Skip to content

দাঁড়ি রাখার ইসলামের বিধান I Dari, beard

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

দাঁড়ি রাখা সংক্রান্ত ইসলামের বিধান

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন –    اِقۡرَاۡ بِاسۡمِ رَبِّکَ الَّذِیۡ خَلَقَ  – পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।

 

আসসালামু আলাইকুম, আমাদের সমাজে কিছু লোক রয়েছে যারা বলে থাকে দূর থেকে দাঁড়ি মুখে দেখা গেলেই হবে বা বুঝা গেলেই হবে  কিন্তু এই কথাটি একদম মিথ্যা এবং বানোয়াট।

সহীহ হাদিস গুলোতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে , দাঁড়ি বড় করতে, লম্বা করতে বা এক মুষ্টি পরিমান রাখতে  এবং গোফ ছোট বা খাটো করতে।

আমি নিম্নে আল-কোরআন এবং হাদিসের আলোকে দাঁড়ি সংক্রান্ত কিছু তথ্য উল্লেখ করেছি কষ্ট করে সবাই পড়ে নিয়েন  –

 

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন –

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰهَ وَ رَسُوۡلَهٗ وَ لَا تَوَلَّوۡا عَنۡهُ وَ اَنۡتُمۡ تَسۡمَعُوۡنَ

অর্থ – ওহে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর এবং আদেশ শোনার পর তা অমান্য কর না।

( সূরা – আনফাল আয়াত – ২০ )

 

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন –

دُوۡلَۃًۢ بَیۡنَ الۡاَغۡنِیَآءِ مِنۡکُمۡ ؕ وَ مَاۤ اٰتٰىکُمُ الرَّسُوۡلُ فَخُذُوۡهُ ٭ وَ مَا نَهٰىکُمۡ عَنۡهُ فَانۡتَهُوۡا ۚ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ

অর্থ – রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও এবং আল্লাহকেই ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর।

( সূরা -হাশর  আয়াত – ৭ )

 

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন –

 یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوا الۡیَهُوۡدَ وَ النَّصٰرٰۤی اَوۡلِیَآءَ ۘؔ بَعۡضُهُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ ؕ وَ مَنۡ یَّتَوَلَّهُمۡ مِّنۡکُمۡ فَاِنَّهٗ مِنۡهُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یَهۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ

অর্থ – হে মুমিনগণ, ইয়াহূদী ও নাসারাদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদেরই একজন। নিশ্চয় আল্লাহ যালিম কওমকে হিদায়াত দেন না।

( সূরা মায়েদা আয়াত – ৫১)

 

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন –

 قَالَ یَبۡنَؤُمَّ لَا تَاۡخُذۡ بِلِحۡیَتِیۡ وَ لَا بِرَاۡسِیۡ ۚ اِنِّیۡ خَشِیۡتُ اَنۡ تَقُوۡلَ فَرَّقۡتَ بَیۡنَ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ وَ لَمۡ تَرۡقُبۡ قَوۡلِیۡ

অর্থ – সে বলল, ” হে আমার সহোদর! আমার দাড়িও ধরো না, মাথার চুলও ধরো না। আমি আশংকা করেছিলাম যে, তুমি বলবে, তুমি বনী ইসরাঈলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছ এবং আমার কথা রক্ষা করনি “।

( সূরা ত্বহা  আয়াত – ৯৪)

 

হাদিসের বাণী দাঁড়ি লম্বা রাখবে, গোঁফ ছোট করবে –

১।  দাঁড়ি লম্বা রাখবে, গোঁফ ছোট করবে –

মুহাম্মদ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করবেঃ দাঁড়ি লম্বা রাখবে, গোঁফ ছোট করবে। ইবনু উমর (রাঃ) যখন হাজ্জে (হজ্জ) বা উমরা করতেন, তখন তিনি তার দাঁড়ি খাট করে ধরতেন এবং মুটের বাইরে যতটুকু অতিরিক্ত থাকত তা কেটে ফেলতেন।

( বুখারী হাদিস – ৫৪৭২ ই ফা বা / ৫৮৯২ আন্তঃ)

 

২।  দাঁড়ি বড় রাখা –

মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা গোঁফ বেশী ছোট করবে এবং দাঁড়ি বড় রাখবে।

( বুখারী হাদিস – ৫৪৭৩ ই ফা বা / ৫৮৯৩ আন্তঃ)

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

 

৩।  দাঁড়ি বড় রাখা –

মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা গোঁফ কেটে ফেল এবং দাঁড়ি লম্বা কর।

( মুসলিম হাদিস – ৪৯৩, ৪৯৪, ৪৯৫, ৪৯৬ ই ফা বা / ২৫৯, ২৬০ আন্তঃ )

