Skip to content

হজ্জ পালনের ধারাবাহিক নিয়ম ?

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

Table of Contents

হজ্জ পালনের ধারাবাহিক নিয়ম ?

নোট …………

এই বিষয়বস্তুটিতে  যে হাদিস গ্রন্থের ( যেমনঃ বোখারী শরীফ, আবু দাউদ শরীফ  ইত্যাদি ), হাদিস গুলোর  উদাহরণ দেওয়া হয়েছে , এই হাদিস গ্রন্থ্য গুলো অনুবাদ এবং সংকলন করা হয়েছে, ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক ।

যারা এই হাদিস নাম্বার গুলো মিলাতে যাবেন অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, অনুবাদ এবং সংকলন যেন , ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক  হয়। তাহলে হাদিস গুলোর নাম্বার মিলবে।

হজ্জ পালনের ৫ দিনের ধারাবাহিক নিয়ম

৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত চলবে হজের কার্যক্রম ও আনুষ্ঠানিকতা। হজের ৫ দিনের করণীয় গুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলো-

হজ্জ কি ?

হজ্জ আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হলো – ইচ্ছে করা, ঘোরাফেরা করা, সংকল্প করা, পর্যবেক্ষণ করা ইত্যাদি।

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোরআন ও হাদিসের নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে কাবা শরিফ এবং নির্দিষ্ট স্থান সমূহে তাওয়াফ ও জিয়ারত করাকে হজ্জ বলে।

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো হজ্জ। এটি এমন ইবাদত যেখানে আর্থিক ও শারীরিক উভয়েই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানদের “একবার হজ্জ পালন করা ফরজ “।

যুহায়র ইব্ন হারব (র) ….. আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের উদ্দেশ্য ভাষণ দিলেন এবং বললেন : হে লোকসকল! তোমাদের উপর হজ্জ ফরজ করা হয়েছে। অতএব তোমরা হজ্জ কর। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! প্রতি বছর? রাসূলুল্লাহ (সা.) নীরব থাকলেন এবং সে তিনবার কথাটি বলল। …………………

(সহীহ মুসলিম : অধ্যায়ঃ হজ্ব হাদিস নং -৩১২৭)

হজ্জের সকল দোয়া…………………..

ইহরাম বাঁধার মীকাত ……………….

হজ্জ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহর নির্দেশ……………..

 فِيهِ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ مَقَامُ إِبْرَاهِيمَ ۖ وَمَنْ دَخَلَهُ كَانَ آمِنًا ۗ وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا ۚ وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ

 

অর্থ ……..

এতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে, যেমন মাকামে ইব্রাহীম। আর যে কেউ সেখানে প্রবেশ করে সে নিরাপদ। মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহ্ র উদ্দেশ্যে ঐ গৃহের হজ্জ করা তার অবশ্যকর্তব্য। আর কেউ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন।

(সূরা আল ইমরান আয়াত-৯৭)

হজ্জ
হজ্জ

হজের ধারাবাহিক কাজ গুলো  আগে পিছে করার বৈধতা

’আলী ইব্ন আব্দুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিনাতে কুরবানীর দিন জিজ্ঞাসা করা হত, তখন তিনি বলতেনঃ কোন দোষ নেই। তাঁকে এক সাহাবী জিজ্ঞাসা করে বললেন, আমি যবেহ (কুরবানী) করার আগেই মাথা কামিয়ে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ যবেহ করে নাও, এতে দোষ নেই। সাহাবী আরো বললেন, আমি সন্ধ্যার পর কংকর মেরেছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কোন দোষ নেই।

(বোখারী অধ্যায়-হজ্জ, হাদিস নং ১৬২৬)

ওমরা হজ্জ পালনের ধারাবাহিক নিয়ম ………..

নামাযের নিষিদ্ধ সময় ………….

হজ্জের ফরজ ৩টি ?

  • ইহরাম বাধা
  • উ’কুফে আ’রাফা (আরাফাতের ময়দানে অবস্থান)
  • তাওয়াফুয্ যিয়ারাত

হজ্জের ওয়াজিব ৬টি ?

(১) ‘সাফা ও মারওয়া’ পাহাড় দ্বয়ের মাঝে ৭ বার সায়ী করা।

(২) অকুফে মুযদালিফায় (৯ই জিলহজ্জ) অর্থাৎ সুবহে সাদিক থেকে সুর্যদয় পর্যন্ত একমুহুর্তের জন্য হলেও অবস্থান করা।

(৩) মিনায় তিন শয়তান (জামারাত) সমূহকে পাথর নিক্ষেপ করা।

(৪) ‘হজ্জে তামাত্তু’ ও ‘কি্বরান’ কারীগণ ‘হজ্জ’ সমাপনের জন্য দমে শোকর করা(হাদি {পশু}জবাই)।

(৫) এহরাম খোলার পূর্বে মাথার চুল মুন্ডানো বা ছাটা।

(৬) মক্কার বাইরের লোকদের জন্য তাওয়াফে বিদায় অর্থাৎ মক্কা থেকে বিদায়কালীন তাওয়াফ করা।

এছাড়া আর যে সমস্ত আমল রয়েছে সব সুন্নাত অথবা মুস্তাহাব

১। হজের ইহরাম (৮ জিলহজ) ?

মক্কার হারাম শরিফ বা বাসা-হোটেল বা ইহরামের নির্দিষ্ট স্থান থেকে  থেকে হজের নিয়তে ইহরাম বেঁধে মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া এবং জোহরের নামাজের আগেই মিনায় পৌঁছা। এখন অবশ্য ৭ তারিখে রাত থেকেই হাজিদের মিনায় নেওয়ার কাজ শুরু হয়।

  • নিজ বাসস্থান থেকে ইহরাম বেঁধে হজ্জের নিয়ত করে সূর্যোদয়ের পর মিনায় রওয়ানা হবেন।
  • সেখানে যুহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফজরের সালাত আদায় করবেন।

নোট: ইহরাম বাধার নির্ধারিত স্থান বা মিকাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের লিংক টি কে অনুসরণ করুন……………..

ইহরামের ওয়াজিব কয়টি ও কী কী?

৩টি যথা :-

  1. মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা।
  2. সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করা।
  3. নিয়ত করার পর তালবিয়াহ পাঠ করা ওয়াজিব।
ইহরাম বাধা হজ্জ
হজ্জ ইহরাম বাধা

ইহরাম বাধার পূর্বে করণীয় ?

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা হওয়া –

  • নখ কাটা।
  • গোফ খাট করা।
  • বোগল ও নাভির নীচের চুল কামানো ও তা পরিষ্কার করা।
  • তবে ইহরামের পূর্বে পুরুষ ও মহিলাদের মাথার চুল কাটার বিষয়ে কোন বিধান  পাওয়া যায় না।
  • উল্লেখ্য দাড়ি কোন অবস্থায়ই কাটা যাবে না।
  • গোসল করাও মুস্তাহাব।

সুগন্ধি মাখা ( মুস্তাহাব ) ?

ইহরামের কাপড় পরিধানের পূর্বে সুগন্ধি মাখা মুস্তাহাব। কিন্তু এ সুগন্ধি কোথায় মাখতে হবে-

  • মাথায়।
  • দাড়িতে।
  • সারা শরীরে মাখা যায়।
  • মনে রাখতে হবে, মেয়েরা সুগন্ধি লাগাবে না।

নোট : ইহরাম পরিধানের পর যদি এর সুগন্ধ শরীরে থেকে যায় তাতে কোন অসুবিধা নেই।

(বোখারী, মুসলিম অধ্যায়-হজ্জ, হাদিস নং ১৪৪৭, ২৬৯৫, ২৬৯৬)

পুরুষের ইহরামের কাপড় কেমন পড়বে ?

