বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
পবিত্রতা
গোসলের মাসলা মাসায়েল
ইসলামী শরীয়তে গোসল কি ?
আসসালামু আলাইকুম , শারীরিক পবিত্রতা অর্জনের তিনটি পদ্ধতি হচ্ছে অজু, গোসল ও তায়াম্মুম। গোসল হলো সর্ববৃহৎ ও পরিপূর্ণ পবিত্রতা; যেটি এমন একটি ইবাদত, যার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ পবিত্রতা অর্জনের পাশাপাশি দেহ-মনে বিশেষ প্রশান্তি লাভ হয়, শরীরের শ্রান্তি–ক্লান্তি দূর হয়, মন প্রফুল্ল ও চিত্ত প্রসন্ন হয়, সঙ্গী ফেরেশতারা স্বস্তি লাভ করে, শয়তান ও শয়তানি ওয়াসওয়াসা বিদূরিত হয়, রুহ শান্তি পায় এবং নফস কলুষমুক্ত হয়। সর্বোপরি সব পাপ-পঙ্কিলতা মুক্ত হয়, ইবাদতে আগ্রহ ও মনোনিবেশ বৃদ্ধি হয়।
আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্রতা পছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন –
وَ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ الۡمَحِیۡضِ ؕ قُلۡ هُوَ اَذًی ۙ فَاعۡتَزِلُوا النِّسَآءَ فِی الۡمَحِیۡضِ ۙ وَ لَا تَقۡرَبُوۡهُنَّ حَتّٰی یَطۡهُرۡنَ ۚ فَاِذَا تَطَهَّرۡنَ فَاۡتُوۡهُنَّ مِنۡ حَیۡثُ اَمَرَکُمُ اللّٰهُ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ
অর্থঃ ” আর তারা তোমাকে হায়েয সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা কষ্ট। সুতরাং তোমরা হায়েযকালে স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন তাদের নিকট আস, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।”
( সুরা বাকারা আয়াত: ২২২ )
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন –
لَا تَقُمۡ فِیۡهِ اَبَدًا ؕ لَمَسۡجِدٌ اُسِّسَ عَلَی التَّقۡوٰی مِنۡ اَوَّلِ یَوۡمٍ اَحَقُّ اَنۡ تَقُوۡمَ فِیۡهِ ؕ فِیۡهِ رِجَالٌ یُّحِبُّوۡنَ اَنۡ یَّتَطَهَّرُوۡا ؕ وَ اللّٰهُ یُحِبُّ الۡمُطَّهِّرِیۡنَ
অর্থঃ ” তুমি সেখানে কখনো (সালাত কায়েম করতে) দাঁড়িও না। অবশ্যই যে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাকওয়ার উপর প্রথম দিন থেকে তা বেশী হকদার যে, তুমি সেখানে সালাত কায়েম করতে দাঁড়াবে। সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালবাসে। আর আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন।।”
( সুরা তাওবা আয়াত: ১০৮ )
ইসলামি শরিয়াহ মতে, পাঁচটি আমল সম্পাদনের জন্য পবিত্রতা ফরজ-
ক। সলাত আদায় করা ( সূরা আন-নিসা আয়াত – ৪৩) ।
খ। কোরআন স্পর্শ করা ( সূরা আল-ওয়াকি আহ আয়াত নং- ৭৯) ( দারে কুতনী হাদিস – ৪৩১) ।
গ। কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। ( নাসাঈ সহীহ হাদিস – ৩৪৯ ই ফা বা ) ।
