চলে যাবে। সংকুচিত করলে নামাজে মনোযোগটা আরও ভাল থাকবে। এজন্য প্রসারিত করার চেয়ে সংকুচিত করা উত্তম।

( উত্তর দিয়েছেন- শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী )

 

রুকু করা এবং রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো –

রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো

রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো

সলাতের মধ্যে প্রত্যেক নিচু ( রুকু ) এবং উঁচু হবার সময় الله اكبر বলা, তবে রুকু থেকে  মাথা উঠার সময় বলবে  سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

কুতায়বা ইবনু সাঈদ এর সুত্রে সুহায়ল-এর পিতা থেকে বর্ণিত যে, আবূ হুরায়রা (রাঃ) প্রত্যেকবার নিচু এবং উঁচু হবার সময় তাকবীর বলতেন এবং বর্ণনা করতেন যে, রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করতেন।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ৭৫৮ ই ফা বা /৩৯২ আন্তঃ )

 

রুকূ’তে দু’আ পাঠ করা –

হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ’ ও সিজদায় এ দু’আ পড়তেন سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي  হে আমাদের রব আল্লাহ্! আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং আপনার প্রশংসা করছি। হে আল্লাহ্! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৫৮ ই ফা বা / ৭৯৪ আন্তঃ )

 

নিন্মোক্ত দোয়াটিও পাঠ করতেন –

” সুবহানা যিলজাবারূতি ওয়াল মালাকুতি ওয়াল কিবরিয়া-ই ওয়াল আযমাতি ”

” হে দুর্দান্ত প্রতাপশালী, রাজত্ব, অহংকার ও বড়ত্বের মালিক আল্লাহ! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি ”

سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস -৮৭৩ ই ফা বা )

রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো-

আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলে ( রুকূ’ থেকে উঠতেন ) তখন اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ বলতেন, আর তিনি যখন রুকূ’তে যেতেন এবং রুকূ’থেকে মাথা উঠাতেন, তখন তাকবীর বলতেন এবং উভয় সিজদা থেকে যখন দাঁড়াতেন, তখন اللَّهُ أَكْبَرُ  বলতেন।

 ( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৫৯ ই ফা বা / ৭৯৫ আন্তঃ )

 

যদি কেউ সঠিকভাবে রুকু  না করে, তাহলে তার সলাত বা নামাজ আদায় হবে না –

হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … যায়িদ ইবনু ওয়াহব (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযাইফা (রাঃ) এক ব্যাক্তিকে দেখলেন যে, সে রুকূ’ ও সিজদা ঠিকমত আদায় করছে না। তিনি তাকে বললেন, তোমার সালাত (নামায/নামাজ) হয়নি। যদি তুমি (এই অবস্থায়) মারা যাও, তাহলে আল্লাহ্ কর্তৃক মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রদত্ত আদর্শ হতে বিচ্যুত অবস্থায় তুমি মারা যাবে।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৫৫,৭৫৭ ই ফা বা /৭৯১,৭৯৩ আন্তঃ )

 

অন্য আরেক হাদিসে বর্ণিত আছে –

বিশিষ্ট সাহাবী হুযাইফা (রা.) একবার দেখলেন যে, এক ব্যক্তি তার সালাতে রুকু সিজদা ঠিকমত আদায় করছে না। তখন তাকে তিনি বললেন, যদি তুমি এভাবে সালাত আদায় করতে থাক আর এ অবস্থায় তোমার মৃত্যু হয়, তাহলে সে মৃত্যু হবে মুহাম্মদ (স.)-এর তরীকার বাহিরে ।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৩৮২ ই ফা বা/ ৩৮৯ আন্তঃ )

 

কাওমার সময় বা রুকু থেকে ওঠার পর সোজা হয়ে (স্থিরভাবে) দাঁড়িয়ে থাকা  –

রুকূ’তে পিঠ সোজা রাখা। আবূ হুমাইদ (রা.) তাঁর সঙ্গীদের সামনে বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ’ করতেন এবং রুকূ’তে পিঠ সোজা রাখতেন।

বাদাল ইবনু মুহাব্বার (রহঃ) … বারা’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সালাতে দাঁড়ানো ও বসা অবস্থা ব্যতীত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রুকূ’ সিজদা এবং দু’ সিজদার মধ্যবর্তী সময় এবং রুকূ’ থেকে উঠে দাঁড়ানো, এগুলো প্রায় সমপরিমাণ সময় ছিল।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৫৬ ই ফা বা/ ৭৯২ আন্তঃ )

 

‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ-এর ফযীলত –

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইমাম যখন سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলেন, তখন তোমরা اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ  বলবে। কেননা, যার এ উক্তি ফিরিশতাগণের সঙ্গে একই সময়ে উচ্চারিত হয়, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৬০ ই ফা বা / ৭৯৬ আন্তঃ)

 

রুকু থেকে উঠার পর দোয়া –

রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিন্মে এই দোয়া গুলো পাঠ করতেন –

ক। এই দোয়াটি পড়তেন –  رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ

উচ্চারণ – ” রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ ”

অর্থাৎ হে আল্লাহ! যাবতীয় প্রশংসা তোমারই।

( তিরমিজী সহীহ হাদিস – ২৬৭ ই ফা বা,  আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৮৩৬ ই ফা বা )

 

খ।  অতপর তিনি বলতেন- اَللّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْد-

উচ্চারণ- ” আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ  । ”

অর্থাৎ হে আল্লাহ! যাবতীয় প্রশংসা তোমারই।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৫৯ ই ফা বা , ৭৯৫ আন্তঃ )

 

গ।  এই দোয়াটিও বলতেন –

رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ، حَمْداً كَثيراً طَيِّباً مُبارَكاً فِيهِ

উচ্চারণ : ” রব্বানা ওয়া লাকাল হামদু, হামদান কাছিরান ত্বায়্যিবান মুবা-রাকান ফিহ। “

অর্থ :  হে আমাদের প্রতিপালক! আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা; অঢেল, পবিত্র ও বরকত-রয়েছে-এমন প্রশংসা।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৬৩ ই ফা বা , ৭৯৯ আন্তঃ)

 

নোটঃ উল্লেখ্য যে, রাব্বানা লাকাল হামদটি চারভাবে বলা সহীহ হাদীস দ্বারা সুপ্রমাণিত। যথা:

