Skip to content

মহিলা ও পুরুষের নামাজের পার্থক্য I Women salat, namaz

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

মহিলা এবং পুরুষের সলাত আদায়ের পার্থক্য ?

 মহিলাদের নামাজ :

আমাদের সমাজে পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে সালাত আদায়ে পার্থক্য দেখা যায়। কিন্তু মহানবী (সঃ) কখনও বলে যাননি যে, পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে সালাত আদায়ে পার্থক্য আছে। তাঁর সময় নারী-পুরুষ একসাথে জামায়াতে নামায আদায়ের বহু হাদিস রয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন –

 اِتَّخَذُوۡۤا اَحۡبَارَهُمۡ وَ رُهۡبَانَهُمۡ اَرۡبَابًا مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ وَ الۡمَسِیۡحَ ابۡنَ مَرۡیَمَ ۚ وَ مَاۤ اُمِرُوۡۤا اِلَّا لِیَعۡبُدُوۡۤا اِلٰـهًا وَّاحِدًا ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ؕ سُبۡحٰنَهٗ عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ

অর্থ – তারা আল্লাহ্ ব্যতীত তাদের পণ্ডিত ও সংসার-বিরাগিদের(১)কে তাদের রবরূপে গ্রহণ করেছে(২) এবং মারইয়াম-পুত্র মসীহকেও। অথচ এক ইলাহের ইবাদাত করার জন্যই তারা আদিষ্ট হয়েছিল। তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই। তারা যে শরীক করে তা থেকে তিনি কত না পবিত্ৰ।(৩)!

( সূরা তাওবা আয়াত – ৩১)

তাফসীর :

(১) أحبار শব্দটি حبر এর বহুবচন। ইয়াহুদীদের আলেমকে حبر বলা হয়। পক্ষান্তরে رهبان শব্দটি راهب এর বহুবচন। নাসারাদের আলেমকে راهب বলা হয়। তারা বেশীরভাগই সংসার বিরাগী হয়ে থাকে। [ফাতহুল কাদীর]

(২) এ আয়াতে বলা হয় যে, ইয়াহুদী-নাসারাগণ তাদের আলেম ও যাজক শ্রেণীকে আল্লাহর পরিবর্তে রব ও মাবুদ সাব্যস্ত করে রেখেছে। অনুরূপ ঈসা আলাইহিস সালামকেও মা’বুদ মনে করে। তাকে আল্লাহর পুত্ৰ মনে করায় তাকে মা’বুদ সাব্যস্ত করার দোষে যে দোষী করা হয়, তার কারণ হল, তারা পরিষ্কার ভাষায় ওদের মা’বুদ না বললেও পূর্ণ আনুগত্যের যে হক বান্দার প্রতি আল্লাহর রয়েছে, তাকে তারা যাজক শ্রেণীর জন্যে উৎসর্গ রাখে। অর্থাৎ তারা যাজক শ্রেণীর আনুগত্য করে চলে; যতই তা আল্লাহর নির্দেশের বিরোধী হোক না কেন? বলাবাহুল্য পাদ্রী ও পুরোহিতগণের আল্লাহ বিরোধী উক্তি ও আমলের আনুগত্য করা তাদেরকে মা’বুদ সাব্যস্ত করার নামান্তর, আর এটি হল প্রকাশ্য কুফরী ও শির্ক।

আদী ইবন হাতেম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি গলায় একটি সোনার ক্রুশ নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসলাম। তখন তিনি বললেনঃ হে আদী, তোমার গলা থেকে এ মূর্তিটি সরিয়ে ফেল এবং তাকে সূরা আত-তাওবাহর এ আয়াতটি তেলাওয়াত করতে শুনলাম- “তারা আল্লাহ ব্যতীত তাদের পণ্ডিত ও সংসার-বিরাগীদেরকে তাদের পালনকর্তারূপে গ্রহণ করেছে।” আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল, আমরা তো তাদের ইবাদত করি না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তারা তোমাদের জন্য কোন কিছু হালাল করলে তোমরা সেটাকে হালাল মনে কর আর কোন কিছুকে হারাম করলে তোমরা সেটাকে হারাম হিসাবে গ্রহণ কর। (সহীহ তিরমিযী  হাদিস – ৩০৯৫ ই ফা বা )