ঘ। কুরআন তিলাওয়াত করা। ( তিরমিজী যঈফ হাদিস – ১৪৬ ই ফা বা ) ।
ঙ । মসজিদে অবস্থান করা । ( আবু দাঊদ যঈফ হাদিস – ২৩২ ই ফা বা , ইবনে মাজাহ )
সূচিপত্র (নামাজ শিক্ষা বই)……………
গোসলের প্রকারভেদ ও নিয়ম –
ক. ফরজ গোসল
খ. সুন্নাত গোসল
গ. ওয়াজিব গোসল
ঘ. মুস্তাহাব গোসল
ক. ফরজ গোসল –
ক। জানাবাত তথা যৌন মিলনের পর। ( সূরা নিসা আয়াত – ৪৩)
খ। মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধের পর। ( সুরা বাকারা আয়াত – ২২২)
গ। সন্তান জন্মদানের রক্ত বন্ধ হওয়ার পর। ( সূরা আন-নিসা আয়াত – ৪৩)
(মুসলিম সহীহ হাদিস – ৬৬৮, ৬৭৮ ই ফা বা / ৩৪৩ আন্তঃ, বুখারী সহীহ হাদিস – ২৮৭ ই ফা বা/২৯১ আন্তঃ)
ঘ। মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়া জীবিতদের ওপর ফরজ। (বুখারী সহীহ হাদিস – ১১৯৩ ই ফা বা / ১২৬৭ আন্তঃ )
গোসলের ফরজ তিনটি-
১. গড়গড়ার সহিত কুলি করা ।
২. নাকে নরম জায়গা পর্যন্ত পানি দেয়া ।
৩. সমস্ত শরীর পানি দিয়ে দৌত করা যাতে চুল পরিমাণও শুকনো না থাকে।
ফরজ গোসলের পরিপূর্ণ পদ্ধতি বা মসনুন পদ্ধতি –
১। মনে মনে জানাবত (স্ত্রী-সঙ্গম, স্বপ্নদোষ,ঋতুস্রাব ও প্রসব ইত্যাদি নিমিত্ত যে নাপাকি) দূর করার বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম বলে নিয়ত করা।
২। প্রথমে তাঁর হাত দু’টো ধুয়ে নিতেন। (বুখারী সহীহ হাদিস -২৪৮ তাওহীদ পাবলিকেশন )
৩। লজ্জাস্থানে লেগে থাকা নাপাকি ধুয়ে ফেলা।(বুখারী সহীহ হাদিস -২৫৫ ই ফা বা /২৫৭ আন্তঃ )
৪। অতঃপর নামাজের অজুর ন্যায় পূর্ণাঙ্গ অজু করা পা ধুলায় ব্যতীত । (বুখারী সহীহ হাদিস -২৪৬ ই ফা বা /২৪৮ আন্তঃ )
৫। নবী (সা:) আঙ্গল গুলো পানিতে ডুবিয়ে নিয়ে চুলের গোড়া খিলাল করতেন।(বুখারী সহীহ হাদিস -২৪৬ ই ফা বা / ২৪৮ আন্তঃ)
৬। এরপর পানি দিয়ে তিনবার মাথা ভিজানো।(বুখারী সহীহ হাদিস -২৪৬ ই ফা বা /২৪৮ আন্তঃ )
৭। তারপর প্রথমে শরীরের ডান অংশে এবং পরে বাম অংশে পানি ঢালা।(সহীহ বুখারী হাদিস নং- ২৭৪, ২৫২, ২৪৭)
৮। অতঃপর সারা দেহে পানি ঢালা।(বুখারী সহীহ হাদিস -২৫৫, ২৬৩ ই ফা বা /২৫৭ আন্তঃ )
৯। গোসল শেষে এই দোয়া পড়া-
أَشْهَدُ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّه وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
১০। গোসলের স্থান থেকে সরে গিয়ে উভয় পা ধোয়া।(বুখারী সহীহ হাদিস -২৫৫, ২৬৩ ই ফা বা /২৫৭ আন্তঃ )
গোসল শেষে রুমাল বা গামছা ব্যবহার না করা –
আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রুমাল দেয়া হল, কিন্তু তিনি তা স্পর্শ করলেন না। তিনি পানি নিয়ে এরূপ করছিলেন অর্থাৎ পানি ঝেড়ে ফেলছিলেন।