ক. রব্বানা লাকাল হামদ।

খ. আল্লহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ।

গ. রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ।

ঘ. আল্লহুম্মা রব্বা ওয়া লাকাল হামদ আল্লহু আলাম।

সংগৃহীত – উত্তর প্রদানে :

আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী

 

সলাত বা নামাজে সিজদায় যাওয়ার পদ্ধতি –

নামাজে সিজদায় যাওয়ার পদ্ধতি

নামাজে সিজদায় যাওয়ার পদ্ধতি

 

ক।  সিজদার সময় হাঁটু রাখার পূর্বে  হাত রাখতেন  –

সাঈদ ইবনু মানসূর …… আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা সিজদা করার সময় উটের ন্যায় বসবে না এবং সিজদায় যেতে মাটিতে হাঁটু রাখার পূর্বে হাত রাখবে।

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৮৪০ ই ফা বা,  আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ১০৯৪   ই ফা বা,  বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৬৭ ই ফা বা পরিচ্ছেদ -৫১৯ )

 

খ।  সিজদার সময় হাত রাখার পূর্বে হাঁটু রাখতেন –

আল-হাসান ইবনু আলী ….. ওয়ায়েল ইবনু হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নামায পড়াকালে সিজদায় যাওয়ার সময় ( মাটিতে ) হাতের পূর্বে হাঁটু রাখতে দেখেছি। তিনি সিজদা হতে দাঁড়াবার সময় হাঁটুর পূর্বে হাত উঠাতেন।

( আবু দাঊদ যঈফ হাদিস – ৮৩৮, ৮৩৯  ই ফা বা , আন -নাসাঈ যঈফ হাদিস – ১০৯২ ই ফা বা )

 

সিজদায় যাওয়ার সময়, সিজদা থেকে মাথা তুলার সময় এবং সিজদা থেকে দাঁড়ানোর সময় তাকবীর বলা –

ইয়াহইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) আরম্ভ করার সময় দাঁড়িয়ে তাকবীর বলতেন। এরপর রুকূ’তে যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন, আবার যখন রুকূ’ থেকে পিঠ সোজা করে উঠতেন তখন سَمِعَ اللَّهُ لَمِنْ حَمِدَهُ‏ বলতেন, তারপর দাঁড়িয়ে رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ বলতেন। এরপর সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন। এবং যখন মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলতেন। আবার (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতে তাকবীর বলতেন এবং পুনরায় মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলতেন। এভাবেই পুরো সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করতেন। আর দ্বিতীয় রাকাআতের বৈঠক শেষে যখন (তৃতীয় রাকাআতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও তাকবীর বলতেন।

আবদুল্লাহ সালিহ্ (রহঃ) লাইস (রহঃ) সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করতে وَلَكَ الْحَمْدُ উল্লেখ করেছেন।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৪৯,৭৫০,৭৫১,৭৫৩ ই ফা বা /৭৮৫,৭৮৬,৭৮৭,৭৮৯ আন্তঃ,        আবু দাঊদ সহীহ হাদিস -৮৩৫, ৮৩৬, ৮৩৭ ই ফা বা )

 

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

 

সলাত বা নামাজে সাত অঙ্গ দ্বারা সিজদা করার পদ্ধতি –

সাত অঙ্গ দ্বারা সিজদা করা

সাত অঙ্গ দ্বারা সিজদা করা

 

কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রহঃ) …. আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, যখন কোন বান্দা আল্লাহকে সিজদা করে, তখন তার সাথে তার শরীরের সাতটি অংগ প্রত্যঙ্গও সিজদা করে। যেমন- তার মুখমণ্ডল, দুই হাতের তালু, দুই হাটুঁ এবং দুই পা।

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৮৯২, ৮৯৪, ৯১১  ই ফা বা ,       বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৭৫ ই ফা বা /৮১২ আন্তঃ,         আন নাসাঈ সহীহ হাদিস  – ১১০১,১১০২  ই ফা বা )

 

সিজদায় দুই হাত বিছিয়ে না দেওয়া –

সিজদায় দুই হাত বিছিয়ে না দেওয়া

সিজদায় দুই হাত বিছিয়ে না দেওয়া

মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সিজদায় (অঙ্গ প্রত্যঙ্গের) সামঞ্জস্য রক্ষা কর এবং তোমাদের মধ্যে কেউ যেন দু’হাত বিছিয়ে না দেয় যেমন কুকুর বিছিয়ে দেয়।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৮৪, ৭৯০ ই ফা বা /৮২২, ৮২৮ আন্তঃ, আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৮৯৭ ই ফা বা, মুসলিম, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ )

 

সিজদায় পিঠ সোজা রাখা-

সিজদায় পিঠ সোজা রাখা

সিজদায় পিঠ সোজা রাখা

আলী ইবনু খাশরাম মারওয়াযী (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ সালাত পূর্ণ হয়না, যে সালাতে কোন ব্যাক্তি রুকু ও সিজদায় পিঠ সোজা রাখে না।

( আন নাসাঈ সহীহ হাদিস  -১১১৪ ই ফা বা, ইব্ন মাজাহ সহীহ হাদিস -৮৭০ ই ফা বা, তিরমিজী সহীহ হাদিস – ২৬৫ ই ফা বা )

 

সিজদায় দুই হাতের কনুই, পেট এবং মাজা বা পাঁজর থেকে ফাঁকা রাখা –

ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) … মায়মূনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদা করতেন তখন কোন মেশ শাবক ইচ্ছা করলে তাঁর দুহাতের মধ্য দিয়ে চলে যেতে পারত।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ৯৯০ ই ফা বা /৪৯৬ আন্তঃ, আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৮৯৮, ৯০০, ৯০১ ই ফা বা )

 

নোটঃ তাছাড়া দুই উরুর মাঝখানে একটু ফাঁকা থাকবে। পুরুষ ও মহিলা উভয়েই এই একই পদ্ধতিতে রাসূলুল্লাহ (স.)-এর মতো সিজদা করবে। মেয়েদের আলাদা পদ্ধতিতে সিজদা করার কোন কথা হাদীসে নেই। মেয়েদের কেউ কেউ হাত ও কনুই পর্যন্ত বাহু জমিনে বিছিয়ে বিছানার সাথে একেবারে মিশে গিয়ে সিজদা করে। অথচ এমনভাবে সিজদা করতে আল্লাহর রাসূল (স.) নিষেধ করেছেন। সিজদা করার এ পদ্ধতিকে রাসূলুল্লাহ (স.) কুকুরের বসার সাথে তুলনা করেছেন। আনাস বিন মালেক (রা) বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন,