  1.   চাদরের মত দু’টুকরা কাপড় একটি নীচে পরবে, দ্বিতীয়টি গায়ে দিবে।
  2.   কাপড়গুলো সেলাইবিহীন হতে হবে।
  3.   পরিচ্ছন্ন ও সাদা রং হওয়া মুস্তাহাব।
  4.   মুহরিম ব্যক্তির কাপড় না থাকলে পায়জামা পড়তে পারবে  (মুসলিম-  হাদিস নং – ২৬৬৫)
  5.   লুঙ্গি পড়তে পারবে এবং গায়ে চাদর পড়তে পারবে কিন্তু শরীর এর চামড়া রঞ্চিত হয়ে      যায় এরকম জাফরানি রঙের কাপড় পড়তে নিষেদ  করেছেন। (বোখারী অধ্যায়-হজ্জ, হাদিস নং ১৪৫২)
  6.  আংটি পড়তে পারবে। কোমরে থলে বানতে পারবে। (বোখারী অধ্যায়-হজ্জ, পরিচ্ছেদ : ৯৭৮)

ইহরাম বাঁধা ( ফরজ ) ?

নির্ধারিত মিকাত থেকে (সম্ভব হলে) গোসল করে অথবা অজু করে ইহরামের পোশাক পরিধান করা । পুরুষরা সেলাইবিহীন ২টি কাপড় পরবে। আর নারীরা পর্দাসহ  শালীন পোশাক পরবে। অতঃপর ২ রাকাআত নামাজ পড়ে ইহরামের নিয়ত করে নেবে-

اَللَّهُمَّ اِنِّي اُرِيْدُ  الْحَخَّ فَيَسِّرْهُ لِيْ وَ تَقَبَّلْهُ مِنِّي

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদুল হাজ্জা ফাইয়াসসিরহু লি ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নি’

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি হজের ইচ্ছা করছি; আপনি আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করুন।’

অতঃপর তালবিয়া পড়বে – নিয়তের পর অধিক হারে তালবিয়া পড়তে থাকুন-

 لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ – لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ – اِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ – لاَ شَرِيْكَ لَكَ

উচ্চারণ : ‘লাব্বাইকা আল্ল-হুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্‌নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্‌ক, লা শারিকা লাক।’

অর্থ : আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি হাজির, আমি হাজির। আপনার কোনো শরিক নেই। আমি হাজির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও নেয়ামত আপনারই এবং সকল রাজত্ব আপনার। আপনার কোনো শরিক নেই।

(বুখারী, ১৫৪৯)

তালবিয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ দোয়াটিও পড়বে-

اَللَّهُمَّ اِنِّيْ اَسْئَلُكَ رِضَاكَ وَ الْجَنَّةَ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنْ غَضَبِكَ وَ النَّارِ

উচ্চারণ : ‘আল্লহুম্মা ইন্নি আসআলুকা রিধ-কা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আউ’জুবিকা মিন গধবিকা ওয়ান্নার’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টি ও জান্নাতের আশা করছি এবং আপনার অসুন্তুষ্টি ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।’

মুহরিম ব্যক্তি  যে সকল কাপড় পড়বে না ?

  1. জামা ।
  2. পায়জামা ।
  3. টুপি ।
  4. পাগড়ী ।
  5. মোজা ।
  6. জাফরান বা ওয়ারস (এক প্রকার খুশবু )রঞ্চিত  কাপড় পড়বেনা।
  7. চুল আঁচড়াবে না ।
  8. শরীর চুলকাবে না ।
  9. নারীরা মুখে নেকাব পড়বেনা ।
  10. নারীরা হাত মুজা পড়বেনা ।
  11. নারীরা পা মুজা পড়তে পারবে।

(বোখারী অধ্যায়-হজ্জ, হাদিস নং ১৪৫০, ১৭১৯)

মেয়েদের ইহরামের কাপড় কী ধরনের হবে ?

মেয়েরা কি ধরনের পোশাক পড়ে এহরাম বাধবে –

মেয়েদের ইহরামের জন্য বিশেষ কোন পোষাক নেই। মেয়েরা সাধারণত : যে কাপড় পরে থাকে সেটাই তাদের ইহরাম। তারা নিজ ইচ্ছা মোতাবেক ঢিলেঢালা ও শালীন পোষাক পরবে। তবে যেন পুরুষের পোষাকের মত না হয়।

আয়িশা (রা:) ইহরাম অবস্থায় কুসুমি রঙের রঙিন কাপড় পড়েন । এবং তিনি বলেন নারী- গণ ঠোঁট ও মুখমন্ডল আবৃত করবেনা।  ওয়ারস ও জাফরান রঙের রঙিন কাপড় পড়বে না।  আয়িশা (রা:) নারীদের জন্য অলংকার, কালো ও গোলাপি রঙের কাপড় ও মোজা পড়া দূষণীয় মনে করেন নি। ইব্রাহিম (নাখয়ি ) (র) বলেন ,  ইহরাম অবস্থায় কাপড় পরিবর্তন করার দোষ নেই।

(বোখারী অধ্যায়-হজ্জ, পরিচ্ছেদ : ৯৮৩)

  মুহরিম স্ত্রী লোকের মুখমন্ডল ঢাকা ?

   আহমদ ইবনে হাম্মবল ….. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন হজ্জের মৌসমে অনেক কাফেলা আমাদের অতিক্রম করেছিল আর আমরা ইহরাম  অবস্থায় হযরত মোহাম্মদ (সঃ) সাথে ছিলাম।  তারা আমাদের সম্মুখে এসে পড়লে আমাদের স্ত্রী লোকেরা মাথার কাপড় টেনে এনে মুখ ঢাকতেন।  আর তারা আমাদের সামনে থেকে দূরে চলে গেলে আমরা আমাদের মুখ মন্ডল  খুলে ফেলতাম।

( আবু দাউদ (৩য় খন্ড) হাদিস নং – ১৮৩৩)

    ইহরাম অবস্থায় পায়ে কী পরবে ?

  • পায়ের গোড়ালী ঢেকে রাখে এমন কোন জুতা পরা যাবে না।
  • কাপড়ের মোজাও পরবে না।
  • কারো জুতা না থাকলে টাকনুর নিচ থেকে মুজা কেটে সেন্ডেল জুতার ন্যায় পড়তে হবে।
  • তবে সেন্ডেল পরতে পারে।

(বোখারী, মুসলিম অধ্যায়-হজ্জ, হাদিস নং ১৪৫০, ২৬৬৪)

 

হজ্জের সকল দোয়া…………………..

ইহরাম বাঁধার মীকাত ……………….

  ইহরাম পড়ার পর কি কি করা যাবে না ?

     – স্ত্রী সহবাস করা যাবে না এবং কোন অন্যায় আচরণ করা যাবে না। (বোখারী হাদিস -১৭০২)

     – কোনো ধরনের সুগন্ধি কাপড়ে  ব্যবহার করা যাবে না। (মুসলিম হাদিস নং ২৬৭০, ২৬৭১)

     – কোনো ধরনের শিকার করা যাবে না । (মহান আল্লাহর বাণী – সূরা মায়েদা  আয়াত –  ৯৫-৯৬)

     – জংলী গাদা হাদিয়া দিলে তা নেওয়া যাবেনা। (বোখারী হাদিস নং – ১৭০৮)

     – কোন  ঝগড়া-ঝাটি করা যাবেনা। ( মহান আল্লাহর বাণী – সূরা বাকারা আয়াত -১৯৭)

     – ইহরাম অবস্থায় বিবাহ করা যাবে। (বোখারী হাদিস নং – ১৭১৮)

     – সিঙ্গা লাগানো যাবে।  (বোখারী হাদিস নং – ১৭১৭)  

     – ইহরাম অবস্থায় থাকুক বা না থাকুক মক্কা শরীফের হারামের সীমানার ভিতরে কেউ এমনিতেই     গজিয়ে উঠা কোন গাছ বা সবুজ বৃক্ষলতা কাটতে  পারবে না। (মুসলিম  হাদিস নং – ৩১৭২)

    – অশ্লীল আচরণ ও দুষ্কর্ম করা যাবে না। (মুসলিম ৩য় খন্ড,  হাদিস নং – ৩১৬১)

    – নখ, চুল, দাড়ি-গোঁফ ও শরীরের একটি পশমও কাটা বা ছেঁড়া যাবে না।

    – ক্ষতিকারক সব প্রাণী মারা যাবে। ক্ষতি করে না, এমন কোনো প্রাণী মারা যাবে না।

     মিনায় অবস্থান ৮ জিলহজ

 মিনায় ৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব এবং সেখানে অবস্থান করা সুন্নত।