( মুসলিম সহীহ হাদিস – ৬১৭ ই ফা বা/ ৩১৭ আন্তঃ )
খ. সুন্নাত গোসল-
১। জুমআর নামাজের গোসল। (বুখারী সহীহ হাদিস নং – ৮৭৩ ই ফা বা/৯১৯ আন্তঃ , আবু দাউদ সহীহ হাদিস – ৩৪০)।
২। দুই ঈদের নামাজের গোসল। (সুনানে ইবনে মাজা – হাদিস নং ১৩১৬)।
৩। হজ ও ওমরার ইহরামের জন্য গোসল।
৪। ইহরাম বাধার পর মক্কায় প্রবেশের (ফজরের নামাজের পর) পূর্বে গোসল করা। (বোখারী সহীহ হাদিস – হাদিস নং ১৪৭৮ ই ফা বা) ।
গোসলের সুন্নাত গুলো –
১। বিসমিল্লাহ বলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য গোসল করা ।
২। ধারাবাহিকতা বজায় রাখা ।
৩। ডান হাতে পানি নিয়ে উভয় হাত কবজি পর্যন্ত ধোয়া (সহীহ বুখারী হাদিস নং- ২৪৬) ।
৪। লজ্জাস্থান ধোয়া, শরীরের কোথাও নাপাকি থাকলে তা পরিস্কার করা
(সহীহ বুখারী হাদিস নং- ২৪৭) ।
৫। ওজু করা (সহীহ বুখারী হাদিস নং- ২৪৭) ।
৬। চুল খিলাল করা এবং চামড়া ভিজেছে কিনা নিশ্চিত হওয়ার পর তাতে পানি ঢালা (সহীহ বুখারী হাদিস নং- ২৭০)।
৭। সমস্ত শরীর ভালো করে ধোয়া। (সহীহ বুখারী হাদিস নং- ২৭৪,২৭৪,২৫২,২৪৭)
ক. প্রথমে ডান কাধের ওপর তিনবার পানি ঢালা ।
খ. দ্বিতীয়বার বাম কাঁধে তিন বার পানি ঢালা ।
গ. অতপর মাথা ও সমস্ত শরীরের ওপর তিনবার পানি ঢালা ।
৮। গোসলের স্থান থেকে সরে গিয়ে উভয় পা ধোয়া।(বুখারী সহীহ হাদিস -২৫৫, ২৬৩ ই ফা বা /২৫৭ আন্তঃ ) ।
৯। গামছা বা রুমাল দিয়ে শরীর না মুছা। (বুখারী সহীহ হাদিস – ২৬৩ ই ফা বা / ২৬৫ আন্তঃ) ।
গ. ওয়াজিব গোসল –
১। মযী বের হলে(গোসল ওয়াজিব নয়)ধুয়ে ফেলা ও অযু করা। (বোখারী হাদিস নং- ২৬৭)
২। দুই লজ্জাস্থান পরস্পর একত্রে মিলিত হলে। (বোখারী হাদিস নং- ২৮৭)
গোসলের আহকাম সমূহ –
১। উচু স্থানে বসে পোসল করা যাতে পানি গড়িয়ে যায় ও গায়ে ছিটা না লাগে।
২। পানির অপচয় না করা ।
৩। বসে গোসল করা ।
৪। লোক সমাগম স্থানে গোসল না করা ।
৫। পাক জায়গায় গোসল করা ।
৬। ডান থেকে শুরু করা ।
৭। পর্দা করে গোসল করা ।
সূচিপত্র (নামাজ শিক্ষা বই)……………
ঘ. মুস্তাহাব গোসল –
১। যাইদ ইবনু সাবেদ (রা:) হতে বর্ণিত আছে , রাসূলুল্লাহ (সা:) তিনি ইহরামের উদ্দেশ্যে (সেলাই করা)পোশাক খুলতে এবং গোসল করতে দেখেছেন। – (সহীহ তা’লিকাতুল জিয়াদ, মিশকাত তাহকীক ছানী , আল হাজ্জুল কবীর (২৫৪৭)
এই হাদীস টিকে আবু ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। ইহরাম বাধার পূর্বে গোসল করাকে একদল আলিম মুস্তাহাব বলেছেন। এই মত ঈমাম শাফিঈর।
২। হজ্জ বা উমরা আদায়ের উদ্দেশ্যে ইহরামের পূর্বে গোসল করা। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
৩। আরাফার দিন গোসল করা। (বোখারী সহীহ হাদিস নং- ১৫৫৭ ই ফা বা,
