Skip to content

গাস্তের আদব I Gast, gaster adob

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

গাস্তের আদবঃ

গাস্তের আদব বলার কৌশলঃ

মেহনতের যে কোন কথা বা বয়ান শুরু হতে হবে আল্লাহ্ তায়ালার হামদ, সানা, আজমতের কথা দিয়ে । এর সাথে কুরআন-হাদিসের আলোকে মউতের পরের জিন্দেগি মুজাকারা করা ।

আম্বিয়াদের ওয়াক্বিয়া, নবীগন আল্লাহ্ পাকের কাছ থেকে জাহিরের খিলাফ যে সাহায্য লাভ করেছেন সেগুলো কুরআন-হাদীস থেকে সহীভাবে জেনে নিয়ে অবিকৃত ভাবে মুজাকারা করা । ওজিফার মত করে আম্বিয়াদের ওয়াক্বিয়া মুজাকারা করা ।

সাহাবাদের ওয়াক্বিয়া, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাদের মেহনতের কারগুজারী, তাঁদের কুরবানী, ইমানী মুজাহাদা, আর তাঁরা আল্লাহ্ পাকের কাছ থেকে যে সাহায্য লাভ করেছেন সেগুলো হাদীস থেকে অবিকৃত ভাবে মুজাকারা করা ।সাহাবাদের পরবর্তী জামানার কারো ঘটনা না বলা ।

যেমনঃ- আল্লাহ্ পাক মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি সুখ সফলতা রেখেছেন একমাত্র দ্বীনের মধ্যে । যেমন মাছের শান্তি রেখেছেন পানির মধ্যে ।আল্লাহ্‌ পাকের হুকুম নবীর তরীকায় পুরা করাকে দ্বীন বলে ।

গাস্তের আদব শুরু করার নিয়মঃ

মানুষ যখনই দ্বীন থেকে গাফেল হয়ে গেছে, আখিরাতকে ভূলে দুনিয়ামুখী হয়েছে, একমাত্র আল্লাহ্ পাকের উপর ভরসাকে ছেড়ে সৃষ্ট বস্তুর উপর একীন করেছে তখনই আল্লাহ্‌ পাক মানুষের কামিয়াবী ও নাজাতের জন্য পর্যায়ক্রমে লক্ষাধিক নবী রাসূলকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন । দাওয়াতের এই মেহনত করতে গিয়ে কোন নবীকে আগুনের মধ্যে যেতে হয়েছে, কাউকে মাছের পেটে যেতে হয়েছে, কারও শরীর থেকে লোহার চিরুনী দ্বারা চামড়া-গোশত খসিয়ে নেওয়া হয়েছে । তথাপি তারা কেহ দ্বীনের মেহনতে সামান্যটুকু কমতি করেন নি ।

হযরত ঈসা (আঃ) এর পর হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নবুয়ত প্রাপ্তি পর্যন্ত দীর্ঘ সময় দাওয়াতের মেহনত বন্ধ থাকায় গোটা আরব বদ্বীনীতে ভরপুর হয়ে যায় | অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে তারা নিজের কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিয়েছে । এমনকি ক্বাবা ঘরে ৩৬০ টি মূর্তি ঢুকিয়েছিল । এজন্য ঐ যুগকে অন্ধকার যুগ বলা হয় । এজন্য আল্লাহ্ পাক দয়াপরবশ হয়ে কিয়ামত পর্যন্ত সারা দুনিয়ার সমস্ত মানব জাতির হেদায়েতের জন্য হযরত মোহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আখেরী নবী করে দুনিয়ায় পাঠালেন । নবুয়ত প্রাপ্তির পর মাত্র ২৩ বছরের মেহনতে সেই অসভ্য, বর্বর, ঘৃনীত মানুষগুলো সোনার মানুষে পরিনত হলেন ।
যেহেতু আর কোন নবী দুনিয়াতে আসবেন না তাই এই মেহনতের জিম্মাদারী এখন আমাদের সবার উপর । আমরা যদি এই দাওয়াতের মেহনত না করি কাল কিয়ামতের মাঠে আমাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে । আর আমরা যদি এই মেহনত করি আল্লাহ্‌ পাক আমাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে ইজ্জত ও সম্মান দান করবেন । এই মেহনত করার জন্য সবাই তৈয়ার আছি না ভাই ।