হাদিসের বর্ণনায় ………….
আব্দুল্লাহ ইব্ন মুহাম্মদ (র)…. আব্দুল আজিজ ইব্ন রুফাইয় (র) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন , আমি আনাস ইব্ন মালিক (রা ) কে জিজ্ঞাসা করলাম , নবী (সা.) সম্পর্কে আপনি যা উত্তম রূপে রেখেছেন তার কিছুটা বলেন। বলুন জিল হজ মাসের আট তারিখ যুহর ও আসরের সালাত তিনি কোথায় আদায় করতেন? তিনি বললেন, মিনায়। আমি বললাম, মিনা থেকে ফিরার দিন আসরের সালাত তিনি কোথায় আদায় করেছেন ? তিনি বললেন, মুহাসসাবে। এরপর আনাস (রা) বললেন , তোমাদের আমিরগণ যে রূপ করবে , তোমরাও অনুরূপ কর।

(বোখারী শরীফ (৩য় খন্ড) হাদিস নং – ১৫৫০)

হজ্জ
হজ্জ

২। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান (৯ জিলহজ) ?

(১) সূর্যোদয়ের পর মিনা থেকে আরাফাতে রওয়ানা হবেন।

(২) যুহরের প্রথম ওয়াক্তে যুহর ও আসর পড়বেন একত্রে পরপর দুই দুই রাকআত করে।

(৩) সূর্যাস্তের পর মুযদালিফায় রওয়ানা করবেন। মাগরিব-এশা সেখানেই পড়বেন।

(৪) সেখানে রাত্রি যাপন করে প্রথম ওয়াক্তে অন্ধকার থাকতেই ফজর পড়বেন।

(৫) আকাশ ফর্সা হওয়া পর্যন্ত কেবলামুখী হয়ে হাত তুলে দীর্ঘ সময় দোয়া ও মোনাজাতে মশগুল থাকবেন।

(৬) বড় জামারায় নিক্ষেপের জন্য ৭টি কংকর এখান থেকে কুড়াতে পারেন বা “মুহাসসির” নামক স্থান থেকে কোরানো উত্তম নিন্মে বিস্তারিত দেওয়া রয়েছে ।

৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমে পালিত হবে পবিত্র হজ। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আরাফাই হজ’। তাই ৯ জিলহজ ফজরের পর সম্ভব হলে মিনায় গোসল করে নেওয়া অথবা অজু করে সকাল সকাল আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া।

৯ জিলহজ জোহরের আগেই হজের অন্যতম রোকন পালনে আরাফাতের ময়দানে গিয়ে উপস্থিত হওয়া এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করা। আর এটাই হলো হজের অন্যতম রোকন।

৯ জিলহজ সকালে মিনা থেকে রওয়ানার সময় তাকবীর এবং তালবিয়া বলা-

তালবিয়া-

 لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ – لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ – اِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ – لاَ شَرِيْكَ لَكَ

উচ্চারণ : ‘লাব্বাইকা আল্ল-হুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্‌নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্‌ক, লা শারিকা লাক।’

অর্থ : আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি হাজির, আমি হাজির। আপনার কোনো শরিক নেই। আমি হাজির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও নেয়ামত আপনারই এবং সকল রাজত্ব আপনার। আপনার কোনো শরিক নেই।

তাকবীর-

لله أكبر الله أكبر لا إله إلا الله، والله أكبر الله أكبر ولله الحمد

উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।

অর্থঃ আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান৷ আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং আল্লাহ মহান৷ আল্লহ মহান এবং সকল প্রশংসা আল্লাহরই জন্য৷

(বোখারী শরীফ (৩য় খন্ড) হাদিস নং – ১৫৫৬, মুসলিম শরীফ (৩য় খন্ড) হাদিস নং – ২৯৬৮)

হজ্জ
হজ্জ

আরাফার ময়দানে অবস্থান কালে দোয়া-

আরাফার দিনের অনেক দোয়া রয়েছে, তার মাঝে উল্লেখ যোগ্য দোয়াটি, এই দোয়ার বিশেষ গুরুত্বের কথা বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আরাফাতের দিনের দোয়াই শ্রেষ্ঠ দোয়া। দোয়া-জিকির হিসেবে সর্বোত্তম হলো ওই দোয়া, যা আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণ করেছেন। তা হলো—

لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

উচ্চারণ -‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শায়ইন ক্বদির।

অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি একক, তার কোনো শরিক নেই, রাজত্ব একমাত্র তারই, সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তারই জন্য, আর তিনি সকল বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান।’

(জামে তিরমিজি হাদিস নং- ৩৫৮৫)

খুতবা শোনা-

আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে হজের খুতবা শোনা এবং নিজ নিজ তাবুতে জোহর ও আসরের নামাজ নির্দিষ্ট সময়ে আলাদাভাবে আদায় করা। তওবা-ইসতেগফার, তাকবির, তাসবিহ-তাহলিল ও মোনাজাতে কান্নাকাটিতে আত্মনিয়োগ করা।বিশেষ করে হজের খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং তা বুঝে নিয়ে জীবনের বাকি সময় এ নসিহতের আলোকে জীবন গড়ার দীপ্ত শপথ নেওয়া।

(আবু দাউদ  (৩য় খন্ড) হাদিস নং- ১৯১৪)

১০ জিলহজ (মুজদালিফায় অবস্থান) –

মুজদালিফায় সারারাত খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করা। মুজদালিফায় সুবহে সাদিক পর্যন্ত থাকা সুন্নত। সুবহে-সাদিক থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত যেকোনো এক মুহূর্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা ওয়াজিব।

হাদিসে বর্ণিত…….

হাজ্জজ ইবনে মিনহাল (র) ….. আমার ইবনে মায়মুন (র) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন আমি উমর (রা) এর সাথে ছিলাম।  তিনি মুয্দালিফাতে ফজরের সালাত আদায় করে (মাশারে হারামে) উকুফ করলেন এবং তিনি বললেন।  মুশরিকরা সূর্য না উঠা পর্যন্ত রওনা করতেন না।  তারা বলতো হে সাবির আলোকিত হও।  নবী করিম (সাঃ)   তাদের বিপরীত করলেন এবং তিনি সূর্য উঠার পূর্বেই রওনা করলেন।

(বোখারী শরীফ (৩য় খন্ড) হাদিস নং – ১৫৭৯)

মুযদালিফায় মাগরিব ও এশার নামায একত্রে পড়া

সন্ধ্যায় মাগরিব না পড়ে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া। মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও ইশার নামাজ এক আজানে আলাদা আলাদা ইকামতে একসঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আদায় করা।

(বোখারী শরীফ, আবু দাউদ(৩য় খন্ড)হাদিস নং– ১৫৬৮, ১৯২৪)

মুহাম্মদ ইবন কাসীর …. আব্দুল্লাহ ইব্ন মালিক (র) থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন, আমি ইবনে উমরের সাথে (মুযদালিফায়) মাগরীবের নামাজ তিন রাক’আত এবং ইশার নামাজ দুই রাক’আত আদায় করেছি।  তখন  মালিক ইবনে হারিস (র) তাকে জিজ্ঞাসা করে , এ কিরূপ নামাজ? জবাবে তিনি বলেন এ নামাজদ্বয়কে এ স্থানে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সংঙ্গে একই একামতের সাথে আদায় করেছি।

(আবু দাউদ  ৩য় খন্ড,  হাদিস নং – ১৯২৭)

হজ্জ
হজ্জ

কংকর নিক্ষেপ করা পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করা –

হাদিসে বর্ণিত…….