” সিজদার সময় তোমাদের কেউই যেন দুই বাহু বিছিয়ে না দেয়, যেমনভাবে বিছিয়ে দেয় কুকুর। “

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৮৪, ৭৯০ ই ফা বা /৮২২, ৮২৮ আন্তঃ, আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৮৯৭ ই ফা বা, মুসলিম, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ )

 

সিজদায় হাতের স্থান-

সিজদায় হাতের স্থান

সিজদায় হাতের স্থান

আহমদ ইবনু নাসিহ (রহঃ) … ওয়ায়িল ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মদীনায় আগমন করে বললাম, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাত প্রত্যক্ষ করবো। তারপর তাকবীর বললেন এবং সিজদা করলেন। তখন তাঁর হাতদ্বয় কানের ঐ স্থানে ছিলো, যেখানে সালাত আরম্ভ করার সময়  ( সংক্ষিপ্ত )

( আন নাসাঈ সহীহ হাদিস  -১১০৫  ই ফা বা )

 

সলাতে সিজদারত অবস্থায় দু’পা কিভাবে রাখতে হবে –

সিজদায় দুই পা রাখার পদ্ধতি

সিজদায় দুই পা রাখার পদ্ধতি

ক।  সলাতে সিজদারত অবস্থায় দু’পা  খাড়া করে রাখা –

আবূ বকর ইবনু আবূ শায়রা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বিছানায় না পেয়ে (অন্ধকারে) হাতড়াতে লাগলাম। হঠাৎ আমার হাত খানি তাঁর পায়ের তালুতে গিয়ে লাগল। তিনি সিজদারত আছেন, পা দু-খানি খাড়া রয়েছে। তিনি বলছিলেনঃ “ হে আল্লাহ! আমি তোমার অসন্তোষ থেকে তোমার সন্তোষের মাধ্যমে এবং তোমার আযাব হতে তোমার ক্ষমার মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এবং আমি তোমার (শাস্তি) হতে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি তোমার প্রশংসা করে শেষ করতে সক্ষম নই। তুমি তেমনই যেমন তুমি নিজে তোমার প্রশংসা করেছ”।

( মুসলিম সহীহ হাদিস- ৯৭৪ ই ফা বা /৪৮৬ আন্তঃ,      ইবনে মাজাহ সহীহ হাদিস- ৩৮৪১,    আবূ দাউদ সহীহ হাদিস- ৮৭৯,   মিশকাত সহীহ হাদিস – ৮৯৩)

 

খ।  পূর্ণভাবে সিজদা না করলে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরীকা থেকে বিচ্যুত হয়ে মারা যাবে –

৫২২. অনুচ্ছেদঃ সালাতে উভয় পায়ের আঙ্গুল কিবলামুখী রাখা । আবূ হুমাইদ (রা.) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

সালত ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,…..

আবূ ওয়াইল (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয়, তিনি এও বলেছিলেন যে, এভাবে সালাত আদায় করে তুমি যদি মারা যাও, তাহলে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরীকা থেকে বিচ্যুত হয়ে মারা যাবে। (সংক্ষিপ্ত)

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৭১ ই ফা বা/৮০৮ আন্তঃ,     আন নাসাঈ সহীহ হাদিস  -১১০৪, ১১০৩  ই ফা বা  )

 

গ।  নবী (স.) হাতের আঙুলগুলো সোজা করে নরমভাবে কিবলামুখী করে রাখতেন। দুই পায়ের গোড়ালি একত্রে ভালোভাবে মিলিয়ে রাখতেন। (সংক্ষিপ্ত)

( সহীহ ইবনে খুযাইমা: ৬৫৪ )

 

মুক্তাদিগন কখন সিজদায় যাবেন ?

আনাস (রাঃ) বলেন, যখন ইমাম সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে।

মুসাদ্দাদ (রহঃ) … বারা’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি মিথ্যাবাদী নন* তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলার পর যতক্ষণ পর্যন্ত সিজদায় না যেতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ পিঠ বাঁকা করতেন না। তিনি সিজদায় যাওয়ার পর আমরা সিজদায় যেতাম।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৬৫৬ ই ফা বা/৬৯০ আন্তঃ )

 

সলাতের মধ্যে সিজ্‌দার স্থান থেকে কংকর সরানো –

আবূ নু’আইম (রহঃ) … মু’আইকীব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে ব্যাক্তি সম্পর্কে বলেছেন, যে সিজ্‌দার স্থান থেকে মাটি সমান করে। তিনি বলেন, যদি তোমার একান্তই করতে হয়, তা হলে একবার।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ১১৩৪ ই ফা বা,      আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ১২৬৯ ই ফা বা  )

 

ইমামের আগে মাথা উঠানো গুনাহ –

ইমামের আগেই কখনও রুকু বা সিজদা থেকে মাথা তুলা যাবে না ,ইমাম সাহেব তাগবীর বলে যখন মাথা তুলবে তখন মুছুল্লীরা মাথা জাগাবে।

নিন্মে সহীহ হাদিসের বর্ণনা উল্লেখ করা হল –

হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের আগে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ তা’লা তাঁর মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, তাঁর আকৃতি গাধার আকৃতি করে দেবেন।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৬৫৮ ই ফা বা/৬৯১ আন্তঃ )

 

সিজদাহ করা এবং সিজদায় তাসবীহ পাঠ করা –

সালাতে সিজদার তাসবীহ এবং দোয়া –

ক। সিজদার তাসবীহ: সিজদায় রাসূল (স) নিমের তাসবীহটি পড়েছেন, সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা سُبحانَ ربِّيَ الأعلَى

অর্থ –  “ আমি আমার সুউচ্চ মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।”

 ( তিরমিজী সহীহ হাদিস – ২৬২ ই ফা বা, মিশকাত সহীহ হাদিস – ৮৮১, আবূ দাঊদ ৮৭১ ই ফা বা, ইবনু মাজাহ্ সহীহ হাদিস – ৮৮৮  )