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, শরীআতের মাসায়েল সম্পর্কে অজ্ঞ জনসাধারণের পক্ষে ওলামায়ে কেরামের নির্দেশনার অনুসরণ বা ইজতিহাদী মাসায়েলের ক্ষেত্রে মুজতাহিদ ইমামগণের মতামতের অনুসরণর ততক্ষণই করতে পারবে যতক্ষণ না এর বিপরীতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল থেকে কোন কিছু প্রমাণিত হবে। যখনই কোন কিছু আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের মতের বিপক্ষে হয়েছে বলে প্রমাণিত হবে তখনি তা ত্যাগ করা ওয়াজিব। অন্যথায় ইয়াহুদী নাসারাদের মত হয়ে যাবে। কারণ ইয়াহুদী-নাসারাগণ আল্লাহর কিতাব এবং আল্লাহর রাসূলের আদেশ নিষেধকে সম্পূর্ণ উপক্ষো করে স্বার্থপর আলেম এবং অজ্ঞ পুরোহিতদের কথা ও কর্মকে নিজেদের ধর্ম বানিয়ে নিয়েছে। আয়াতে তারই নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর]

(৩) অর্থাৎ অথচ তাদেরকে তো শুধু এ নির্দেশই দেয়া হচ্ছিল যে, তারা এক ইলাহেরই ইবাদত করবে, যিনি কোন কিছু হারাম করলেই কেবল তা হারাম হবে, আর যিনি হালাল করলেই তা হালাল হবে। অনুরূপভাবে যিনি শরীআত প্রবর্তন করলে সেটাই মানা হবে, তিনি হুকুম দিলে সেটা বাস্তবায়িত হবে। তিনি ব্যতীত আর কোন সত্য ইলাহ নেই। তারা যা তাঁর সাথে শরীক করছে তা থেকে তিনি কতই না পবিত্র। তাঁর সন্ততি নেই, তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি ছাড়া কোন রব নেই। [ইবন কাসীর] কিন্তু তারা সে নির্দেশের বিপরীত কাজ করেছে। তার সাথে শরীক করেছে। মহান আল্লাহ তাদের সে সমস্ত অপবাদ ও শরীক থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। তার পূর্ণতার বিপরীত তার জন্য যে সমস্ত অসামঞ্জস্যপূর্ণ গুণ সাব্যস্ত করে তা গ্রহণযোগ্য নয়। [সা’দী]

তাফসীরে জাকারিয়া

সালাত আদায় করার জন্য নারী পুরুষ কারোর জন্য স্বতন্ত্র নিয়ম করা হয়নি। জিবরাঈল (আঃ) মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ ক্রমে দুই দফায় রাসূল (সাঃ)-কে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের নিয়ম পদ্ধতি ইমামতি করে বাস্তবভাবে শিখিয়ে গেছেন। এ সময় জিবরাঈল (আঃ) নারীদের সালাতের জন্য আলাদা কোন নিয়ম পদ্ধতির বর্ণনা দেন নাই। নারী-পুরুষ নির্বিশেষের জন্য এ নমুনা শিখানো হয়েছে। আল্লাহর নিয়ম পদ্ধতিতে কখনও কোন পার্থক্য দেখা যাবে না।

সূচিপত্র (নামাজ শিক্ষা বই)……………

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন :

سُنَّۃَ اللّٰهِ فِی الَّذِیۡنَ خَلَوۡا مِنۡ قَبۡلُ ۚ وَ لَنۡ تَجِدَ لِسُنَّۃِ اللّٰهِ تَبۡدِیۡلًا