হুমায়দ ইবনে মাসআদা (র) ফজল ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত।  তিনি নবী করিম (সাঃ) এর পিছনে সওয়ার ছিলেন , তিনি (নবী করিম (সাঃ)) জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতে থাকেন ।

(সুনানে নাসাঈ  শরীফ (৩য় খন্ড) হাদিস নং – ৩০৫৭)

১০ই যিলহজ্জ ঈদের দিন এর ধারাবাহিক কাজ –

(১) বড় জামরায় ৭টি  করে  কংকর নিক্ষেপ করবেন।

(২) তারপর কুরবানী করবেন।

(৩) তারপর চুল কাটাবেন এবং  ইহরামের কাপড় বদলিয়ে সাধারণ পোষাক পরে ফেলবেন।

(৪) {মক্কায়} তাওয়াফে ইফাদা করবেন। এদিন না পারলে এটি ১১ বা ১২ তারিখেও করতে পারবেন এবং তৎসঙ্গে সাঈও করবেন।

কংকর কোন স্থান হতে কুড়াবে

মিনায় জামরাতে (শয়তানকে মারার জন্য) মুজদালিফায় অবস্থানের সময় রাতে কিংবা সকালে কংকর সংগ্রহ করা।

হাদিসে বর্ণিত……………..

উবায়দুল্লাহ ইবন সাঈদ (র) …… আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) সূত্রে ফযল ইব্ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন , রাসূলুল্লাহ (সাঃ) লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন , যখন তারা সন্ধ্যায় আরাফা ও সকালে মুজদালিফা ত্যাগ করেন , তোমরা ধীর-স্থির ভাবে চল।  তখন তিনি উটনীর লাগাম টেনে রাখেন।  এরপর যখন তিনি মিনায় প্রবেশ করেন তখন তিনি অবতরণ করেন।  “মুহাসসির” নামক স্থানে তিনি বলেন , তোমরা ‘খায়ক’ (দুই আঙুলে মারার ছোট ) কংকর সাথে নাও, যা জামরায় মারতে হবে।  রাবী বলেন , রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হাতে ইঙ্গিত করে বলেন ;যেরূপ কংকর মানুষ সাধারণত মেরে থাকে। 

(সুনানে নাসাঈ  শরীফ (৩য় খন্ড) হাদিস নং – ৩০৬০)

কংকর নিক্ষেপ

১০ জিলহজ সকালে মুজদালিফা থেকে মিনায় এসে বড় জামরাতে ৭টি কংকর নিক্ষেপ করা। আর তা জোহরের আগেই সম্পন্ন করা। কংকর নিক্ষেপের স্থানগুলোতে বাংলায় দেওয়া দিক-নির্দেশনা মনোযোগ সহকারে শুনে তা আদায় করা।

জামরাতুল আকবায় কংকর মারার স্থান –

মোজাহিদ ইবনে মূসা (র )আব্দুর রহমান ইবনে ইয়াজিদ (র) বর্ণনা করেন ,আমি ইবনে মাসউদ (রাঃ) কে বাতনে ওয়াদী (উপত্যকার নিন্মাংশে) হতে জামরাতুল আকবায় কংকর মারতে দেখেছি। তারপর তিনি বলেন: যিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই তার শপথ ! এই সে ব্যক্তির কংকর মারার স্থান, যার উপর সূরা বাকারা নাযিল  হয়েছে। 

(সুনানে নাসাঈ  শরীফ (৩য় খন্ড) হাদিস নং – ৩০৭৪)

কংকর মারার সংখ্যা –

ইব্রাহিম ইবনে হারুন (র ) হুসাইন (রা) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন , আমরা জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ  (রা) নিকট গিয়ে বললাম।  আমাকে নবী করিম (সাঃ) হজ্জ সম্পর্কে অবহিত করুন।  তিনি বললেন রাসূল (সাঃ) গাছের নিকট এর জামরায় সাতটি কংকর মারেন।  তিনি এর প্রত্যেক কংকরের সাথে তাকবীর বলেন , রাসূল (সাঃ)কংকর মারেন  বাতনে ওয়াদী (উপত্যকার নিন্মাংশে) হতে।  এর পর তিনি জবেহ বা কোরবানির স্থানে গিয়ে কোরবানি করেন।

(সুনানে নাসাঈ  শরীফ (৩য় খন্ড) হাদিস নং – ৩০৭৮)

হজ্জ
হজ্জ

কংকর মারার পর দোয়া করা –

আব্বাস ইবনে আব্দুল আজিম আম্বরী (র) ….. যুহরী (র) থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন : আমাদের নিকট (হাদিসে) পৌঁছেছে যে , রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন মিনার জবাই করার স্থানের নিকটস্থ জামরায় কংকর মারেন , তখন তাতে সাতটি কংকর মারেন। যখনি তিনি একটি কংকর মারেন , তখনি তাকবীর বলেন।  তারপর তিনি এর সামনে অগ্রসর হন এবং পশ্চিম মোখি হয়ে দাঁড়ান এবং উনার দুহাত তুলে অনেক্ষন দু’আ করেন। তারপর তিনি দ্বিতীয় জামরায় এসে তাতেও সাতটি কংকর মারেন এবং প্রতিটি কংকর মারার সময় তাকবীর বলেন।  এরপর তিনি বাম দিকে কিছুটা সরে যান এবং কেবলা মুখী হয়ে দাড়িয়ে উনার দু হাত তুলে দু’আ করেন।  এরপর তিনি আকাবার নিকটস্থ জামরায় আগমন করেন এবং এতেও তিনি সাতটি কংকর মারেন। কিন্তু এর নিকট তিনি দাঁড়ান নি।  যুহরী (র) বলেন , আমি সালিম (র) কে এই হাদিস বর্ণনা করতে শুনেছি তার পিতার মাধ্যমে।  আর তিনি নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন।  আর ইবন উমর (রা) এরূপ আমল করতেন।  

(সুনানে নাসাঈ  শরীফ (৩য় খন্ড) হাদিস নং – ৩০৮৫)

কঙ্কর নিক্ষেপের সময়-

ইবন হাম্বল ….. আবু যুবায়ের (র ) বলেন, আমি জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) কে বলতে শুনেছি, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে ১০ যিল-হজ্জ তারিখে দ্বি-প্রহরের সময় তাঁর বাহনের উপর সাওয়ার অবস্থায় কংকর নিক্ষেপ করতে দেখেছি। আর ১০ যিলহজ্জের পরে তিনি সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ার পর কংকর নিক্ষেপ করতেন। 

 (আবু দাউদ, হাদিস নং : ১৯৬৮)

কোরবানি করা

বড় জামরাতে কংকর নিক্ষেপ করে মিনায় কোরবানির পশু জবাই এ ক্ষেত্রে যারা ব্যাংকের মাধ্যমে কোরবানি সম্পন্ন করবেন, তারা ব্যাংকের লোকদের কাছ থেকে মাথা মুণ্ডনের নির্দিষ্ট সময় জেনে নেওয়া। 

নিজ হাতে কোরবানী করা –

সাহল ইবনে বাক্কর (র)…. আনাস (রা)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন নবী করিম (সঃ) নিজ হাতে সাতটি  উট দাঁড়িয়ে থাকা  অবস্থায়  কুরবানী করেন এবং মদীনাতেও হৃষ্ট পুষ্ট সুন্দর শিং বিশিষ্ঠ দুটি দুম্বা তিনি কোরবানী করেছেন ।হাদীসটি এখানে সংক্ষেপে বর্ণনা করা হয়েছে।

(সহীহ বুখারী, খন্ড -৩, হাদিস নং -১৬০৪)

  • কুরবানীর জানুয়ারের কোন কিছুই কসাইকে দেওয়া যাবেনা। (বুখারী, খন্ড-৩, হাদিস নং-১৬০৮)
  • কুরবানীর জানুয়ারের চামড়া ছদকা করা। (বুখারী, খন্ড-৩, হাদিস নং -১৬০৯)
  • কুরবানীর জানুয়ারের পিঠের আবরণ ছদকা করা। (বুখারী, খন্ড-৩, হাদিস নং -১৬১০)
  • কুরবানীর জানুয়ারের গোশত তিনদিনের বেশি সময়ও সংরক্ষণ করে খাওয়া যাবে। (বুখারী, খন্ড -৩, হাদিস নং -১৬১১)
কুরবানী করা
কুরবানী করা

