Skip to content

নফল নামাজ / Nafal Salat

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

নফল নামাজ

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন –    اِقۡرَاۡ بِاسۡمِ رَبِّکَ الَّذِیۡ خَلَقَ  – পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।

 

নফল নামাজ –

ইশরাক , চাশত, আওয়াবিন , সলাতুত হাজত এবং সলাতুত তসবীহ এর সলাত –

নফল নামাজ: আসসালামু আলাইকুম, নফল ইবাদত হলো ইসলামে এমন কিছু কাজ যা ফরজ বা ওয়াজিবের মতো বাধ্যতামূলক নয়, তবে সেগুলো করলে পাপ না হয়ে বরং সওয়াব বা নেকী অর্জন হয়। ফরজ নামাজের পাশাপাশি, মুসলমানরা নফল নামাজও পড়তে পারে। নফল নামাজের অনেক রকম রয়েছে, যেমন সুন্নাত নামাজ, নফল তাহাজ্জুদ নামাজ, এবং ওয়াক্তিয়া নামাজ। আল্লাহকে স্মরণ করা: মুসলমানরা বিভিন্নভাবে আল্লাহকে স্মরণ করতে পারে, যেমন জিকির,তাসবিহ, এবং দোয়া পড়া।

 

মহান আল্লাহতায়ালা বলেন –

اُتۡلُ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ مِنَ الۡکِتٰبِ وَ اَقِمِ الصَّلٰوۃَ ؕ اِنَّ الصَّلٰوۃَ تَنۡهٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ لَذِکۡرُ اللّٰهِ اَکۡبَرُ ؕ وَ اللّٰهُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ

অর্থ – তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে তিলাওয়াত কর এবং সালাত কায়েম কর। নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর।

( সূরা আন-কাবুত আয়াত- ৪৫)

 

মহান আল্লাহতায়ালা অন্য আরেকটি আয়াতে বলেন –

فَاِذَا قَضَیۡتُمُ الصَّلٰوۃَ فَاذۡکُرُوا اللّٰهَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی جُنُوۡبِکُمۡ ۚ فَاِذَا اطۡمَاۡنَنۡتُمۡ فَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ ۚ اِنَّ الصَّلٰوۃَ کَانَتۡ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ کِتٰبًا مَّوۡقُوۡتًا

অর্থ – অতঃপর যখন তোমরা সালাত পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।

( সূরা আন-নিসা আয়াত- ১০৩ )

 

মহান আল্লাহতায়ালা অন্য আরেকটি আয়াতে বলেন –

لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰهِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰهَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَکَرَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا

অর্থ – অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।

( সূরা আল-আহযাব আয়াত- ২১ )

আযান ইকামতের মধ্যে নফল নামাজ পড়া –

ইসহাক ওয়াসিতী (রহঃ) … আবদুল্লাহ‌ ইব্‌ন মুগাফ্‌ফাল মুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক আযান ও ইকামতের মধ্যে সালাত (নামায/নামাজ) রয়েছে। একথা তিনি তিনবার বলেন। (তারপর বলেন) যে চায় তার জন্য।

( বুখারী সহীহ হাদিস – ৫৯৬ ই ফা বা/৬২৪ আন্তঃ, ইবনে মাজাহ: ৭৯৩)

 

ইশরাক ও চাশতের নামাজের সময় ও নিয়ম –

ইশরাক  নামাজের সময় –

ইশরাক- ইশরাক শব্দের অর্থ- (সূর্যোদয়, প্রভাত, আলো, দীপ্তি বা পবিত্র সকাল)

ইশরাক, চাশত বা দুহা, আওয়াবিন , তাহাজ্জুত — এসব নফল নামাজেরই ভিন্ন ভিন্ন নাম। নবীজি (স.) উম্মতকে ইশরাক, চাশতের, আওয়াবিন ও তাহাজ্জুত নামাজ আদায় করতে উৎসাহ দিয়েছেন। চাশতের নামাজকে সালাতুদ দুহাও বলা হয়। ইশরাকের পরপরই চাশত বা দুহার সময় শুরু হয়। এসব নামাজের ওয়াক্ত হলো সূর্য উদিত হওয়ার ১৫-২০ মিনিট পর থেকে দ্বিপ্রহরের ৫-১০ মিনিট আগ পর্যন্ত। ইশরাকের উত্তম সময় হলো, বেলা ওঠার এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে।আওয়াবীনের নামাজ মাগরিবের পর পড়া হয় এবং  তাহাজ্জুত এর নামাজ রাতের শেষ ভাগে পড়া হয়।