অর্থ – “ ইতঃপূর্বে যারা অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটাই ছিল আল্লাহর রীতি, আর তুমি আল্লাহর রীতিতে কখনই কোন পরিবর্তন পাবে না। ”

( সূরা-আহযাব আয়াত -৬২)

হাদিসের বর্ণনায় –

রাসূল (সাঃ) নিজেও বহু সাহাবীদের উপস্থিতিতে সালাত কেমন করে আদায় করতে হয় বাস্তবভাবে রুকু, সিজদাহ ইত্যাদি করে দেখিয়েছেন। তারপর রাসূল (সাঃ) দৃঢ়তার সাথে জোড়ালো ভাষায় বললেন-

মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা সমবয়সী একদল যুবক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে হাযির হলাম। বিশ দিন ও বিশ রাত আমরা তাঁর নিকট অবস্থান করলাম …………….. হাদীসটি সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হল ।

“তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখ, ঠিক সেভাবেই সালাত আদায় কর।”

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৬০৩ ই ফা বা /৬৩১ আন্তঃ, আলআদাবুল মুফরাদ হাদিস- ২১৩, ইবনে হিব্বান হাদিস – ২১৩১)

উপরে উল্লেখিত হাদিস থেকে  আমরা বুঝতে পারি যে, আল্লাহ তায়ালা ও রাসূল (সাঃ) যে কাজকে নারী পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট করে পার্থক্য করার বর্ণনা বা নির্দেশ দেন নাই তা পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে পার্থক্য না করেই পালন করতে হবে। যেহেতু রাসূল (সাঃ) সকল নারী পুরুষের জন্যই সমানভাবে অনুসরণ ও অনুকরণযোগ্য, এ ব্যাপারে কোন মতভেদ নাই নিশ্চয়ই।

মহান আল্লাহ তায়ালা অন্য আরেকটি আয়াতে বলেন –

لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰهِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰهَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَکَرَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا

অর্থ – ” অবশ্যই তোমাদের জন্য রসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য , যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। ”

( সূরা আল-আহযাব  আয়াত -২১)

মহান আল্লাহ তায়ালা অন্য আরেকটি আয়াতে বলেন –

اِنَّ الَّذِیۡنَ فَرَّقُوۡا دِیۡنَهُمۡ وَ کَانُوۡا شِیَعًا لَّسۡتَ مِنۡهُمۡ فِیۡ شَیۡءٍ ؕ اِنَّمَاۤ اَمۡرُهُمۡ اِلَی اللّٰهِ ثُمَّ یُنَبِّئُهُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡعَلُوۡنَ

অর্থ –  ” নিশ্চয় যারা তাদের দীনকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং দল-উপদলে বিভক্ত হয়েছে, তাদের কোন ব্যাপারে তোমার দায়িত্ব নেই।তাদের বিষয়টি তো আল্লাহর নিকট।অতঃপর তারা যা করত, তিনি তাদেরকে সে বিষয়ে অবগত করবেন। ”

 

তাফসীরে জাকারিয়া :
এ আয়াতে মুশরিক, ইয়াহুদী, নাসারা ও মুসলিম সবাইকে ব্যাপকভাবে সম্বোধন করা হয়েছে এবং তাদেরকে আল্লাহর সরল পথ পরিহার করার অশুভ পরিণতি সম্পর্কে হুশিয়ার করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলা হয়েছে যে, এসব ভ্রান্ত পথের মধ্যে কিছু পথ সরল পথের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখীও রয়েছে; যেমন, মুশরিক ও আহলে-কিতাবদের অনুসৃত পথ এবং কিছু পথ রয়েছে যা বিপরীতমুখী নয়, কিন্তু সরল পথ থেকে বিচ্যুত করে ডানে-বামে নিয়ে যায়। এগুলো হচ্ছে সন্দেহযুক্ত ও বিদাআতের পথ। এগুলোও মানুষকে পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত করে দেয়। “যারা দ্বীনের মধ্যে বিভিন্ন পথ আবিস্কার করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের কাজ আল্লাহ্ তা’আলার নিকট সম্পর্কিত। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা তাদের কাছে তাদের কৃতকর্মসমূহ বিবৃত করবেন।”