মাথা মুণ্ডন করা

কোরবানির পর পরই মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে হজের ইহরাম থেকে হালাল হবে হাজি। মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে হাজি ইহরামের কাপড় পরিবর্তন করাসহ সব সাধারণ কাজ করতে পারলেও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে।

মাথার চুল মুন্ডল বা ছাটা
মাথার চুল মুন্ডল বা ছাটা

মাথা ডান দিক থেকে মুণ্ডন সুন্নত –

মাথা মুণ্ডানোর ক্ষেত্রে শুধু মুণ্ডন করলেই সওয়াবের পরিপূর্ণতা লাভ করবে না। এতে সুন্নত তরিকার অবলম্বন করতে হবে। ডান দিক থেকে মাথা মুণ্ডান সুন্নত। তাই হজ ও ওমরা পালনকারীদের জন্য উচিত ডান দিক থেকে মাথা মুণ্ডান শুরু করা। এভাবেই নবী করিম (সা.) হজে স্বীয় মাথা মোবারক মুণ্ডন করতেন।

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) মিনায় পৌঁছে প্রথমে জামরাতে গেলেন এবং তাতে কঙ্কর মারলেন। অতঃপর মিনায় অবস্থিত তার ডেরায় গেলেন এবং কোরবানির পশুগুলো জবেহ করলেন, তৎপর নাপিত ডাকলেন এবং তাকে আপন মাথার ডান দিক বাড়িয়ে দিলেন। সে তা মুণ্ডন করল। তিনি আবু তালহা আনসারিকে ডেকে কেশগুচ্ছ দিলেন। অতঃপর নাপিতকে মাথার বাম দিক বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, মুণ্ডাও; সে মুণ্ডাল। আর তিনি তা সেই আবু তালহাকে দিয়ে বললেন, যাও মানুষের মধ্যে বণ্টন করে দাও।’

( সহীহ তিরমিযী, মুসলিম: হাদিস নং -৯১২, ৩০২২)

 ৩। তাওয়াফে জিয়ারত (১০, ১১ ও ১২ জিলহজ) ?

হাজ্জী গণকে তিনবার বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করতে হয়। প্রথমে মক্কায় পৌঁছে – এটা তাওয়াফে কুদুম (আগমনী তাওয়াফ) তা সুন্নাত।  দ্বিতীয় বার মিনা থেকে ফিরে এসে (১০ ই জিলহজ)- এটা তাওয়াতে যিয়ারত বা তাওয়াফে ইফাদা, এটা ফরজ।  তৃতীয় বার হজ্জ শেষে নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের প্রাক্কালে এটা তাওয়াফে বিদা (বিদায়ী তাওয়াফ) . মক্কার বাইরের লোকদের জন্য তা ওয়াজিব।  মক্কার আশেপাশের লোকদের জন্য তা অপরিহার্য নয়।

(সুনানে ইবনে মাজাহ , অনুচ্ছেদঃ যমযমের পানি পান করা )

তাওয়াফুল ইফাদা  ১০ ই জিলহজ-

এ তাওয়াফের অপর নাম তাওয়াফে যিয়ারাহ বা ফরয তাওয়াফ। এটি  হজ্জের  গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। তাওয়াফুল ইফাদাহ করা ও সা‘ঈ করা হজ্জের ফরয কাজ। আপনি যদি মিনা থেকে মক্কায় এ তাওয়াফ করতে যান তবে দু’ভাবে যেতে পারেন।

– পায়ে হেঁটে জামরাত পার করে প্যডেস্ট্রিয়ান টানেল (সুড়ঙ্গ পথ) রাস্তা দিয়ে।

– মিনায় কিং ফয়সাল ওভারব্রিজ-এর উপর থেকে বা জামরাতের পাশে থেকে কার বা মটরসাইকেল ভাড়া করে। আর আপনি যদি মাথা মুণ্ডন করার পরপরই মক্কায় চলে গিয়ে থাকেন তবে আপনার হোটেল বা ভাড়া বাসা থেকেই এ তাওয়াফ করতে যাবেন।

হাদিসের বর্ণনায়…………………..

মুহাম্মদ ইব্ন রাফি (র) …… নাফি (র) ইব্ন উমর (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলাল্লাহ (সাঃ) কুরবানীর দিন তাওয়াফুল ইফাযা সম্পূর্ন করেন, অতঃপর মিনায় ফিরে এসে যোহরের সালাত আদায় করেন।  নাফি বলেন, ইব্ন উমর (রা)- ও কুরবানীর দিন তাওয়াফুল ইফাযা সম্পন্ন করতেন , অতঃপর ফিরে এসে মিনায় যোহরের সালাত আদায় করতেন এবং বলতেন , রাসূলাল্লাহ (সাঃ) এরূপ করেছেন।

(সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদিস নং -৩০৩৫)

হজ্জের সকল দোয়া…………………..

ইহরাম বাঁধার মীকাত ……………….

মসজিদে হারামে প্রবেশ ?

ইব্রাহিম ইবনে মুনযির (র)…. ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ  (সা) সানিয়া উলয়া (হরমের উত্তর পূর্ব দিকে  কাদা নামক স্থান দিয়ে)  মক্কায় প্রবেশ করতেন এবং সানিয়্যা সুফলা(হরমের দক্ষিণ পচ্ছিম দিকে  কুদা নামক স্থান) দিয়ে বের হতেন।

 ( বোখারী অধ্যায়-হজ্জ, হাদিস নং ১৪৮০ )

কাবা শরীফে প্রবেশ
কাবা শরীফে প্রবেশ

মসজিদে হারামে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করে এ দোয়া পড়া-

بِسْمِ اللهِ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلى رَسُوْلِ اللهِ ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوْبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ.

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি ওয়াস্সলাতু ওয়াস্সালামু আলা রসূলিল্লাহ, আল্লহুম্মাগফির লি যুনুবি ওয়াফতাহ লি- আবওয়া-বা রহমাতিক্।

অর্থ: আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। সালাত ও সালাম রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এর ওপর। হে আল্লাহ আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের সকল দরজা উন্মুক্ত করে দিন।

 

কাবা ঘর দেখে হাত তুলে দোয়া না করা ?

ইয়াহিয়া ইব্ন মুঈন ……. মুহাজির আল মাক্কী (র) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন , জাবির ইব্ন আব্দুল্লাহ (রা) কে এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় , যে বায়তুল্লাহ দৃষ্টি গোচর হলে হাত উত্তোলন করে।  জাবির (রা) বলেন , আমি ইয়াহুদীদের ব্যতীত আর কাউকে এরূপ করতে দেখিনি।  আমরা রাসুলুল্লাহ (সা) এর সাথে হজ্জ করেছি , কিন্তু এরূপ করেননি।

(সহীহ আবু দাউদ, হাদিস নং -১৮৬৮)

হাত তুলে দোয়া না করা
হাত তুলে দোয়া না করা

কাবা ঘর দেখে এ দোয়া পড়া-

اَللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَ مِنْكَ السَّلَامُ حَيِّنَا رَبَّنَا بِالسَّلَامِ اَللَّهُمَّ زِدْ هَذَا الْبَيْتَ تَشْرِيْفاً وَ تَعْظِيْماً وَ تَكْرِيْماً وَ مَهَاَبَةً وَ زِدْ مَنْ شَرّفَهُ وَ كَرّمَهُ مِمَّنْ حَجَّهُ وَاعْتَمَرَهُ  تَشْرِيْفاً وَ تَعْظِيْماً وَ بِرُّا

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আংতাস সালামু ওয়া মিনকাস সালামু হাইয়্যিনা রাব্বানা বিস্‌সালাম। আল্লাহুম্মা যিদ হাজাল বাইতা তাশরিফান ওয়া তা’জিমান ওয়া তাকরিমান ওয়া মুহাবাতান; ওয়া জিদ মান শার্‌রাফাহু ওয়া কার্‌রামাহু মিম্মান হাজ্জাহু ওয়া’তামারাহু তাশরিফান ওয়া তাকরিমান ওয়া তা’জিমান ওয়া বির্‌রা।