সুনানে ইবনে মাজা জাল হাদিস – ১৩১৬)
তাহক্বীক্ব আলবানী: মাওযু। তাখরীজ আলবানী: জামি সগীর ৪৫৯০ যঈফ। উক্ত হাদিসের রাবী ইউসুফ বিন খালিদ সম্পর্কে ইমাম শাফিঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে না কারণ তিনি মিথ্যুক। আমর বিন ফাল্লাস ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি মিথ্যা কথা বলেন। ইমাম বুখারী তার ব্যাপারে চুপ থেকেছেন। ২. আব্দুর রহমান বিন উকবাহ আল ফাকিহ বিন সা‘দ সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত।
৪। মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেয়ার পর গোসল করা। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মৃত ব্যক্তিকে গোসল করাল সে যেন গোসল করে।’ (বর্ণনায় ইবনে মাজাহ)
মালিক ইবনে আনাস (রাহঃ) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানোর পর নিজে গোসল করা মুস্তাহাব। একই মত দিয়েছেন ঈমাম শাফিঈ (রাহঃ) ।
৫। সাধারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উদ্দেশ্যে গোসল করা।
৬। যে কোন কাফের ইসলাম গ্রহণ করলে তার উপর গোসল মুস্তাহাব।
( আবু দাউদ ১ম খন্ড – হাদিস নং ৩৫৫, বুখারী সহীহ হাদিস – ৪৪৮ ই ফা বা )
গোসলের পানির ধরণ –
পবিত্র পানি দিয়ে গোসল করা।
যেমনঃ-
১। বৃষ্টির পানি
২। কূয়ার পানি
৩। ঝর্ণা, সাগর বা নদীর পানি
৪। বরফ গলা পানি
৫। বড় পুকুর বা টেঙ্কের পানি
(আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ৫৯, ৬০, ৬২, ৬৮, ৭০ ই ফা বা )
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ “এবং আমি আকাশ হতে বিশুদ্ধ পানি বর্ষণ করি”
(২৫: ৪৮)। “এবং আকাশ হতে তোমাদের উপর বারি বর্ষণ করেন তদ্বারা তোমাদের পবিত্র করার জন্য” (৮: ১১)। “এবং যদি পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করবে” (৮: ১১)।
অপবিত্র পানি যেই পানি দিয়ে গোসল করা যাবে না তা হলঃ
যেমনঃ-
১। অপরিচ্ছন্ন বা অপবিত্র পানি
২। ফল বা গাছ নিসৃতঃ পানি
৩। কোন কিছু মিশানোর কারণে যে পানির বর্ণ, গন্ধ, স্বাদ এবং গারত্ব পরিবর্তিত হয়েছে।
৪। অল্প পরিমাণ পানি: যাতে অপবিত্র জিনিস মিশে গেছে (যেমনঃ মূত্র, রক্ত, মল বা মদ)।
৫। অযু বা গোসলের ব্যবহৃত পানি।
৬। অপবিত্র (হারাম) প্রাণী, যেমনঃ শূকর, কুকুর ও আন্যান্য হিংস্র প্রানীর পানকৃত পানির আবশিষ্ট।
বগলের লোম উপড়ে ফেলা, গোঁফ ছাঁটা,নাভীর নিচে লোম চাছা, নখ কাটা এ কাজগুলোর মেয়াদকাল –
কুতায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আমাদের জন্য গোঁফ ছাঁটা, নখ কাটা, নাভীর নিম্নভাগের লোম চেঁছে ফেলার ও বগলের পশম উপড়ে ফেলার মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যে, আমরা যেন এ কাজগুলো চল্লিশ দিনের বেশী সময় পর্যন্ত ফেলে না রাখি। রাবী বলেন, আরেকবার চল্লিশ রাতের কথাও বলেছেন।