 

খ। মূসা’দ্দাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রুকূ’ ও সিজদায় অধিক পরিমাণে سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي “হে আল্লাহ্! হে আমাদের রব! আপনার প্রশংসা সহ প্রবিত্রতা ঘোষণা করছি। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন” পাঠ করতেন। এতে তিনি পবিত্র কুরআনের নির্দেশ পালন করতেন।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৮০ ই ফা বা / ৮১৭ আন্তঃ)

গ।  আবূ তাহির ও ইউনূস ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদায় (এ দু’আটি) পড়তেনঃ

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ وَعَلاَنِيَتَهُ وَسِرَّهُ

(হে আল্লাহ! আমার সকল গুনাহ মাফ করে দিন। সল্প এবং অধিক, প্রথম এবং শেষ, প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য।)

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ৯৬৮  ই ফা বা /৪৮৩ আন্তঃ )

 

দুই সিজদার মাজখানে বসার সময় –

সালাতে সিজদায় যে পরিমাণ সময় ব্যয় করবে এখানেও প্রায় সে পরিমাণ সময় ব্যয় করা –

বাদাল ইবনু মুহাব্বার (রহঃ) … বারা’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সালাতে দাঁড়ানো ও বসা অবস্থা ব্যতীত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রুকূ’ সিজদা এবং দু’ সিজদার মধ্যবর্তী সময় এবং রুকূ’ থেকে উঠে দাঁড়ানো, এগুলো প্রায় সমপরিমাণ সময় ছিল।

( বুখারী সহীহ হাদিস- ৭৫৬ ই ফা বা /৭৯২ আন্তঃ ,    মুসলিম সহীহ হাদিস- ৯৪১ ই ফা বা / ৪৭১ আন্তঃ )

 

দুই সিজদার মাঝখানে পাঠের দুয়া-

মুহাম্মাদ ইবনু মাসউদ ….. ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই সিজদার মাঝে নিম্নের দু’আ পাঠ করতেন।

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَعَافِنِي وَاهْدِنِي وَارْزُقْنِي

( আল্লাহুম্মাগফির লী, ওয়ারহামনী, ওয়া আফিনী, ওয়াহদিনী, ওয়ারযুকনী )

অর্থ – হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি রহম করুন, আমাকে রক্ষা করুন, আমাকে হেদায়েত করুন এবং আমাকে রিজিক দিন।

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৮৫০  ই ফা বা,  ইবনু মাজাহ, তিরমিযী )

 

সলাতে দ্বিতীয় সিজদা –

আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে এবং প্রথম সিজদার ন্যায় তাসবীহ ও দুআ পড়বে।

( বুখারী সহীহ হাদিস -৭৮৭ ই ফা বা / ৮২৫আন্তঃ, ৭৭৯ আধুনিক )

 

সালাতের বেজোড় রাকাআতে সিজদা থেকে উঠার সময় একটু সময় বসা –

মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … মালিক ইবনু হুয়াইরিস লাইসী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাত (নামায) আদায় করতে দেখেছেন। তিনি তাঁর সালাতর বেজোড় রাকাআতে (সিজদা থেকে) উঠে না বসে দাঁড়াতেন না।

( বুখারী সহীহ হাদিস -৭৮৫ ই ফা বা / ৮২৩ আন্তঃ )

 

প্রথম বৈঠক বা  তাশাহ্‌হুদের জন্যে কিভাবে বসবে-

প্রথম বৈঠকে কিভাবে বসতে হবে

প্রথম বৈঠকে কিভাবে বসতে হবে

কুতায়বা ইবনু সায়ীদ (রহঃ) … আব্দুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সালাতের নিয়মের মধ্যে এটাও যে, তুমি তোমার বাম পা বিছিয়ে রাখবে এবং ডান পা খাড়া রাখবে (পায়ের আঙুলগুলো কিবলামুখী করে) ।

 

( আন- নাসাঈ সহীহ হাদিস- ১১৬০ ই ফা বা ,     বুখারি সহীহ হাদিস -৭৮৯ ই ফা বা/ ৮২৭ আন্তঃ )

 

প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদ পাঠ করা-

আত্তাহিয়্যাতু –

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ، وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِين     أَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ‏

 

উচ্চারণ – আত্তাহিয়্যা-তু লিল্লা-হি ওয়াস্‌সালাওয়া-তু ওয়াত্তায়্যিবা-তু আস্‌সালা-মু ‘আলাইকা আইয়্যূহান নাবিয়্যূ ওয়া রাহমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকা-তুহু। আস্‌সালা-মু ‘আলাইনা ওয়া ‘আলা ‘ইবাদিল্লা-হিস সা-লেহীন। আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহু ওয়া রাসূলুহু।

অর্থ – “যাবতীয় অভিবাদন, সর্বপ্রকার সালাত ও পবিত্রতা কেবল আল্লাহ তাআলারই প্রাপ্য। হে নবী! আপনার উপর আল্লাহর শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক এবং আমাদের ও আল্লাহর সমস্ত নেক বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি এ কথার সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার আর কোন মাবুদ নেই এবং এ কথাও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (স.) আল্লাহর বান্দা ও প্রেরিত রাসূল।”

( বুখারী সহীহ হাদিস ৭৯৩ ই ফা বা /৮৩১ আন্তঃ )

 

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

বৈঠক বা বসা অবস্থায় আঙুল রাখার পদ্ধতি –

প্রথম বৈঠকে কিভাবে বসতে হবে

ক।   প্রথম বৈঠকে কিভাবে বসতে হবে কুতায়বা (রহঃ) … ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি তিনি যখন সালাত আরম্ভ করতেন তাঁর হস্তদ্বয় উত্তোলন করতেন, আর যখন রুকু করতেন ও রুকু থেকে মাথা ওঠাতেন তখনও। আর তিনি যখন বসতেন তার বাম পা বিছিয়ে দিতেন এবং ডান পা দাঁড় করে রাখতেন, আর তাঁর বাম হাত বাম উরুর উপর এবং ডান হাত ডান উরুর উপর রাখতেন এবং মধ্যম ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা গোলাকার বৃত্ত বানিয়ে ইশারা করতেন।

( আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ১২৬৬ ই ফা বা  )