ইশরাক নামাজের ফজিলত –

ক।  আবদুল্লাহ ইবনু মু’আবিয়া আল-জুমহী আল-বসরী (রহঃ) …… আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জামাআতের সাথে ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে সূর্যোদয় পর্যন্ত সেখানে বসে আল্লাহর যিকর করবে এবং এরপর দু’রাকআত সালাত আদায় করবে, তার জন্য একটি হজ্জ ও উমরা পালনের সওয়াব হবে। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহ বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ ব্যক্তির জন্য হজ্জ ও উমরার পরিপূর্ণ সওয়াব হবে, পরিপূর্ণ সওয়াব হবে, পরিপূর্ণ সওয়াব হবে।

(তিরমিজি হাদিস হাসান – ৫৮৬ ই ফা বা, তা’লীকুর রাগীব ১/১৬৪, ১৬৫, মিশকাত- ৯৭১)

ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান-গারীব। আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল আল-বুখারী (রহঃ) কে রাবী আবূ যিলাল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ ইনি হাদীসের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যের নিকটবর্তী। তিনি আরো বলেনঃ এর নাম হ’ল হিলাল।

সূচিপত্র ( নামাজ শিক্ষা বই )……………

চাশতের নামাজের সময় –

চাশত – চাশত শব্দের আরবি অর্থ – “দুহা” শব্দের অর্থ প্রভাত সূর্যের ঔজ্জল্য, যা সূর্য স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে শুরু হয়। এই সালাত প্রথম প্রহরের পর থেকে দ্বিপ্রহরের পূর্বেই পড়া হয় বলে একে “সালাতুদ দুহা” বা “চাশতের সালাত” বলা হয়।

হাদিসের বর্ণনায় –

ক। চাশত বা দুহার নামাজ আদায় করতে হয় সূর্য মধ্য আকাশে স্থির হওয়ার আগ মুহূর্তে। ‘দুহা’ শব্দের অর্থ ‘প্রভাত সূর্যের ঔজ্জ্বল্য’, যা সূর্য স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে শুরু হয়। সুতরাং দুহা বা চাশতের নামাজ সূর্যের তাপ যখন প্রখর হতে শুরু করে তখন এই নামাজ আদায় করা উত্তম। কেননা, নবী কারিম (স.) বলেছেন, صلاة الأوابين حين ترمض الفصال ‘চাশতের নামাজ পড়া হবে যখন সূর্যের তাপ প্রখর হয়।’

(মুসলিম সহিহ – ১৬১৯ ই ফা বা /৭৪৮ আন্তঃ )

চাশতের নামাজের নিয়ম-

চাশতের নামাজের নিয়ম সাধারণ নফল নামাজের মতো। সূর্য এক-চতুর্থাংশ উপরে উঠলে, সাধারণত, গ্রীষ্মকালে ৯টা-১০টা, আর শীতকালে ১০টা-১১টার সময় সাধারণত তা আদায় করা হয়। কোনো সুন্নত নামাজে যেমন দুই রাকাত পড়ে ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে থাকেন, এখানেও তেমনই। ইশরাক নামাজের নিয়ম চাশতের নামাজের মতোই।

চাশতের নামাজের ফজিলত –

ক।  আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আসমা আয-যুবাঈ (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন ভোরে উঠে, তখন তার প্রতিটি জোড়ার উপর একটি সাদাকা রয়েছে। প্রতি সূবহানাল্লাহ সাদাকা, প্রতি আলহামদুলিল্লাহ সাদাকা, প্রতি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ সাদাকা, প্রতি আল্লাহু আকবার সাদাকা, আমর বিল মা’রুফ (সৎকাজের আদেশ) সাদাকা, নাহী আনিল মুনকার (অসৎকাজের নিষেধ) সাদাকা। অবশ্য চাশতের সময় দু রাকআত সালাত আদায় করা এ সবের পক্ষ থেকে যথেষ্ট।

(মুসলিম সহীহ হাদিস – ১৫৪৪ ই ফা বা , কিতাবুল ‘আদাব’হাদীস নং- ৫২২২)

সূচিপত্র ( নামাজ শিক্ষা বই )……………

আওয়াবিন এর সলাত –

আওয়াবিন শব্দের অর্থ – “প্রত্যাবর্তনকারী ” আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারীদের সালাত।

হাদিসের বর্ণনায় –

ক।  যখন উটের বাচ্চা গরম অনুভব করে (দিনের উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়) তখনই সালাতুল আওওয়াবীন (চাশতের সালাতের সময়)-

যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ….. কাসিম আশ শায়বানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যায়দ ইবনু আরকাম (রাযিঃ) একদল লোককে ’যুহা’ বা চাশতের সালাত আদায় করতে দেখে বললেনঃ এখন তো লোকজন জেনে নিয়েছে যে, এ সময় ব্যতীত অন্য সময় সালাত আদায় করা উত্তম বা সর্বাধিক মর্যাদার। কেননা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’সালাতুল আওয়াবীন’ বা আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী বান্দাদের সালাতের সময় হ’ল তখন সূর্যতাপে উটের বাচ্চাদের পা গরম হয়ে যায়।

(মুসলিম সহীহ হাদিস – ১৬৩১ হাদিস একাডেমি/৭৪৮ আন্তঃ)

খ। মাগরিবের সালাতের পর ছয় রাক‘আত (আওয়াবীন) সালাত।

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি মাগরিবের সালাতের পর ছয় রাকআত নফল সালাত (নামায/নামাজ) পড়লো এবং তার মাঝখানে কোন মন্দ কথা বলেনি, তাকে বারো বছরের ইবাদাতের সম-পরিমাণ সওয়াব দান করা হলো।

(সুনান ইবনে মাজাহ যঈফ হাদিস  – ১১৬৭ , ১৩৭৪, তিরমিজী যঈফ হাদিস – ৪৩৫ ই ফা বা , মিশকাত যঈফ হাদিস – ১১৭৩, তারগীব যঈফ হাদিস- ৩৩১ )

উক্ত হাদিসের রাবী ১. আবুল হুসায়ন আল উকলী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। উসমান বিন আবু শায়বাহ তাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন সালিহ আল মিসরী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ২. উমার বিন আবু খাসআম আল ইয়ামামী সম্পর্কে ইমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না।

নোটঃ আওয়াবীনের নামাজের যে সময় (মাগরিবের নামাজের পর) উল্লেখ করা হয়েছে এবং রাকাতের সংখ্যা (২,,,৮)উক্ত হাদিস গুলো বিভিন্ন মোহাদীসরা খুবই দুর্বল বলেছেন।

সলাতুল হাজত এর সলাত –

এ নামাজকে সালাতুল হাজত বা “প্রয়োজনের মুহূর্তের” নামাজ বলা হয়। মানুষের বিশেষ কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে কিংবা শারীরিক-মানসিকভাবে কোনো দুশ্চিন্তা দেখা দিলে এ নামাজ পড়তে হয়।

মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে  বলেন,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ

অর্থঃ ” সঙ্গত কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য বান্দা নিজ প্রভুর কাছে ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করবে।”

(সুরা আল-বাকারা আয়াত : ১৫৩)

সলাতুল হাজত নামাজের নিয়ম –

এই নামাজের আলাদা কোনো নিয়ম নেই। স্বাভাবিক নামাজের মতোই দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে। চাইলে চার রাকাতও পড়া যাবে। নামাজ শেষে আল্লাহ তাআলার হামদ ও ছানা (প্রসংসা) এবং নবী করিম (সা.)-এর ওপর দরুদ শরিফ পাঠ করে— নিজের মনের কথা ব্যক্ত করে আল্লাহর নিকট দোয়া করবে।

হাদিসের বৰ্ণণায় –

আলী ইবনু ঈসা ইবনু ইয়াযীদ আল-বাগদাদী (রহঃ) ….. ফায়েদ ইবনু আবদির রহমান ইবনু আবদিল্লাহ্ ইবনু আবী আওফা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে, আল্লাহর কাছে বা কোন আদম-সন্তানের কাছে যদি কারো কোন প্রয়োজন হয় তবে সে যেন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে এবং খুব সুন্দরভাবে যেন তা করে। পরে যেন দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, এরপর যেন আল্লাহর হামদ করে ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ সালামের পর এই দু’আটি পড়েঃ

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَ تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ

অর্থ – আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি অতি সহিষ্ণ ও দয়ালু, সকল দোষ-ক্রটি থেকে পবিত্র তিনি, মহান আরশের প্রভু। সকল প্রশংসা আল্লাহর, তিনি সারা জাহানের রব। আপনার কাছেই আমরা যাঞ্ছা করি, আপনার রহমত আকর্ষণকারী সকল পূণ্যকর্মের ওয়াসীলায়, আপনার ক্ষমা ও মাগফিরাত আকর্ষণকারী সকল ক্রিয়াকাণ্ডের বরকত, সকল নেক কাজ সাফল্য লাভের এবং সব ধরনের গুনাহ থেকে নিরাপত্তা লাভের। আমার কোন গুনাহ যেন মাফ ছাড়া না থাকে। কোন সমস্যা যেন সমাধান ছাড়া না যায় আর আমার এমন প্রয়োজন যাতে রয়েছে আপনার সন্তুষ্টি তা যেন অপূরণ না থাকে, হে আর রাহমানুর রাহিমীন; হে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।