( আন-নাসাঈ সহীহ হাদিস – ১৪ ই ফা বা , ইবনু মাজাহ হাদিস – ২৯৫,মুসলিম ৪৯২ ই ফা বা /২৫৮ আন্তঃ , তিরমিজী সহীহ হাদিস – ২৭৫৮ ই ফা বা, আবূ দাঊদ সহীহ হাদিস – ৪২০০ তাহকীককৃত )
মহিলা গোসলকারিণীর বেণীর হুকুম –
ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) … উবায়দ ইবনু উমায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) এর কাছে সংবাদ পৌছল যে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) মাহীলাদেরকে গোসলের সময় মাথার চুল (বেনী) খুলে ফেলতে আদেশ দেন। তিনি (আয়িশা (রাঃ) বললেন, ইবনু আমরের পক্ষে এ বড়ই আশ্চর্য যে, সে মহিলাদেরকে গোসলের সময় তদের চুল খুলে ফেলার আদেশ দেয়। সে তাদেরকে একেবারে মাথা মুড়ে ফেলতে আদেশ দেয় না কেন! আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে গোসল করতাম। আমি আমার মাথায় তিনবার পানি ঢেলে দেয়ার বেশী কিছু করতাম না।
( বুখারী সহীহ হাদিস – ৬৪০ ই ফা বা/ ৩৩১ আন্তঃ)
জানাবাত (জুনুবী ) কি ?
জানাবাত মানে হলো, নাপাক ব্যক্তি। আর জানাবাতের গোসল মানে, নাপাক ব্যক্তির গোসল করার নিয়ম। নাপাক ব্যক্তির গোসল করার নিয়ম: সহীহ বুখারী এর ২৫৭ নং হাদীসে জানাবাতের গোসলের বিবরণ সুন্দরভাবে দেয়া আছে। আর তা হলো, উমর ইবনে হাফস ইবনে গিয়াস রহ……..ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, মায়মূনা রা. বলেন : আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর জন্য গোসলের পানি ঢেলে রাখলাম। তিনি তাঁর ডান হাত দিয়ে বা হাতে পানি ঢাললেন এবং উভয় হাত ধুইলেন। এরপর তাঁর লজ্জাস্থান ধুয়ে নিলেন এবং মাটিতে তাঁর হাত ঘষে নিলেন। পরে তা ধুয়ে কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন, তারপর তাঁর চেহারা ধুইলেন এবং মাথার উপর পানি ঢাললেন। পরে ঐ স্থান থেকে সরে গিয়ে দুই পা ধুইলেন। অবশেষে তাকে একটি রুমাল দেওয়া হল, কিন্তু তিনি তা দিয়ে শরীর মুছলেন না। (সহীহ বুখারী – ২৫৭) “” পরে তা ধুয়ে কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন, তারপর তাঁর চেহারা ধুইলেন এবং মাথার উপর পানি ঢাললেন।”” এখানে আলেমগণের মতে, ওযূ করতে হবে। কেননা ওযূ করলে উপরোক্ত কাজগুলো হয়ে যাবে। তবে দু’পা পরে ধৌত করবে। কেননা নবী (সা.) পরে ধৌত করেছেন। আর মাথার উপর পানি ঢালতে হবে তিনবার। যাতে করে মাথার চুল ভালভাবে ভিজে যায়। তারপর সমস্ত শরীর ধৌত করতে হবে।
সূচিপত্র (নামাজ শিক্ষা বই)……………
অনুগ্রহ করে বেশি বেশি শেয়ার করুন ……………….