দীনি কাজের ফজীলতঃ

كُنۡتُمْ خَیۡرَ اُمَّۃٍ اُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَاۡمُرُوۡنَ بِالْمَعْرُوۡفِ وَتَنْہَوْنَ عَنِ الْمُنۡکَرِ وَتُؤْمِنُوۡنَ بِاللہِ ؕوَلَوْ اٰمَنَ اَہۡلُ الْکِتٰبِ لَکَانَ خَیۡرًا لَّہُمۡ ؕ مِنْہُمُ الْمُؤْمِنُوۡنَ وَاَكْثَرُہُمُ الْفٰسِقُوۡنَ ﴿۱۱۰﴾

(১) আল্লাহ্ পাক বলেন ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে ভাল কথা কার হতে পারে যে মানুষকে আল্লাহ্‌র পথে ডাকে এবং নেক আমল করে এবং বলে যে নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের মধ্যে একজন । [আল-কোরআন]
(২) আল্লাহ্‌র পাকের রাস্তায় এক সকাল অথবা এক বিকাল ব্যয় করা দুনিয়া এবং দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম । [বুখারী]
(৩) আল্লাহ্‌র রাস্তায় ধূলাবালি আর জাহান্নামের ধূয়া কখনো একত্রিত হবে না ।[তিরমিজী]
(৪) আল্লাহ্‌র রাস্তায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা শবে ক্বদরের রাত্রে হাজরে আসওয়াদ পাথরের পার্শ্বে দাড়িয়ে সারারাত ইবাদকত করার চেয়ে উত্তম । [ইবনে হিব্বান]
(৫) আল্লাহ্‌র রাস্তায় কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকা আপন ঘরে থেকে ৭০ বছর নামায পড়ার চেয়ে উত্তম । [তিরমিজী]

 

দাওয়াতের তরতীবঃ

জামাতের মধ্যে দুইটি অংশ হইবে একটি মসজিদের ভিতরে থাকবে আর অন্যটি গাস্তে যাবে । যে জামাত গাস্তে যাবে তাতে থাকবে একজন রাহবার, একজন মুতাকাল্লিম, কয়েকজন মামুর এবং একজন যিম্মাদার । রাহবার এলাকার লোক হইলে খুব ভাল হয় । সারা দুনিয়াকে সামনে নিয়ে আল্লাহ্ পাকের রাজির জন্য গাস্তে যাওয়া । গাস্তে যাওয়ার আগে নিজের দুর্বলতা পেশ করে দোয়া করা ।

৭-১০ জন সাথী হলে ভালো হয় । নজরের হেফাজত করা । জিকিরে ফিকিরে যাওয়া । রাস্তার ডান দিক দিয়ে চলা । মহল্লার শেষ প্রান্ত থেকে শুরু করে মসজিদের দিকে আসা । মসজিদেও আমল চলবে । এক ভাই ঈমান একীনের কথা বলবে, কিছু ভাই কথা শুনবে, ২/১ ভাই এস্তেকবাল করবে, ২/১ ভাই দোয়া ও জিকিরে লিপ্ত থাকবে ।

 

রাহবারের কাজঃ

রাহবারের কাজ হলো মহল্লার ডান দিক দিয়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে এক এক করে সকল লোকের নিকট জামাতকে নিয়ে যাওয়া এবং সালাম দিয়ে বলা যে আল্লাহ্‌র রাস্তার মেহমানেরা আসছে আপনার সাথে কথা বলবে | যদি তিনি কাজে ব্যস্ত থাকেন তবে কাজ থেকে ফারেক করে মুতাকাল্লিমের কাছে নিয়ে আসবেন । রাহবার, মুতাকাল্লিম, যিম্মাদার ছাড়া অন্য কেউ সালাম দিবেন না, সালামের উত্তরও দিবেন না ।

 

মুতাকাল্লিমের কাজঃ

মুতাকাল্লিম ভাই নরম নরম স্বরে তিন কথার উপর দাওয়াত দিবেন । তাওহীদ, রিসালাত এবং আখিরাতের উপর । দাওয়াত এমনভারে দিতে হবে যে যেন বয়ানও না হয় এবং এলানও না হয় ।

 

আলহামদুলিল্লাহ

Leave a Reply