অর্থ –

হে আল্লাহ, আপনার এই ঘরের বড়ত্ব, সম্মান ও মর্যাদা এবং শান- শওকত বাড়িয়ে দিন। এবং হজ্জ ও ওমরাকারীদের মধ্যে যে এই ঘরের সম্মান ও ইহতিরাম করবে, তার সম্মান, মর্যাদা , মহত্ব ও নেকি বাড়িয়ে দিন।  হে আল্লাহ আপনি শান্তির মালিক, সকল শান্তি আপনার পক্ষ থেকেই।  হে আমাদের রব , শান্তির সংঙ্গে আমাদের বাঁচিয়ে রাখুন।

(আল কিরা- ২৫৫)

তাওয়াফ শুরু করার পূর্বেই তালবিয়াহ পাঠ বন্ধ করে দেয়া। এরপর মনে মনে তাওয়াফের নিয়ত করা। নিয়ত না করলে তাওয়াফ শুদ্ধ হবে না। নিয়ম হল প্রথমে ‘হাজারে আসওয়াদ (কাল পাথরের) কাছে যাওয়া, ‘‘বিসমিল্লাহি আল্লহু আকবার’’ বলে এ পাথরকে চুমু দিয়ে তাওয়াফ কার্য শুরু করা।

কাবা শরীফ তাওয়াফ করা
কাবা শরীফ তাওয়াফ করা

তাওয়াফের প্রত্যেক চক্রেই হাজরে আসওয়াদ ছুঁয়া ও চুমু দেয়া উত্তম। কিন্তু প্রচন্ড ভীড়ের কারণে এটি খুবই দূরূহ কাজ। সেক্ষেত্রে প্রতি চক্রেই হাজ্রে আসওয়াদের পাশে এসে এর দিকে মুখ করে ডান হাত উঠিয়ে ইশারা করবেন। ইশারাকৃত এ হাত চুম্বন করবেন না। ইশারা করার সময় একবার বলবেন بِسْمِ الله اللهُ أكبَر   ‘বিসমিল্লাহ আল্লহু আকবার’।

কাবা শরিফ তাওয়াফের সময় অনেক দোয়া করা যায়। তবে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক দোয়ার মধ্যে এ দোয়াটিও বেশি বেশি করতেন। আর তাহলো-

اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اَسْئَلُكَ الرَّاحَةَ عِنْدَ الْمَوْتِ وَ الْعَفْوَ عِنْدَ الْحِسَابِ

উচ্চারণ : ‘আল্লহুম্মা ইন্নি আসআলুকার রহাতা ইংদাল মাওতি ওয়াল আফওয়া ইংদাল হিসা-ব।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে আরামদায়ক মৃত্যু দান করেন এবং মৃত্যু পরবর্তী হিসাব থেকে ক্ষমা করেন।’

সাধারণভাবে তাওয়াফ শুরু করবে আর এ দোয়া পড়া –

بِسْمِ اللهِ اَللهُ اَكْبَر – اَللَّهُمَّ اِيْمَنًا بِكَ و بصديقًا بِكِتَابِكَ وَرَفَعًا بِعَهْدِكَ وَ اِتِّبَعًا لِسُنَّةِ نَبِيِّكَ

উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আল্লহু আকবার, আল্লহুম্মা ইমানান বিকা ওয়া বাচঁদিক্বম্মা বিকিতা-বিকা ওয়া রফাআন বিআহদিকা ওয়া ইত্তিবাআন লিসুন্নাতি নাবিয়্যিক।’

অর্থ :

আল্লাহর নামে শুরু করছি , যিনি মহান।  হে আল্লাহ (আমি তাওয়াফ শুরু করছি) আপনার প্রতি ঈমান এনে আপনার কিতাবকে সত্যায়ন করে এবং আপনার নবী মোহাম্মদ (সা.)- এর অনুসরণ করে।

(মাজমউজ যাওয়াইদ – ৫৪৭০)

তাওয়াফের সময় কাবা শরিফ ও হাজরে আসওয়াদকে বাম দিকে রেখে রোকনে শামি ও রোকনে ইরাকি অতিক্রম করে রোকনে ইয়ামেনিতে আসবে।

অতঃপর (সম্ভব হলে) রোকনে ইয়ামেনি স্পর্শ করবে। সম্ভব না হলে দূর থেকে ইশারা করে হাজরে আসওয়াদের দিকে অগ্রসর হবে এবং কুরআনে শেখানো এ দোয়া পড়বে-

رَبَّنَا اَتِنَا فِى الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّ فِى الْاَخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ : রব্বানা আতিনা ফিদদুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরতি হাসানাতাও ওয়াক্বিনা আজাবান্ নার।’

অর্থ- হে আমাদের রব, আপনি আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন ও আখিরাতেও কল্যাণ দান করুন এবং  আমাদের জাহান্নামের আজাব  হতে রক্ষা করুন।

(মুসান্নাফ ইব্ন আবি শাইবা)

হাজরে আসওয়াদ পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে এক চক্কর সম্পন্ন হবে। এভাবে সাত চক্কর দেয়ার মাধ্যমে পুরো এক (ফরজ) তাওয়াফ সম্পন্ন হবে।

তাওয়াফের ৭ চক্র শেষ হলে দু’কাঁধ এবং বাহু ইহরামের কাপড় দিয়ে আবার ঢেকে ফেলবেন এবং ‘‘মাকামে ইব্রাহীমের’’ কাছে গিয়ে পড়বেনঃ

وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلّىً

অর্থঃ ইব্রাহীম (পয়গাম্বর)-এর দন্ডায়মানস্থলকে সালাত আদায়ের স্থান হিসেবে গ্রহণ করো।

মাকামে ইবরাহিমের নামাজ ?

তাওয়াফ শেষে সম্ভব হলে মাকামে ইবরাহিমে কিংবা মাকামে ইবরাহিমের ওই দিকটায় ২ রাকাআত নামাজ আদায় করা। নারীদের নামাজের জন্য ওই দিকটায় নির্ধারিত স্থানও রয়েছে।

হাদিসের বর্ণনায় ……….

মুসলিম ইব্ন ইব্রাহীম  ….. আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। নবী করীম (সাঃ) মক্কায় প্রবেশ করে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করেন এবং মাকামে ইব্রাহীমের পশ্চাঁতে দুই রাক’আত নামায আদায় করেন।  আর এ দিনটি ছিল মক্কা বিজয়ের দিন।

(সহীহ আবু দাউদ , হাদিস নং – ১৮৬৯)

ঝমঝমের পানি পান ?

মাকামে ইবরাহিমে নামাজ আদায় করে ঝমঝমের পানি পান করে নেয়া। মাতআফের চর্তুদিকে ঝমঝমের পানির ঝার/ড্রাম রয়েছে।কেবলামুখী হয়ে তিন নিশ্বাসে যমযমের পানি পান করতে হয়। পান করার শুরুতে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে হয়। পেট ভরে পান করতে হয়। পান করা শেষ হলে আল্লাহর প্রশংসা করতে হয়।

(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং – ৩০৬১)

ঝমঝম কূপের পানি পান করা
ঝমঝম কূপের পানি পান করা

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনায় এসেছে, ‘জমজমের এ পানি দাঁড়িয়ে কেবলামুখী হয়ে তিন নিঃশ্বাসে পান করা সুন্নাত। বরকত ও উপকার পাওয়ার আশায় জমজমের পানি পান করার সময় এ দোয়া করাও উত্তম-

اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا, وَرِزْقًا وَاسِعًا, وَشِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاءٍ

উচ্চারণ : ‘আল্লহুম্মা ইন্নি আস’আলুকা ইলমান নাফি’আ, ওয়ারিজকন ওয়াসিয়া, ওয়াশিফা’আন মিন কুল্লি দায়িন।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে উপকারী জ্ঞান, প্রশস্থ রিজিক এবং যাবতীয় রোগ থেকে আরোগ্য কামনা করছি।’ (দারা কুতনী, আব্দুর রাজ্জাক ও হাকেম)

সাফা মারওয়া পাহাড় সাঈ করা ?