আয়াতে উল্লেখিত দ্বীনে বিভেদ সৃষ্টি করা এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হওয়ার অর্থ দ্বীনের মূলনীতিসমূহের অনুসরণ ছেড়ে স্বীয় ধ্যান-ধারণা ও প্রবৃত্তি অনুযায়ী কিংবা শয়তানের ধোঁকা ও সন্দেহে লিপ্ত হয়ে দ্বীনে কিছু নতুন বিষয় ঢুকিয়ে দেয়া অথবা কিছু বিষয় তা থেকে বাদ দেয়া। কিছু লোক দ্বীনের মূলনীতি বর্জন করে সে জায়গায় নিজের পক্ষ থেকে কিছু বিষয় ঢুকিয়ে দিয়েছিল। এ উম্মতের বিদ’আতীরাও নতুন ও ভিত্তিহীন বিষয়কে দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। তারা সবাই আলোচ্য আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বিষয়টি বর্ণনা করে বলেন, বনী-ইসরাঈলরা যেসব অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিল, আমার উম্মতও সেগুলোর সম্মুখীন হবে। তারা যেমন কর্মে লিপ্ত হয়েছিল, আমার উম্মতও তেমনি হবে।

বনী-ইসরাঈলরা ৭২ টি দলে বিভক্ত হয়েছিল, আমার উম্মতে ৭৩ টি দল সৃষ্টি হবে। তন্মধ্যে একদল ছাড়া সবাই জাহান্নামে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম আর্য করলেনঃ মুক্তিপ্রাপ্ত দল কোনটি? উত্তর হল, যে দল আমার ও আমার সাহাবীদের পথ অনুসরণ করবে, তারাই মুক্তি পাবে। [তিরমিযীঃ ২৬৪০, ২৬৪১] অনুরূপভাবে ইরবায ইবন সারিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে যারা আমার পর জীবিত থাকবে, তারা বিস্তর মতানৈক্য দেখতে পাবে। তাই (আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি যে,) তোমরা আমার ও খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে শক্তভাবে আঁকড়ে থেকে নতুন নতুন পথ থেকে সযত্নে গা বাঁচিয়ে চলো। কেননা, দ্বীনে নতুন সৃষ্ট প্রত্যেক বিষয়ই বিদ’আত এবং প্রত্যেক বিদ’আতই পথভ্রষ্টতা। [আবূ দাউদ: ৪৬০৭, তিরমিযী: ২৬৭৬, ইবন মাজাহঃ ৪৩, মুসনাদে আহমাদ: ৪/১২৬]

 

 ( সূরা আল-আনআম আয়াত : ১৫৯)

সূচিপত্র (নামাজ শিক্ষা বই)……………

মহিলাদের সালাত আদায়ে পার্থক্যগুলো –

তবে মহিলাদের সালাত আদায়ে যে পার্থক্যগুলো দেখা যায় সেগুলো বাহ্যিক এবং সলাতের বাইরে বিবেচিত।

এগুলো নিম্নরূপঃ

১। সালাতের জন্য পুরুষ আযান দিবে কিন্তু মহিলা আযান দেবে না।

উল্লেখ্য যে আযান সংক্রান্ত যে কয়েকটি হাদিস রয়েছে এখানে মহিলাদের উল্লেখ করা হয় নি পুরুষদেরই উল্লেখ করা হয়েছে যেমন – হযরত বেলাল (রা:)