 

খ। সালাতে বসা ও দুই উরুর উপর দুই হাত রাখার নিয়ম-

ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আলী ইবনু আবদুর রহমান মু’আবী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) আমাকে সালাতে কংকর নিয়ে খেলা করতে দেখলেন। আমি সালাত শেষ করার পর তিনি আমাকে নিষেধ করলেন এবং বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেরূপ করতেন তুমিও তদ্রূপ কর। আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিরূপ করতেন? তিনি বললেন, তিনি যখন সালাতে বসতেন, তাঁর ডান হাত ডান উরুর উপর রাখতেন এবং সমস্ত আঙ্গুল গুটিয়ে রেখে বৃদ্ধাংগুলির নিকটস্থ আংগুল দ্বারা ইশারা করতেন। আর বাম হাতের তালুখানি বাম উরুর উপর রাখতেন।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ১১৮৯ ই ফা বা )

 

সহু সিজদার বিশুদ্ধ পদ্ধতি

কুতাইবা ইবনু সা’য়ীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ‌ ইবনু বুহাইনা আসাদী (রাঃ) যিনি বনূ আবদুল মুত্তালিবের সঙ্গে মৈত্রী চুক্তিবদ্ধ ছিলেন তাঁর থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহ্‌রের সালাত (দু’ রাকা’আত আদায় করার পর) না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। সালাত (নামায/নামাজ) পূর্ণ করার পর সালাম ফিরাবার আগে তিনি বসা অবস্থায় ভুলে যাওয়া বৈঠকের স্থলে দু’টি সিজ্‌দা সম্পূর্ণ করলেন, প্রতি সিজ্‌দায় তাক্‌বীর বললেন। মুসল্লীগণও তাঁর সঙ্গে এ দু’টি সিজ্‌দা করল। ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে তাক্‌বীরের কথা বর্ণনায় ইবনু জুরাইজ (রহঃ) লায়স (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।

( বুখারী সহীহ হাদিস- ৭৯২, ১১৫৮ ই ফা বা /৮৩০, ১২৩০ আন্তঃ,     আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ১২৬৪ ই ফা বা )

 

ইমাম দুই রাকআতের পর ভূলে দাঁড়িয়ে গেলে মুছুল্লীরা কিভাবে লুকমা দিবেন –

ইমাম দুই রাকআতের পর ভূলে দাঁড়িয়ে গেলে পুরুষ মুছুল্লীরা সুবহানাল্লাহ “ বলবে এবং মেয়েরা হাত  ” চাপড়াবে বা হাত তালি “ দিবে –

আবদুল্লাহ ইবনু আব্দির রহমান (রহঃ) …. যিয়াদ ইবনু ইলাকা (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ মুগীরা ইবনু শু’বা রাদিয়াল্লাহু আনহু একদিন আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। দুই রাকআতের পর তিনি না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। পিছনে যারা ছিলেন তারা (তাকে সতর্ক করার জন্য) ‘ সুবহানাল্লাহ ’ পাঠ করলেন। তিনি তাদেরকে দাঁড়াতে ইশারা করলেন। সালাতশেষে তিনি সালাম ফিরিয়ে সিজদা সাহু করলেন এবং পরে যথারীতি সালাম ফিরিয়ে বললেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও এরূপ করেছিলেন।

ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান-সহীহ। এই হাদীসটি মুগীরা ইবনু শু’বা রাদিয়াল্লাহু আনহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে।

( তিরমিজী সহীহ হাদিস – ৩৬৫ ই ফা বা,     বুখারী সহীহ হাদিস – ১১৩০, ১১৪৫ ই ফা বা/ ১২০৩, ১২১৮ আন্তঃ,    মুসলিম সহীহ হাদিস – ৮৩৮ ই ফা বা /৪২২ আন্তঃ, আন নাসাঈ সহীহ হাদিস -১২১০, ১২১২ ই ফা বা )

যে দু’ রাকআতের পরে ভুলে সালাম ফিরিয়ে ফেলল এবং কথা বলে ফেলল সে কি করবে –

ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের সালাত তিন রাক’আত আদায় করে সালাম ফিরালেন। এরপর উঠে হুজরার মধ্যে প্রবেশ করলেন। ইত্যবসরে র্দীর্ঘ দুই হাত বিশিষ্ট জনৈক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাত কি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে? তখন তিনি রাগান্নিত হয়ে বের হয়ে এলেন এবং তিনি যে রাক’আতটি ছেড়ে দিয়েছিলেন, সেটি আদায় করলেন। এবং সালাম ফিরালেন। এরপর দুটি সিজদা (সাহু) করে পুনরায় সালাম ফিরালেন।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ১১৭২, ১১৭১ ই ফা বা,   আন -নাসাঈ সহীহ হাদিস – ১২২৯ ই ফা বা )

 

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

 

দ্বিতীয় বৈঠকে বসার পদ্ধতি –

প্রথম বৈঠকে কিভাবে বসতে হবে

প্রথম বৈঠকে কিভাবে বসতে হবে

ক। কুতায়বা (রহঃ) … ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি তিনি যখন সালাত আরম্ভ করতেন তাঁর হস্তদ্বয় উত্তোলন করতেন, আর যখন রুকু করতেন ও রুকু থেকে মাথা ওঠাতেন তখনও। আর তিনি যখন বসতেন তার বাম পা বিছিয়ে দিতেন এবং ডান পা দাঁড় করে রাখতেন, আর তাঁর বাম হাত বাম উরুর উপর এবং ডান হাত ডান উরুর উপর রাখতেন এবং মধ্যম ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা গোলাকার বৃত্ত বানিয়ে ইশারা করতেন।

( আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ১২৬৬, ১২৬৭, ১২৬৮ ই ফা বা )

 

খ। তিন বা চার রাকআত বিশিষ্ট সালাতের দ্বিতীয় বৈঠকে বাম পা ডান পায়ের নিচ দিয়ে বাম পায়ের অগ্রভাগ বের করে নিতম্বের উপর ভর করে বসবে। তখন ডান পায়ের আঙুলগুলো কিবলামুখী করে খাড়া করে রাখবে। এ পদ্ধতির বৈঠককে তাওয়াররুক’ বলা হয়।