( তিরমিজী যঈফ হাদিস- ৪৭৯ ই ফা বা , ইবনে মাজাহ যঈফ- ১৩৮৪, মিশকাত যঈফ হাদিস- ১৩২৭, মুসতাদরাক লিল হাকিম – ১১৯৯ )

সলাতুত তাসবীহের্  সলাত –

তাসবীহ এর নামাজের শব্দের অর্থ – সালাতুত তাসবীহ (আরবি: صلاة تسبيح ‎), “তাসবীহের” নামাজ নামেও পরিচিত। সালাত শব্দের অর্থ নামাজ। আর তাসবিহ বলতে ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার’ এ শব্দগুলো বোঝানো হয়েছে।

سُبْحاَنَ الله وَالْحَمْدُ للهِ وَلآَ اِلَهَ اِلاَّاللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ

সালাতুত তাসবীহ এর নামাজ নফল নামাজের মতই পড়তে হয় কিছু নিয়ম রয়েছে এগুলো সহীহ হাদিসের বর্ণনায় নিন্মে আলোচনা করা হলো –

সালাতুত তাসবিহের নামাজের প্রত্যেক রাকাআতে সূরা ফাতিহা পাঠ করে তার সাথে যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে , ৭৫ বার তাসবিহ আদায়ের মাধ্যমে ৪ রাকাতে মোট ৩০০ বার তাসবিহ পড়তে হয়।

সালাতুত তাসবীহ এর নামাজ পড়ার নিয়ম –

সহীহ হাদিসের বর্ণনা –

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্বাস (রাঃ) ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) কে বললেনঃ হে আব্বাস! হে প্রিয় চাচাজান! আমি কি আপনাকে কিছু দান করবো না, আমি কি আপনার সাথে আত্নীয় সম্পর্ক বজায় রাখবো না, আমি কি আপনার অবাধ্য হতে বিরত থাকবো না, আমি কি আপনাকে এমন কলেমা বলে দিব না, যা পড়লে আল্লাহ আপনার আগের-পরের, নতুন-পুরান, ভুলক্রমে, স্বেচ্ছায়, ছোট-বড়, গোপন-প্রকাশ্য সব ধরনের গুনাহ মাফ করে দিবেন? সেই দশটি কলেমা হলোঃ

আপনি চার রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) পড়ুন এবং তার প্রতি রাকআতে সুরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরাহ পড়ুন। প্রথম রাকআতের কিরাআত পাঠ শেষ হলে দাঁড়ানো অবস্থায় আপনি পনেরবার বলুনঃ

আল্লাহ পবিত্র, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র। আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আল্লাহ মহান। অতঃপর আপনি রুকূ করুন এবং রুকূ অবস্থায় তা দশবার বলুন, অতঃপর রুকূ থেকে আপনার মাথা তুলে তা দশবার বলুন। অতঃপর আপনি সিজদায় যান এবং সিজদাবনত অবস্থায় তা দশবার বলুন, অতঃপর সিজদা থেকে আপনার মাথা তুলে তা দশবার বলুন, অতঃপর সিজদায় গিয়ে আবার তা দশবার বলুন, অতঃপর সিজদা থেকে আপনার মাথা তুলে তা দশবার বলুন। এভাবে তা প্রতি রাকআতে পঁচাত্তর বার হলো।

এ নিয়মে আপনি চার রাকআত সালাত পড়ুন। আপনি প্রতিদিন একবার এ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে সক্ষম হলে তাই করুন। আপনি তাতে সক্ষম না হলে প্রতি সপ্তাহে তা একবার পড়ুন। আপনি তাতেও সক্ষম না হলে প্রতি মাসে তা একবার পড়ুন। আপনি তাতেও সক্ষম না হলে অন্তত জীবনে তা একবার পড়ুন।

(ইবনে মাজাহ সহীহ  হাদিস – ১৩৮৭, আবু দাউদ সহীহ হাদিস – ১২৯৭ ই ফা বা,  ইবনে খুজাইমা সহিহ হাদিস – ১২১৬, সুনানে বায়হাকি কুবরা সহিহ হাদিস – ৪৬৯৫ )

সূচিপত্র (নামাজ শিক্ষা বই)……………

অনুগ্রহ করে বেশি বেশি শেয়ার করুন ……………….

Leave a Reply