( ফাৎহুল বারী ৩য় খণ্ড পৃষ্ঠা: ৬৩ , আল-উম্ম ১ম খন্ড পৃষ্ঠা: ৮৪ , বুখারী সহীহ হাদিস -৫৭৭, ৬০৪ ই ফা বা /৬০৪,৬৩২ আন্তঃ, মুসলিম সহীহ হাদিস – ৭২৩ ই ফা বা / ৩৭৭ আন্তঃ )

২। সালাতে মহিলা মাথা ঢেকে রাখবে, কিন্তু পুরুষের মাথা না ঢাকলেও সালাত হয়ে যাবে। মহিলাদের পায়ের গোড়ালী ঢেকে রাখতে হবে তা নাহলে সালাত সিদ্ধ হবে না। অপরদিকে পুরুষদের পায়ের গোড়ালী খোলা রাখতে হবে।

( তিরমিজী সহীহ হাদিস – ৩৭৭ ই ফা বা , ইবনু মাজাহ সহিহ হাদিস- ৬৫৫, আবূ দাঊদ সহিহ হাদিস – ৬৪০,৬৪১ ই ফা বা , মালেক, হাকেম )

৩। কোন মহিলা পুরুষদের ইমামতি করতে পারবে না, কিন্তু পুরুষরা নারী পুরুষ উভয়েরই ইমামতি করতে পারবে। মহিলা অবশ্য শুধু মহিলাদের জামায়াতে ইমামতি করতে পারবে।

( আবু দাঊদ হাসান হাদিস – ৫৯১,৫৯২ ই ফা বা  )

৪। মহিলা একজন হলেও ভিন্ন কাতারে দাঁড়াবে।

(বুখারী সহীহ হাদিস – ৬৯১ ই ফা বা /৭২৭ আন্তঃ)

৫। পুরুষ ইমামতি করলে কাতারের আগে একাকী দাড়াঁতে হবে, যদি ওজর না থাকে। কিন্তু মহিলা ইমাম হলে তাকে মহিলাদের কাতারের মাঝখানে দাঁড়াতে হবে। [বর্ণিত আছে যে, আয়েশা (রাঃ) এবং উম্মে সালমা (রাঃ) যখন মেয়েদের ফরয সালাত অথবা তারাবীহ এর সালাতে জামায়াতে ইমামতি করতেন তখন তাদের মাঝখানে দাঁড়াতেন]।

( আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ, মুহাল্লা ৩/১৭১-১৭৩)

৬। যদি ইমাম ভুল করে তাহলে মহিলাদেরকে হাত তালি দিয়ে বা উরুর উপর হাত মেরে সংকেত দিতে হবে। আর পুরুষদেরকে উচ্চঃস্বরে তাকবীর বলতে হবে।

( তিরমিজী সহীহ হাদিস – ৩৬৫ ই ফা বা, বুখারী সহীহ হাদিস – ৬৫০, ১১৩০, ১১৪৫ ই ফা বা/ ৬৮৪, ১২০৩, ১২১৮ আন্তঃ, মুসলিম সহীহ হাদিস – ৮৩৮ ই ফা বা /৪২২ আন্তঃ, আন নাসাঈ সহীহ হাদিস -১২১০, ১২১২ ই ফা বা )

৭। তাকবীরে তাহরীমার সময় পুরুষদের চাদর বা কম্বল ইত্যাদি হতে হাত বের করে কাঁধ বা কান পর্যন্ত উঠাতে হবে, অবশ্য ওজর না থাকলে। কিন্তু মহিলাদের চাদরের বা ওড়নার ভিতরে হাত রেখেই কাঁধ বা কান পর্যন্ত হাত উঠাতে হবে, তাকবীরের সময়ও এভাবে করতে হবে।

৮। মসজিদ হতে মহিলারা সালাত শেষ হলেই বের হয়ে যাবে, আর পুরুষরা পরে বের হবে।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৮২৪, ৮২৮ ই ফা বা/৮৬৬, ৮৭০-৭৫ আন্তঃ )

৯। হায়েজ-নেফাস চলাকালীন নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে নামাজ পড়তে হয়না এবং কি কাযা নামাজও নেই।