( বুখারী সহীহ হাদিস -৭৯০ ই ফা বা/ ৮২৮ আন্তঃ, আধুনিক ৭৮২ )

 

দ্বিতীয় বৈঠকে বসার পর যা পড়তে হয়-

দ্বিতীয় বা শেষ রাকআতের পর শেষ বৈঠক হয় তাহলে প্রথমে- আত্তাহিয়্যাতু, দরূদ, তারপর দু’আ মাছুরা এবং সম্ভব হলে একাধিক দু’আ পড়বে। রাসূলুল্লাহ (স) এভাবেই করেছেন-

 

ক।  প্রথমে নিম্নবর্ণিত আত্তাহিয়্যাতু পড়বে-

উপরে প্রথম বৈঠকের বর্ণনায় দেওয়া রয়েছে সেখান থেকে দেখে নিন।

 

খ।  অতঃপর রাসূলুল্লাহ (স.) এ দরূদটি পড়তেন, যাকে দরূদে ইবরাহীম বলা হয়ে থাকে-

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيد ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيد

উচ্চারণ – আল্লা-হুম্মা সল্লি ‘আ-লা মুহাম্মাদ ওয়া ‘আ-লা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সল্লাইতা ‘আ-লা ইবরহীমা ওয়া ‘আ-লা আ-লি ইব্রহীমা ইন্নাকা হামীদুন মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বারিক ‘আ-লা মুহাম্মাদ ওয়া ‘আ-লা আলি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা ‘আ-লা ইব্রহীমা ওয়া ‘আ-লা আ-লি ইব্রহীমা ইন্নাকা হামীদুন মাজীদ

অর্থ – হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (স) এবং তাঁর বংশধরের উপর রহমত বর্ষণ করো, যেমন রহমত বর্ষণ করেছ ইবরাহীম (আঃ) ও তাঁর বংশধরের উপর, নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (স) এবং তাঁর বংশধরের ওপর বরকত নাযিল করো, যেমন বরকত নাযিল করেছ ইবরাহীম (আঃ) ও তাঁর বংশধরের উপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৩১৩১ ই ফা বা /৩৩৭০ আন্তঃ)

 

গ। সবশেষে পড়বে দু”আ মাছুরা-

اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ، وَارْحَمْنِي إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

উচ্চারণ – আল্লাহুম্মা ইন্নী যলামতু নাফসী যুল্মান কাসীরাওঁ ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনূবা ইল্লা আন্তা; ফাগফির লী মাগফিরতান মিন ইনদিকা ওয়ার হামনী ইন্নাকা আন্তাল গফুরুর রহীম।

অর্থঃ হে আল্লাহ্‌! আমি আমার নিজ আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি, গুনাহ মাফকারী একমাত্র তুমিই; অতএব তুমি আপনা হইতে আমাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা কর এবং আমার প্রতি দয়া কর। তুমি নিশ্চয়ই ক্ষমাশীল দয়ালু।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৭৯৫ ই ফা বা /৮৩৪ আন্তঃ )

 

সালাত সমাপ্ত করার সালাম ও তার পদ্ধতি-

নামাজ সালাম দ্বারা সমাপ্ত করা

নামাজ সালাম দ্বারা সমাপ্ত করা

ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ….. আমির ইবনু সা’দ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ডানে এবং বামে সালাম ফিরাতে দেখতাম। এমনকি (তিনি এমনভাবে মুখ ঘুরাতেন যে,) আমি তার গালের শুভ্রতা দেখতে পেতাম।

নামাজ আদায়কারী মুসলিম ব্যক্তি বা মুসল্লি নামাজের আত্তাহিয়্যাতু, দূরুদ, দোয়া মাসুরা শেষ করে নামাজ সমাপ্ত করার জন্য প্রথমে ডান দিকে এবং পরে বাম দিকে বলবে –

اَلسَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ

উচ্চারণ – আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

অর্থ: আপনাদের প্রতি সর্ব প্রকার শান্তি, আল্লাহর  করুণা ও তাঁর কল্যাণ অবতীর্ণ হোক ।

কেননা এই পদ্ধতিটি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তিনি ডান দিকে সালাম ফিরানোর সময় এমন পদ্ধতিতে বলতেন-

اَلسَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ

উচ্চারণ – আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

যে তাঁর গালের সাদা ঝলক ডান দিক থেকে দেখা যেতো।

অনুরূপভাবে তিনি বাম দিকে সালাম ফিরানোর সময় এমন পদ্ধতিতে বলতেন-

اَلسَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ

উচ্চারণ – আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

যে তাঁর গালের সাদা ঝলক বাম দিকে থেকে দেখা যেতো।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ১২০২ হাদিস একা./ ৫৮২ আন্তঃ/১১৯১ ই ফা বা /১২০২ ই সেন্টার,    আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ১৩২৫ ই ফা বা,    আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৯৯৬ ই ফা বা ,    তিরমিজী সহীহ হাদিস – ২৯৫ ই ফা বা ,    ইব্নে মাজাহ সহীহ হাদিস – ৯১৪ ই ফা বা  )

সলাতে শেষ বৈঠকে সালাম ফিরানোর সময় উরুর উপর হাত রাখা –

জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমরা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতাম, তখন সালাত শেষে ডান-বাম দিকে হাত ইশারা করে ’আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’ ’আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’ বলতাম। তাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা চঞ্চল ঘোড়ার লেজ নাড়ার মত হাত ইশারা করছ কেন? (সলাতের বৈঠকে) উরুর উপর হাত রেখে ডানে-বামে অবস্থিত তোমাদের ভাইকে (মুখ ফিরিয়ে) ’আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতূল্লাহ’ বলাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ৮৫৪ ই ফা বা / ৪৩১ আন্তঃ )

মুসল্লীদের দিকে ইমামের ঘুরে বসা :

মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … সামুরা ইবনু জুনদব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করতেন, তখন আমাদের দিকে মুখ ফিরাতেন।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৮০৫ ই ফা বা / ৮৪৫ আন্তঃ /আধুনিক- ৭৯৭ )

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

সালাতের সামগ্রিক রূপ এবং যা দিয়ে সালাত শুরু ও শেষ করা হয়; রুকুর নিয়ম ও তার সুষ্ঠতা; চার রাকআত বিশিষ্ট সালাতের দুরাকআতের পর তাশাহুদ এবং দুই সিজদার মধ্যে ও প্রথম তাশাহুদে বসার নিয়ম-

মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র এবং ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) শব্দ ইসহাকের … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীর দ্বারা সালাত (নামায/নামাজ) শুরু করতেন এবং  الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ  দ্বারা কিরা’আত আরম্ভ করতেন। যখন রুকু করতেন তখন তাঁর মাথা উঠিয়েও রাখতেন না, ঝুঁকিয়েও রাখতেন না; বরং মাঝামাঝি রাখতেন। আর যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন, তখন সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে সিজদায় যেতেন না। আর যখন সিজদা থেকে মাথা উঠাতেন, তখন সোজা হয়ে না বসে (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতেন না। এবং প্রতি দু-রাক’আতে আত-তাহিয়্যাতু পড়তেন বাম পা বিছিয়ে রাখতেন আর ডান পা খাড়া করে রাখতেন। শয়তানের মত পাছার উপর বসা থেকে নিষেধ করতেন। পূরুষকে তার দু’বাহু হিংস্র জন্তুর মত বিছিয়ে রাখতে নিষেধ করেছেন। তিনি সালামের দ্বারা সালাত সমাপ্ত করতেন।

আর খালিদের সুত্রে ইবন নুমায়র (রহঃ) থেকে عَنْ عُقْبَةِ الشَّيْطَانِ এর স্থলে عَنْ عَقِبِ الشَّيْطَانِ উল্লেখ রয়েছে।

( মুসলিম সহীহ হাদিস – ৯৯৩ ই ফা বা, ৪৯৮আন্তঃ,    মিশকাত সহীহ হাদিস – ৭৯১,     আবূ দাঊদ সহীহ হাদিস -৭৮৩ ই ফা বা,     ইবনে মাজাহ সহীহ হাদিস – ৮৬৯)

শুয়ে  ইশারায় সলাত আদায় করা :

ক।  আবূ মা’মার (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি ছিলেন অর্শরোগী, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বসে সালাত (নামায/নামাজ) আদায়কারী ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, যে ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করল সে উত্তম। আর যে ব্যাক্তি বসে সালাত আদায় করল তার জন্য দাঁড়ান ব্যাক্তির অর্ধেক সাওয়াব। আর যে শুয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করল, তার জন্য বসে সালাত আদায়কারীর অর্ধেক সাওয়াব।

আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আমার মতে এ হাদীসেنَائِمًا (নিদ্রিত) এর দ্বারাمُضْطَجِعًا (শুয়া) অবস্থা বুঝানো হয়েছে।

(বুখারী সহীহ হাদিস : ১০৫০ ই ফা বা /১১১৬ আন্তঃ)

খ। কেউ যদি অসুস্থতার কারণে বসে নামাজ পড়তে অপারগ হয়, তাহলে সে শুয়ে ইশারার মাধ্যমে নামাজ পড়বে। তার পা কিবলার দিকে করে শোয়াতে হবে। মাথাকে সামান্য ওপরে তুলে শোয়াবে, যাতে চেহারা কিবলার দিকে হয়।এরপর ইশারা করে রুকু-সিজদা করবে।

(মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১/২৭৩)

 

রুকু পেলেই রাকাত পেল এ সম্পর্কে ইসলামের বিধান :

ক।  আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সালাতের ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দেয়া শুরু হলে তোমরা দৌড়িয়ে আসবে না, বরং শান্তভাবে হেঁটে আসবে। তারপর যা ইমামের সাথে পাবে তাই আদায় করবে। আর যা ছুটে যাবে তা পরে আদায় করে নিবে।

( মিশকাত সহীহ হাদিস : ৬৮৬, বুখারী সহীহ হাদিস: ৬০৮,৮৬২, ই ফা বা/৬৩৬,৯০৮ আন্তঃ ,  মুসলিম সহীহ হাদিস : ১২৪৬ হাদিস একাডেমি/৬০২ আন্তঃ, আবূ দাঊদ : ৫৭২,৫৭৩  ই ফা বা, তিরমিযী সহীহ হাদিস : ৩২৭ ই ফা বা, ইবনু মাজাহ্ : ৭৭৫)

 

খ।  হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি নামাযের রুকু পেয়ে যায় ইমাম তার পিঠ সোজা করার পূর্বে, সে ব্যক্তি উক্ত রাকাত পেয়ে গেল।

( সুনানে বায়হাকী কুবরা হাদিস : ২৪০৮, সুনানে দারা কুতনী হাদিস : ১৩২৯, সহীহ ইবনে খুজাইমা হাদিস :৪৫, কানযুল উম্মাল হাদিস :২০৬৯৩, নসবুর রায়াহ হাদিস : ৩২৭)

 

গ। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যখন তোমরা আস আর ইমাম রুকু অবস্থায় থাকে, তাহলে তোমরা রুকু কর। আর যদি সেজদা অবস্থায় থাকে, তাহলে সেজদা কর। তবে সেজদা দ্বারা তা রাকাতের মাঝে গণ্য করো না, যদি না এর সাথে রুকু থেকে থাকে।

(সুনানে বায়হাকী কুবরা হাদিস : ২৪০৯,  কানযুল উম্মাল হাদিস : ২০৬৯৫)

 

ঘ।  হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইমামকে রুকু অবস্থায় পাবে, তারপর সে ইমাম মাথা উঠানোর আগে তার সাথে রুকু করে, তাহলে উক্ত রাকাত পেয়ে গেছে।

(সুনানে বায়হাকী কুবরা হাদিস : ২৪১৩)

 

উপরোক্ত হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, মুক্তাদী যদি তাকবীরে তাহরীমা বলে  ইমাম সাহেব কে রুকু অবস্থায় পায় বা সামিআল্লাহ হুলিমান হামিদাহ এখনো বলেনি , তাহলে মুক্তাদী এই রাকাত পেল। পরে এই রাকআত আর পড়তে হবে না।

 

নামাজে সূরা ধারাবাহিক ভাবে পড়া :

নামাজে কেরাত অর্থাৎ কোরআন থেকে কিছু আয়াত পড়া ফরজ।

আল্লাহ নামাজে কোরআন পড়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন :

فَاقۡرَءُوۡا مَا تَیَسَّرَ مِنَ الۡقُرۡاٰنِ

অর্থঃ তোমরা কোরআন থেকে যতটুকু সহজ হয় ততটুকু পড়।

( সুরা মুজ্জাম্মিল: ২০)

হাদিসের বর্ণনায় :

এক রাকাআতে দু’সূরা মিলিয়ে পড়া, সূরার শেষাংশ পড়া, এক সূরার আগে আরেক সূরা পড়া এবং সূরার প্রথমাংশ পড়া :

আব্দুল্লাহ্ ইবন সায়িব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাতে সূরা ম’মিনূন পড়তে শুরু করেন। যখন মূসা (আঃ) ও হারূন (আঃ) বা ঈসা (আঃ)-এর আলোচনা এল, তাঁর কাশি উঠল আর তখন তিনি রুকু’তে চলে গেলেন। উমর (রাঃ) প্রথম রাকাআতে সূরা বাকারার একশ’ বিশ আয়াত তিলাওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাকআতে মাসানী সূরা সমূহের কোন একটি তিলাওয়াত করেন। আহনাফ (রঃ) প্রথম রাকাআতে সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা ইউসুফ বা ইউনুস তিলাওয়াত করেন এবং তিনি বর্ণনা করেছেন যে, তিনি উমর (রাঃ)-এর পিছনে এ দু’টি সূরা দিয়ে ফজরের সালাত আদায় করেন।

ইবন মাসউদ (রাঃ) (প্রথম রাকআতে) সূরা আনফালের চল্লিশ আয়াত পড়েন এবং দ্বিতীয় রাকাআতে মুফাসসাল সূরা সমূহের একটি পড়েন। যে ব্যক্তি দু’রাকাআতে একই সূরা ভাগ করে পড়ে বা দু’রাকাতে একই সূরা দুহরিয়ে পড়ে। তার সম্পর্কে কাতাদা (রহঃ) বলেন, সবই মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তা’আলার কিতাব। (অর্থাৎ এতে কোন দোষ নেই)।

উবায়দুল্লাহ্ (রাঃ) কবার মসজিদে তাঁদের ইমামতি করতেন। তিনি সশব্দে কিরাআত পড়া হয় এমন কোন সালাতে যখনই কোন সূরা তিলাওয়াত করতেন, قل هو الله أحد সূরা দ্বারা শুরু করতেন। তা শেষ করে অন্য একটি সূরা এর সাথে মিলিয়ে পড়তেন। আর প্রতি রাকাআতেই তিনি এরূপ করতেন। তাঁর সঙ্গীরা এ ব্যাপারে তাঁর কাছে বললেন যে, আপনি এ সূরাটি দিয়ে শুরু করেন, এটি যথেষ্ট হয় বলে আপনি মনে করেন না তাই আর একটি সূরা মিলিয়ে পড়েন। হয় আপনি এটিই পড়বেন, না হয় এটি বাদ দিয়ে আর একটি সূরা মিলিয়ে পড়েন, হয় আপনি এটিই পড়বেন, না হয় এটি বাদ অন্যটি পড়বেন। তিনি বললেন, আমি এটি কিছুতেই ছাড়তে পারব না। আমার এভাবে ইমামতি করা যদি আপনারা অপছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাদের ইমামতি ছেড়ে দেব। কিন্তু তাঁরা জানতেন যে, তিনি তাদের মাঝে উত্তম। তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তাদের ইমামতি করুক এটা তাঁরা অপছন্দ করতেন। পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁদের এখানে আগমন করেন, তাঁরা বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানান। তিনি বললেন, হে, অমুক! তোমার সঙ্গীগণ যা বলেন তা করতে তোমাকে কিসে বাঁধা দেয়? আর প্রতি রাকাআতে এ সূরাটি বাধ্যতামূলক করে নিতে কিসে উদ্বুদ্ধ করছে? তিনি বললেন, আমি এ সূরাটি ভালবাসি। নবী করীম (সাঃ) বললেনঃ এ সূরার ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।

( বুখারী সহীহ হাদিস : ৭৩৯ ই ফা বা /৭৭৫ আন্তঃ)

দুই ওয়াক্তের নামাজ একত্রে আদায় করা (যোহর ও আসর এবং মাগরীব ও এশা ) :

আবূ নু’মান (রহঃ) ….. ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনা অবস্থানকালে (একবার) যুহর ও আসরের আট রাকাআত এবং মাগরিব ও ইশার সাত রাকাআত একত্রে মিলিয়ে আদায় করেন।* আয়্যূব (রহঃ) বলেন, সম্ভবত এটা বৃষ্টির রাতে হয়েছিল। জাবির (রহঃ) বললেন, সম্ভবত তাই।
*ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বলেন, বাড়ীতে অবস্থানকালে কোন প্রকার ভয় বা বৃষ্টি না থাকলে এরূপ করা যাবে না। এতে কারো দ্বিমত নেই। তবে ওযর থাকলে, কিংবা সফরের অবস্থায় এরুপ মিলিয়ে পড়া যাবে বলে ইমাম শাফেই, আহমাদ ও মালিক (রহঃ) মনে করেন। ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর মতে পৃথক পৃথকভাবে আদায় করতে হবে। এক নিয়্যাতে একত্রে আদায় করা জায়িয নয়।

(বুখারী সহীহ হাদিস : ৫১৬ ই ফা বা / ৫৪৩ আন্তঃ )

 

দ্বীনি কাজের স্বার্থে বেশি বেশি করে শেয়ার করুন ………………… ।

 

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল মুসলিম ভাই ও বোনদেরকে সঠিকভাবে সলাত/নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন আমিন।

আসসালামু আলাইকুম, সম্মানিত দর্শক মানুষ মাত্রই ভুল হতে পারে, যদি কোন ভুল ভ্রান্তি আপনাদের চোখে পড়ে তাহলে ক্ষমা করে দিবেন এবং আমাদেরকে কমেন্স করে ভুল গুলো জানানোর জন্য অনুরুদ রইল।

2 thoughts on “সলাত বা নামাজ আদায়ের পদ্ধতি I Rules of namaz”

  1. অত্যান্ত মূল্যবান একটি ওয়েবসাইট মুসলিমদের জন্য , আশাকরি সবাই এই সাইটটি থেকে দ্বীনি বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন ইনসালল্লাহ

Leave a Reply