 ‘সাঈ’ শব্দের অর্থ হলো দৌড়ানো। সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে বিশেষ পদ্ধতিতে সাত বার দৌড়ানোকে সাঈ বলে। ‘সাঈ’ বাইতুল্লায় হজ পালন ও ওমরা জন্য ওয়াজিব কাজগুলোর একটি।

‘সাঈ’ পায়ে হেঁটে সম্পন্ন করতে হয়। হেঁটে সাঈ করতে অপারগ হলে বাহনের সাহায্যেও আদায় করা যায়। তবে বিনা ওজরে বাহন ব্যবহার করলে দম বা কুরবানি ওয়াজিব হয়।সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে দৌড়ানোই হলো সাঈ-এর রোকন। সাফা ও মারওয়া পাহাড় ব্যতীত এদিক-ওদিক অথবা অন্য কোথাও দৌড়ালে ‘সাঈ’ আদায় হবে না।সাঈ হলো হজের রোকন। হজ ও ওমরায় ‘সাঈ’ করা ওয়াজিব। সাফা ও মারাওয়া পাহাড়দ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে নির্ধারিত নিয়মে সাঈ করতে হয়। এটি আল্লাহ তাআলার নিদর্শন।

সাফা মারওয়া পাহাড় সাঈ করা
সাফা মারওয়া পাহাড় সাঈ করা

সাঈতে করণীয় ?

কাবা শরিফ তাওয়াফের পর মাকামে ইবরাহিমে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে সম্ভব হলে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করে মসজিদে হারামের বাবুস সাফা দিয়ে সাফা পাহাড়ে আরোহন করা। সাফা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে এ আয়াত পাঠ করা-

إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَائِرِ اللَّهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللَّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ

উচ্চারণ : ইন্নাস সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিং শাআয়িরিল্লাহি ফামান হাজ্জাল বাইতা আয়ি’তামার ফালা ঝুনাহা আলাইহি আঁইয়্যাতত্বাওয়াফা বিহিমা ওয়া মাং তাত্বাও ওয়াআ খইরং ফাইন্নাল্লাহা শাকিরুন আলিম।’

(সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৮)

অর্থ –

নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে বাইতুল্লাহর হজ্জ করবে কিংবা উমরা করবে তার কোন অপরাধ হবে না যে, সে এগুলোর তাওয়াফ করবে। আর যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কল্যাণ করবে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ভালো কাজের পুরস্কারদাতা, সর্বজ্ঞ।

এ আয়াতটি সাফা পাহাড়ের ওপরে গম্বুজের মধ্যে লেখা রয়েছে। চাইলে যে কেউ তা দেখে দেখেও পড়ে নিতে পারবেন।

– সাফা পাহাড় থেকে কাবা শরিফ দেখা যায়। কাবার দিকে ফিরে আলহামদুলিল্লাহি আল্লাহু আকবার (اَلْحَمْدُ لِلَّهِ اَللهُ اَكْبَر) বলে আল্লাহর কাছে দোয়া করা।

– অতঃপর এ দোয়াটি ৩ বার পড়ে ,সাফা পাহাড় থেকে মারওয়ার দিকে চলা শুরু করা-

لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَر – لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ – لَهُ المُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ يُحْيِى وَ يُمِيْتُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيئ قَدِيْرلَا اِلَهَ اِلَّا الله وَحْدَهُ أنْجَزَ وَعْدَهُ – وَ نَصَرَ عَبْدَهُ وَ هَزَمَ الأحْزَابَ وَحْدَهُ

উচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াল্লহু আকবার। লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াহ্দাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হাম্দু ইউহয়ি ওয়া ইউমিতু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িং ক্বদির। লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াহ্দাহু আনজাযা ওয়াহদাহু ওয়া নাসারা আবদাহু ওয়া হাযাামাল আহযাবা ওয়াহদাহু।’

সবুজ চিহ্নিত স্থান ?

সাফা পাহাড় থেকে চলা শুরু করতেই পড়বে ‘সবুজ চিহ্নিত স্থান’ এ স্থানটিকে লাইট দিয়ে বিশেষভাবে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। পুরুষরা এ স্থানটি দৌড়ে অতিক্রম করবে আর নারীরা স্বাভাবিকভাবে হেটে হেটে অতিক্রম করবে।

সবুজ চিহ্নিত স্থানে এ দোয়া পড়া-

رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَ اَنْتَ الْاَعَزُّ الْاَكْرَمُ

উচ্চারণ : ‘রব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতাল আআযযুল আকরম।’

সবুজ চিহ্নিত স্থান অতিক্রম করে নারী-পুরুষ সবাই স্বাভাবিক গতিতে হাটবে। আর তাসবিহ পড়বে-

اَللهُ اَكْبَر – اَللهُ اَكْبَر- اَللهُ اَكْبَر- وَ لِلَّهِ الْحَمْدُ اَللَّهُمَّ حَبِّبْ اِلَيْنَا الْاِيْمَانَ وَ كَرِّهْ اِلَيْنَا الْكُفْرَ وَالْفُسُوْقَ وَالْعِصْيَانَ وَاجْعَلْنَا مِنْ عِبَادِكَ الصَّالِحِيْنَ

উচ্চারণ : আল্লহু আকবার, আল্লহু আকবার, আল্লহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদু। আল্লহুম্মা হাব্বিব ইলাইনাল ইমানা ওয়া কাররিহ ইলাইনাল কুফরা ওয়াল ফুসুক্বা ওয়াল ইসয়ানা ওয়াঝআলনা মিন ইবাদিকাস সলিহিন।’

মারওয়া পাহাড়ে আরোহন ?

সাফা থেকে গিয়ে মারওয়া পাহাড়ে ওঠা। সেখানে গিয়ে আবার সাফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া। সেখানে এ দোয়া পড়া-

اَللهُ اَكْبَر – اَللهُ اَكْبَر- اَللهُ اَكْبَر- وَ لِلَّهِ الْحَمْدُ – لَا اِلَهَ اِلَّا الله وَحْدَهُ صَدَقَ وَعْدَهُ وَ نَصَرَ عَبْدَهُ وَ هَزَمَ الأحْزَابَ وَحْدَهُ – لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُوَ لَا نَعْبُدُ اِلَّا اِيَّاهُ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَفِرُوْنَ – رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَ اَنْتَ الْاَعَزُّ الْاَكْرَمُإِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَائِرِ اللَّهِ ۖ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا ۚ وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللَّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ

উচ্চারণ : আল্লহু আকবার, আল্লহু আকবার, আল্লহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদু। লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াহদাহু সদাক্বা ওয়াদাহু ওয়া নাসর আবদাহু ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু; লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়া লা নাবুদু ইল্লা ইয়্যাহু মুখলিসিনা লাহুদদ্বীন ওয়া লাও কারিহাল কাফিরুন। রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতাল আআযযুল আকরম। ইন্নাস সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিং শাআয়িরিল্লাহি ফামান হাজ্জাল বাইতা আয়ি’তামারা ফালা ঝুনাহা আলাইহি আঁইয়্যাতত্বাওয়াফা বিহিমা ওয়া মাং তাত্বাওওয়াআ খাইরান ফাইন্নাল্লাহা শাকেরুন আলিম।’

সাফা পাহাড়ে আসার সময়ও সবুজ চিহ্নিত স্থানে আগের নিয়মে পুরুষরা দ্রুত আর নারীরা স্বাভাবিকভাবে হেটে হেটে আসবে পূর্বোল্লিখিত দোয়া পড়া-

رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَ اَنْتَ الْاَعَزُّ الْاَكْرَمُ

উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতাল আআযযুল আকরম।’

এভাবে আসা-যাওয়া মিলিয়ে ৭ বার চলাচলের মাধ্যমে সাঈ সম্পন্ন হবে। সাঈ শেষ হলে এ দোয়া পড়া-

رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الَعَلِيْمُ – وَ تُبْ عَلَيْنَا اِنَّكَ اَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحَيْمُوَ صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلَى خَيْرِ خَلْقِهِ مُحَمَّدٍ وَّاَلِهِ وَ اَصْحَابِهِ اَجْمَعِيْنَ وَارْحَمْنَا مَعَهُمْ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