( বুখারী সহীহ হাদিস- ১৮২৭ ই ফা বা/১৯৫১ আন্তঃ, আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস- ৩৫০,৩৫১,৩৫২ ই ফা বা )

১০।  ফিতনার আশংকা না থাকলে নারীগণ মসজিদে যেতে পারবে কিন্তু খোশবু লাগিয়ে (বাইরে) বের হবে না।

( মুসলিম সহীহ হাদিস -৮৮২ ই ফা বা /৪৪৪ আন্তঃ )

১১।  মহিলাদের শরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ত কাপড়ে নামায আদায় না করা।

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৩৬৭ ই ফা বা )

১২।  মহিলাদের পুরুষদের হতে পৃথক পথে মসজিদে প্রবেশ করবে।

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৪৬২, ৫৭১ ই ফা বা  )

১৩।  মহিলারা যদি মসজিদে যায় তাহলে তারা খুশবু (সুগন্ধি) ব্যবহার করবে না।

( আবু দাঊদ হাসান হাদিস- ৫৬৫ ই ফা বা, মুসলিম সহীহ হাদিস- ৮৮২ ই ফা বা / ৪৪৪ আন্তঃ)

১৪।  মহিলাদের মসজিদের চাইতে নিজের ঘরে নামাজ আদায় করা উত্তম এবং কি বৈঠক খানা থেকে নিজ রুমে এক কোনায় নামাজ আদায় আরো উত্তম ।

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস – ৫৬৭, ৫৭০ ই ফা বা )

১৫।  ঋতু বর্তী মহিলা এবং পর্দানশীল মহিলারা ঈদের মাঠে দোয়ায় শরিক হবে কিন্তু সলাতের স্থান থেকে দূরে থাকবে।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৩৪৪ ই ফা বা/৩৫১ আন্তঃ )

১৬।  ইকরিমা (রহঃ) বলেনঃ যদি একটি কাপড়ে মহিলার সমস্ত শরীর ঢেকে যায় তবে তাতেই সালাত জায়েয হবে। আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এমন ভাবে চাদর দিয়ে শরীর ডাকত, তাঁদের কেউ চিনতে পারত না।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৩৬৫ ই ফা বা/৩৭২ আন্তঃ )

১৭।  মসজিদে যাওয়ার জন্য স্বামীর নিকট মহিলার অনুমতি চাওয়া।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৮৩১ ই ফা বা/৮৭৩ আন্তঃ )

১৮।  মহিলাদের ওযুর ক্ষেত্রেও কোন পার্থক্য নেই।

( আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ১০০  ই ফা বা )

১৯। ইমামের সাথে জামাতে নামায আদায়কালে মহিলারা পুরুষদের পড়ে সিজদা থেকে মাথা তুলবে।

( আবু দাঊদ সহীহ হাদিস -৮৫১ ই ফা বা )

উপরোক্ত বাহ্যিক করণীয় বিষয়গুলো ব্যতীত সহীহ সিত্তা হাদিস গ্রন্থ গুলোতে অন্য কোন পার্থক্য পুরুষ ও মহিলাদের নামাজে নেই। পুরুষ-মহিলাদের সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থাৎ তাকবীরে তাহরীমা, হাত বাঁধা, রুকু, সিজদাহ, উঠা-বসা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কোন পার্থক্য নেই। মহিলাদের সালাত আদায়ে আমাদের দেশে যে পার্থক্য প্রচলিত আছে তা সহীহ হাদীস ভিত্তিক তো নয়, বরং কতকগুলো যঈফ ও নিতান্ত দুর্বল হাদীস এবং অসমর্থিত লেখা বই হতে প্রচলিত হয়েছে।

সূচিপত্র (নামাজ শিক্ষা বই)……………

 

অনুগ্রহ  করে দ্বীনি দাওয়াতি কাজের স্বার্থে বেশি বেশি শেয়ার করুন ……………….

Leave a Reply