 

৪।  দাঁড়ি বড় রাখা –

আবূবকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা গোঁফ কেটে ফেল এবং দাঁড়ি লম্বা কর (এভাবেই) তোমরা অগ্নি পুজকদের বিরুদ্ধাচরণ কর।

( মুসলিম হাদিস – ৪৯৬ ই ফা বা/ ২৬০ আন্তঃ )

 

৫।  ফিতরাত ( তথা সুন্নাত ) পাঁচটি –

আবূত্‌ তাহির ও হারামালা ইবনু ইয়াইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফিতরাত পাঁচটি। খাতনা করা, নাভির নিচের পশম কাটা, গোঁফ ছাটা, নখ কাটা এবং বগলের পশম উপড়ে ফেলা।

( মুসলিম হাদিস – ৪৯১ ই ফা বা/ ২৫৭ আন্তঃ)

 

৬।  দশটি  স্বভাবসুলভ কাজ –

ইয়াহ্ইয়া ইবনু মুঈন …. আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেছেন, রাসুলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ দশটি কাজ স্বভাবজাতঃ ১। গোঁফ ছোট করা ২। দাড়ি লম্বা করা ৩। মেস্ওয়াক করা ৪। নাকের ছিদ্রে পানি প্রবেশ করান ৫। নখ কাটা ৬। উযূ (ওজু/অজু/অযু)-গোসলের সময় আংগুলের গিরা ও জোড়সমূহ ধৌত করা ৭। বগলের পশম পরিষ্কার করা ৮। নাভির নীচের লোম পরিস্কার করা ৯। পানির দ্বারা ইস্তিঞ্জা করা। রাবী যাকারিয়া বলেন, মূসআব বলেছেন, আমি দশম নম্বরটি ভুলে গিয়েছি; তবে সম্ভবত তা হল কুলকুচা করা।

( আবু দাঊদ হাদিস – ৫৩ ই ফা বা )

 

৭।  দাড়ি বাড়াও এবং গোঁফ খাটো করো –

আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করো। অর্থাৎ- দাড়ি বাড়াও এবং গোঁফ খাটো করো। অপর এক বর্ণনায় আছে, গোঁফ ছেঁটে নাও এবং দাড়ি লম্বা করো।

( মিশকাত হাদিস – ৪৪২১ ই ফা বা )

 

৮।  স্বভাবসিদ্ধ সুন্নতসমূহ দশটি –

মুহাম্মাদ ইবন আবদুল আ’লা (রহঃ) … তালক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। দশটি কাজ জন্মগত নিয়মাধীনঃ মিসওয়াক করা, মোচ কাটা, নখ কাটা, আংগুলের গাঁট ও চিপা ধৌত করা, নাভির নিচের পশম মুন্ডানো, নাকে পানি দেওয়া, রাবী বলেন, আমার সন্দেহ হয় যে, তিনি কুল্লি করার কথাও বলে থাকবেন।

( আন-নাসাঈ হাদিস – ৫০৪০ ই ফা বা  )

 

 ৯। ফিতরাত বা স্বভাবজাত কার্যের বর্ণনা –

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দশটি জিনিস ফিতরাত বা স্বভাবজাত। মোচ কাটা, দাঁড়ি বাড়ানো, মিসওয়াক করা, নাকের ছিদ্র পানি দিয়ে পরিষ্কার করা, নখ কাটা, আঙ্গুলের সংযোগ স্থলের ময়লা ধুয়ে ফেলা, বগলের লোম উপড়ে ফেলা, নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা ও পানি দিয়ে শৌচ করা। যাকারিয়া (রহঃ) বলেন, মুসআব (রহঃ) বলেছেন, আমি দশম জিনিসের কথা ভুলে গেছি, সেটি হয়তো কুলি করা।

( ইবনে মাজাহ হাদিস – ২৯৩ )

Related Links / সম্পর্কিত লিংক –

১। নামাজ আদায়ের পদ্ধতি বিস্তারিত।

২। বিতরের নামাজ।

৩। নফল নামাজ।

৪। রাতের নামাজ।

৫। মহিলাদের নামাজ।

৬। নামাজের নিষিদ্ধ সময়।

৭। নামাজের সকল অধ্যায়

নামাজের অধ্যায়ের সূচিপত্র/Table of Contents of Prayers …………..

 

দ্বীনি কাজের স্বার্থে আমরা সবাই এই পোষ্টটি বেশি করে শেয়ার করব ইনশাআল্লাহ।

আলহামদুলিল্লাহ , আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে যেন সহীহ হাদিস অনুসারে নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করেন ।

 

আমিন

Leave a Reply