উচ্চারণ : ‘রব্বানা তাক্বব্বাল মিন্না ইন্নাকা আংতাছ্ ছামিউল আলিম। ওয়অতুব্ আলাইনা ইন্নাকা আংতাত্ তাওয়্যাবুর্ রহিম। ওয়া সল্লাল্লাহু তাআলা আলা খাইরি খলক্বিহি মুহাম্মাদিউ ওয়া আলিহি ওয়া আসহাবিহি আজমাইন ওয়ারহামনা মাআহুম বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমিন।’

১১ ই যিলহজ্জ (আইয়ামে তাশরীক) ১ম দিন ( মিনা )

  • দুপুরের পর সিরিয়াল ঠিক রেখে প্রথমে ছোট, মধ্যম ও এর পরে বড় জামরায় প্রত্যেকটিতে ৭টি করে কংকর নিক্ষেপ করবেন।
  • মিনায় রাত্রি যাপন করবেন।

১২ ই যিলহজ্জ (আইয়ামে তাশরীক) ২য়  দিন ( মিনা )      

  • পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী ৩টি জামরায় ৭+৭+৭=২১টি কংকর নিক্ষেপ করবেন। দুপুরের আগে কংকর নিক্ষেপ করবেন না।
  • সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করবেন। তা না পারলে আজ দিবাগত রাতও মিনায় কাটাবেন।

১৩ ই যিলহজ্জ (আইয়ামে তাশরীক) ৩য় দিন ( মিনা )     

  • যারা গত রাত মিনায় কাটিয়েছেন তারা আজ দুপুরের পর পূর্ব দিনের নিয়মেই ৭টি করে মোট ২১ টি কংকর মারবেন। অতঃপর মিনা ত্যাগ করবেন।
  • অতঃপর মক্কায় এসে দেশে ফেরার পূর্বে বিদায়ী তাওয়াফ করবেন।

কংকর নিক্ষেপ –

১১ ও ১২ জিলহজ প্রতিদিন মিনায় অবস্থান করবে এবং ধারাবাহিকভাবে ছোট, মধ্যম ও বড় জামরাতে ৭টি করে ২১টি কংকর নিক্ষেপ করবে। তবে যদি কেউ কংকর নিক্ষেপের আগে কিংবা পরে কাবা শরিফ গিয়ে তাওয়াফে জিয়ারত আদায় করে তবে তাকে তাওয়াফের পর আবার মদিনায় চলে আসতে হবে এবং মিনায় অবস্থান করতে হবে।

হজ্জ
হজ্জ

নারী, বৃদ্ধ ও দুর্বলদের কংকর নিক্ষেপের ক্ষেত্রে রাতের সময় বেচে নেওয়া উত্তম। তবে কংকর নিক্ষেপের ক্ষেত্রে এখন হজ কর্তৃপক্ষ সময়সূচি নির্ধারণ করে দেওয়া এবং বাংলায় দিক নির্দেশনার ব্যবস্থা করে। সে নির্দেশনা অনুযায়ী মিনায় কংকর নিক্ষেপের সময় জেনে তা পালন করা।

মিনায় রাতযাপন ও ত্যাগ –

১০ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনায় রাতযাপন করা এবং যারা মিনা ত্যাগ করবেন তারা ১২ তারিখ সূর্য ডোবার আগে মিনা ত্যাগ করবেন। সূর্য ডোবার আগে মিনা ত্যাগ করতে না পারলে সে রাত (১৩ জিলহজ) মিনায় অবস্থান করা।

উল্লেখ্য, যদি কেউ ১২ জিলহজ সূর্য ডোবার আগে মিনা ত্যাগ করতে না পারে কিংবা থাকার ইচ্ছা করে তাকে ১৩ জিলহজ ৭টি করে আরও ২১টি কংকর নিক্ষেপ করতে হবে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১৩ জিলহজও মিনায় অবস্থান করেছিলেন।

হজ্জ
হজ্জ

বিদায়ী তাওয়াফে জিয়ারত-

হজের সর্বশেষ রোকন হলো- তাওয়াফে জিয়ারত। যা ১১ জিলহজ থেকে ১৩ জিলহজ সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। ১২ জিলহজ সূর্য ডোবার আগে তাওয়াফে জিয়ারত না করতে পারলে দম বা কোরবানি কাফফারা আদায় করতে হবে।

বিদায়ী তাওয়াফ – সারাবিশ্ব থেকে আগত সব হজপালনকারীর জন্য দেশে রওয়ানা হওয়ার আগে তাওয়াফ করা আবশ্যক। এ তাওয়াফকে বিদায়ী তাওয়াফ বলে। তবে জিলহজ মাসের ১২ তারিখের পর যেকোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে হিসেবে আদায় হয়ে যায়।

হাদিসের বর্ণনায় ………………

নাসর ইব্ন আলী …. ইব্ন আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত।  তিনি বলেন , লোকেরা (হজ্জের উদ্দেশ্যে মক্কায় আগমনের পর তার হুকুম আহকাম সমাপনে তাওয়াফে যিয়ারতের পর) প্রত্যাবর্তন করতো। তখন নবী করীম (সাঃ) বলেন , তোমাদের কেউ যেন শেষ বারের মত তাওয়াফ না করে (অর্থ্যাৎ তাওয়াফে বিদা) প্রত্যাবর্তন না করে।

(সহীহ আবু দাউদ, হাদিস নং – ১৯৯৯)

কাবা শরীফ তাওয়াফ করা
কাবা শরীফ তাওয়াফ করা

ইফরাদ হজ ?

শুধুমাত্র হজ আদায়ই হলো ইফরাদ হজ। যারা ইফরাদ হজ করবে, তারা ওমরা করতে পারবে না। যারা এ হজ আদায় করেন তাদেরকে ‘মুফরিদ’ বলা হয়। সাধারণত বদলি  হজকারীরাই ইফরাদ হজ করে থাকেন। আর ইফরাদ হজকারীর জন্য কুরবানিও দিতে হয় না। ইফরাদ, কিরান ও তামাত্তু; হাজিগণ যে হজই পালন করবেন, প্রত্যেক হজের ফরজ কাজগুলো একই।

কিরান হজ ?

এক ইহরামে ওমরা ও হজ সম্পাদন করাকে কিরান হজ বলে। এ হজ পালনে হাজিদেরকে দীর্ঘ দিন ইহরাম অবস্থায় থাকতে হয়। তাইতো এ হজ সর্বোত্তম।

এ হজ পালনে যদি প্রথমে হজ পালন করতে হয় তবে হজ সম্পাদনের পর ওমরাকে জড়িয়ে নেয়া।

আর যদি প্রথমে ওমরা করার ইচ্ছা করে তবে ওমরা করে ইহরাম থেকে না বেরিয়ে হজ পর্যন্ত অপেক্ষা করা এবং হজ সম্পাদন করা।

হজ্জের সকল দোয়া…………………..

ইহরাম বাঁধার মীকাত ……………….

তামাত্তু হজ ?

হজের মাসগুলোতে (শাওয়াল, জিলক্বদ, জিলহজ) আলাদা আলাদা ইহরামে ওমরা ও হজ পালনেই সম্পন্ন হবে তামাত্তু হজ। প্রথমেই ওমরার নিয়তে ইহরাম বাধবে। অতঃপর ওমরা পালন শেষে মাথা ন্যাড়া করার মাধ্যমে ইহরাম থেকে হালাল হবে।

জিলহজের ৮ তারিখ পুনরায় হজের নিয়তে ইহরাম বেধে হজ সম্পাদন করবে এবং ১০ জিলহজ মিনায় বড় জামরাতে কংকর নিক্ষেপের পর কুরবানি করে মাথা ন্যাড়া হওয়ার মাধ্যমে হজের ইহরাম থেকে বের হবে।

উল্লেখ্য- প্রতি বছর ৭ জিলহজ হাজিদের উদ্দেশ্যে মসজিদে হারামে হজের নিয়মাবলী ও করণীয় সম্পর্কে বয়ান পেশ করা হয়। তাই এই বয়ান শোনা হাজিদের জন্য উপকারী। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজের মূল পাঁচ দিন উল্লেখিত কাজগুলো যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন আমিন। সকল হাজিকে হজে মাবরুর নসিব করুন।

আমিন

Leave a Reply